শনিবার ● ১ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » পুত্রবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে শাশুড়ি আটক
পুত্রবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে শাশুড়ি আটক
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি ::ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বাতিকুড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মৌঃ খলিলুর রহমানের স্ত্রী গৃহবধূ খাদিজা খাতুন (২১)কে নির্যাতন ও শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী, শাশুড়ি, দেবর ও ননদের বিরুদ্ধে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শাশুড়ি আনোয়ারা খাতুনকে আটক করেছে।
আজ শনিবার ১ জুন দুপুরে গৃহবধূর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মমেক)মর্গে পেরণ করা হয়। তার আগে শুক্রবার (৩১ মে) রাতে গৃহবধূ খাদিজা খাতুনকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধে হত্যার পর হাসপাতালে মরদেহ রেখে পালিয়ে যায় স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন বলে অভিযোগ করেন খাদিজার বাবা আব্দুল খালেক।
গৃহবধূর পরিবারে অভিযোগে জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার বাতিকুড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মৌঃ খলিলুর রহমানের সাথে ৮/৯ মাস আগে একই উপজেলার আমুয়াকান্দা গ্রামের আঃ খালেকের মেয়ে খাদিজা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মাঝে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়। স্বামী ও তার বাড়ির লোকজন খাদিজার উপর প্রায়ই নির্যাতন করতো। কিছুদিন আগেও খাদিজাকে মারপিট করে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তারা। পরে ১০/১২ দিন আগে সালিশ দরবারের মাধ্যমে আবার গৃহবধূ খাদিজাকে স্বামী বাড়িতে ফিরিয়ে আনা যায়।
এদিকে শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে স্বামী খলিলুর রহমান ও তার পরিবারের লোকজন গৃহবধূ খাদিজার সাথে ঝগড়া করে। এভাবে ঝগড়ার পর রাতে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন খাদিজাকে মারধর করে মারাত্মক নির্যাতন করে। পরে রাতেই স্বামীসহ পরিবারের লোকজন গুরুতর আহত খাদিজাকে ফুলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর তাৎক্ষণিক হাসপাতালে খাদিজার লাশ ফেলে রেখে স্বামী ও তার পরিবারে লোকজন পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে ফুলপুর থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের থানায় নিয়ে আসে। পরে শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মমেক)মর্গে পেরণ করে।
গৃহবধূ খাদিজার বোন সাহিদা খাতুন বিলাপ করে বলেন, ‘আমার বোনকে তার স্বামী ও বাড়ির লোকজন হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।’
খাদিজার বাবা আব্দুল খালেক বলেন, ‘পারিবারিক ভাবেই তাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ের উপর অত্যাচার চলে আসছে। শুক্রবার রাতে তার স্বামী, শাশুড়ি, দেবর ও ননদ মিলে আমার মেয়েকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। হত্যার পর লাশ হাসপাতালে রেখে তারা পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে আমি আমার মেয়েকে হাসপাতালে দেখতে এসে মৃত অবস্থায় পাই। আমি আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
ফুলপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মোঃ সুমন মিয়া এ ঘটনার পর লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গৃহবধূর শাশুড়ি আনোয়ারা খাতুনকে আটক করা হয়েছে।সেইসাথে আইনি প্রক্রিয়ায় পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি চলছে বলে আরো জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।