সোমবার ● ১০ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে আ’লীগ নেতা আহমদ আলী হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন : গ্রেফতার-২
বিশ্বনাথে আ’লীগ নেতা আহমদ আলী হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন : গ্রেফতার-২
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ও উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের পুরান সৎপুর গ্রামের সালিশী ব্যক্তিত্ব আহমদ আলী হত্যার ৩দিনের মাথায় হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে থানা পুলিশ। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই সিকান্দর আলী (৭৫) বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নিহত আহমদ আলীর মৎস্য খামারের প্রহরী ও সৎপুর খাসজান গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার পুত্র জমির হোসেন (৩৫) এবং পুরান সৎপুর গ্রামের মৃত ফয়জুর রহমানের পুত্র ও সাবেক ইউপি সদস্য মতিউর রহমান উরফে আব্দুল মতিন (৬৪)।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যান্ডের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রহরী জমির হোসেন। এরপর রবিবার (৯ জুন) আদালতে ১৬৪ ধারায় সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে বলে রবিবার রাত ১০টায় এক প্রেস ব্রিফিং-এ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামসুদ্দোহা পিপিএম।
মৎস্য খামারের প্রহরী জমির হোসেন, সাবেক ইউপি মেম্বার মতিউর রহমান উরফে আব্দুল মতিন ও দেওকলস ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমদ মারুফ সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ এবং আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে গতকাল রবিবার বিশ্বনাথ থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত আহমদ আলীর ভাই সিকান্দর আলী। মামলা নং ৬।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন- প্রহরী জমির হোসেন ও বিএনপি নেতা মাসুম আহমদ মারুফের বোন ফাতেমা বেগমের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় এবং তাজপুর বাজারস্থ মৎস্য আড়ৎ এর কমিটি গঠন সহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধ হয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তার (বাদীর) ভাই আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আলীকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার রহস্য লুপাট করার জন্য আহমদ আলীকে হত্যা করে তার লাশ নিজ মৎস্য খামারের পুকুরে ফেলে রাখে ঘাতকরা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার এসআই লিটন রায় বলেন- রবিবার ভোরে উপজেলার হরিকলস এলাকা থেকে মামলার প্রধান অভিযুক্ত জমির হোসেনকে ও সন্ধ্যায় সৎপুর এলাকা থেকে অভিযুক্ত মতিউর রহমান উরফে আব্দুল মতিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আলী হত্যাকান্ডের আসল রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে দাবি করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন- গ্রেফতারকৃত জমির হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করেছে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। মামলার অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সুষ্ঠ তদন্তের পর আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার পর থেকে আহমদ আলীকে তার পরিবারের লোকজন মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে নাে পেয়ে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে তাকে খোঁজাখুজি শুরু করেন। এরপর রাত আনুমানিক ১২টার দিকে নিজ মৎস্য খামারের পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে মৎস্য খামারের প্রহরী জমির হোসেন পলাতক ছিল। ফলে বিভিন্ন কারণে তার ও মাছুম আহমদ মারুফের দিকেই সন্দেহের তীর ছিল নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর। লাশের ময়না তদন্ত শেষে পরদিন শুক্রবার বিকেল ৬টায় জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে নিহত আহমদ আলীর দাফন সম্পন্ন করা হয়।