সোমবার ● ১০ জুন ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » থানচিতে আ’লীগে কাউন্সিল ১৫ জুন
থানচিতে আ’লীগে কাউন্সিল ১৫ জুন
বান্দরবান :: বান্দরবানে থানচি উপজেলা আ’লীগের কাউন্সিল ও সম্মেলন আগামি ১৫ জুন শনিবার। নেতৃত্ব পরিবর্তনে নির্বাচন দেয়ার দাবী তৃণমূলের নেতৃবৃন্দদের। আজ সোমবার ১০ জুন দুপুরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির দায়িত্বরত নেতৃবৃন্দরা জানিয়েছেন তৃণমূলের দাবী উপেক্ষা করে দলীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব পরিবর্তনের এগৌচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
জানা যায়, দলীয় নির্বাচন পদ্ধতিতে গত (৬ জুন) হতে (৮ই জুন) পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম বিক্রয় শেষ তারিখ ছিল। ৯ জুন জমা দেয়া শেষ তারিখের সভাপতি পদে দুইজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে একজন ফরম জমা দেন বলে জানান সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি। এরই মধ্যে সভাপতি পদে সাবেক সভাপতি বাশৈচিং হেডম্যান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মংবোওয়াংচিং মারমা অনুপম প্রতিদন্দিতা করছেন।
এদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক সহ সভাপতি উবামং মারমা মনোনয়ন ফরম জমা দিলে নির্বাচন পদ্ধতিতে প্রতিদন্দিতা না থাকায় উবামং মারমা বিনা প্রতিদন্ডিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
এই বিষয়ে থানচি সদর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সাবেক রেমাক্রী ইউপি চেয়ারম্যান মালিরাম ত্রিপুরা বলেন, আমি গত ৮ই জুন সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদন্দিতা করার জন্য মনোনয়ন ফরম চাওয়া হলে আমাকে ফরম দেয়া হয়নি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ আ.লীগের থানচি উপজেলা শাখা গঠিত হয় তৎকালীণ সময়ের বীর মুক্তি যোদ্ধা মো.আক্কেল আলীকে সভাপতি, মরহুম নুরুল ইসলাম মেম্বারকে সাধারণ সম্পাদক ও মরহুম দিপক কান্তি দাশকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে কমিটি গঠিত হয়। সাংগঠনের নিয়মনুসারে ৩ বছর পর পর কউন্সিল মাধ্যমে কমিটি পরিবর্তণ হলে ও দির্ঘ দিন পর ২০০৪ সালে যুবলীগের সফল সাধারণ সম্পাদক মংবোওয়াংচিং মারমাকে সাধারণ সম্পাদক পদে ও বীর মুক্তি যোদ্ধা মোঃ আক্কেল আলীকে সভাপতি করে ও দিপক কান্তি দাশ কে সাংগঠনিক করে কমিটি গঠন করা হয়। এক বছর পর সভাপতি মো. আক্কেল আলী অসুস্থ হওয়ার কারণে সিনিয়র সহ সভাপতি বাশৈচিং হেডম্যান সংগঠনের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন । পরে ২০১১ সালে ১৩ ই ডিসেম্বার মঙ্গলবার নিবাচনের তৃণমূলের নেতা কর্মীদের ব্যালটের মাধ্যমে পরিবার্তণ আনে তখনকার সময়ের মংথোয়াইম্যা মারমা (রনি) সভাপতি ও উবামং মারমাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভোট দেন। পরবর্তী মেয়াদ শেষ হলে ২০১৫ সালে ১৩ ই জুন এক বিশে বর্ধিত সভা আয়োজন করে উবামং মারমাকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বাদ দিয়ে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বেচ্ছা সেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক থোয়াইহ্লামং মারমাকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করেন। তখন থেকে তৃণমূল নেতা কর্মীদের মধ্যে নানা ক্ষোপ ও অসন্তোজ তেলবাঁজ হাইব্রিট নেতা সৃষ্টি হয় । অপর দিকে বিএনপি জামাত ও জনসংহতি সমিতি নেতারা অনুপ্রবেশের সুযোগ পায় ।
জনসংহতি সমিতি ও বিএনপি জামাত নেতারা বর্তমানে সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পদে জায়গা করে নেয়। ফলে তৃণমূল নেতা কর্মীদের মধ্যে আসল ত্যাগী নেতারা অভ্যন্তরীনভাবে ক্ষোপ অসন্তোজ মধ্য থেকে অস্বক্রীয় হয়ে সংগঠনিকভাবে অভ্যন্তরী কোন্দল সৃষ্টিসহ সংগঠনের জাতীর পিতা আদর্শ শৃংঙ্খলা বহিঃপ্রকাশ হয়। তবে বিগত ২০১৮ সালে জাতীয় ও ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনের দলীয় প্রতীকের নির্বাচনের বান্দরবান জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি তা বুঝতে পেরে সংগঠনের পুরোনো প্রবীণ নবীনদের একত্র করে নির্বাচনে অংশ গ্রহনের তাগিদ দিলে তৃণমূলের নেতা কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনায় নির্বাচনে জাপিয়ে পড়লে জয় ছিনিয়ে আনে ।
সূত্রে আরো জানা যায়, ২০১৫ সালে বিশেষ বর্ধিত সভা মাধ্যমে যাদের সিলেকশান করা হয়েছে তারা জেলা শহরে বসবাস ও স্থায়ী ভাবে অবস্থানে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের জাতীর পিতার নিতি আদর্শ অদ্যবধির পর্যন্ত সংগঠনের নিতি আদর্শ বিষর্জন হয়েছে। বিগত দুইটি নির্বাচনের নেতা কর্মীরা জাতীয় নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে নিতে অনেকাংশ শ্রম দিলে ও সীমাহীণ কষ্ট হয়েছে। দলের অভিবাবকরা সকল সিন্ধান্ত হয় কর্মসূচী আগে বান্দরবান সদরে বসে চাঁপিয়ে দেয়ার রাজনিতি চলছিল। চাঁপিয়ে দেয়ার রাজনিতি থেকে মুক্ত করতে এমন অভিবাবক চাচ্ছেন নেতাকর্মীদের মধ্যে যিনি অভিবাবক হবেন তিনি রাজনিতি কাজ ছাড়া থানচি উপজেলা সদর ত্যাগ করবেন না। সর্বক্ষনিক স্থায়ীভাবে যিনি উপজেলা সদরে থাকবেন এবং সুখে দুঃখে আপদে বিপদে কর্মীদের সামাজিকভাবে বিবাদে সময় পাওয়া যাবে এবং চুড়ান্ত সিন্ধান্ত দিতে পারবে তাদেরকে সভাপতি সম্পাদক হিসেবে চাচ্ছেন বলে জানালেন তৃণমূল কর্মীরা।
যুব লীগের সভাপতি সচীন ত্রিপুরা, ছাত্র লীগের সভাপতি জজ কলিন ত্রিপুরা, সাধারণ সম্পাদক উঅংছেন মারমা, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক হ্লাশৈমং মারমা জানিয়েছেন, উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এমন ব্যক্তিকে চান যিনি থানচি উপজেলা সদরের সর্বাক্ষনি অবস্থান করে। রাজনৈতি কাজ ব্যতিত্ব তিনি কোন প্রকার অন্যত্র যাবেন না এবং কর্মীবান্ধব,জনকল্যাণ মূলক কর্মসূচী কর্মীদের সবার অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে চুড়ান্ত সিন্ধান্তসহ জাতির পিতার নিতি আদর্শ প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশ মেনে চলবে তাকেই আমরা অভিবাবক হিসেবে চাওয়া পাওয়া থাকায় নির্বাচনের মাধ্যমে তৃণমূল নেতৃত্ব পরিবর্তণ করা দরকার । ।
আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অলসেন ত্রিপুরা, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মালিরাম ত্রিপুরা, উবামং মারমা, বলিপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি সাথুইখয় মারমা ,সম্পাদক নিহার বিন্দু চাকমাসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, একজন নেতাকে সরকারি পদ হোক বা রাজনৈতিক পদ হোক একটাই পদে দায়িত্বে দিলে তিনি অবশ্যই সংগঠনের কাজ করবে। একজনকে একাধিক পদে দায়িত্ব দিলে পদ না পাওয়ার বেদনা অনেকে দলের থেকে দূর সরে যান দলের শৃংঙ্খলা থাকবে না। নির্বাচনের সময় পদ বঞ্চিতরা কাজ করতে নারাজ। তারা আরো বলেন, পদে রয়েছে এমন নেতারাও জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও স্থানীয় নির্বাচন সমূহের দলের মনোনিত ব্যক্তি পক্ষে কাজ না করে অন্য প্রতিদন্দি ব্যক্তির পক্ষে গোপন আতাঁতের মাধ্যমে আত্তীয় করণসহ নানান ভাবে মুখোষ ধারী দালাল হয়ে যায়।
দলের সিনিয়র নেতারা মতে, বিগত কমিটিতে সভাপতি মংথোয়াইম্যা মারমা (রনি) পার্বত্য মন্ত্রী মহোদয়ের প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে দলে সময় দিলেও দল কেন্দ্রিক নয় নিজের লাভের কারণে সে আ.লীগ করেন। অন্যদিকে, ইপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক থোয়াইহ্লামং মারমা জেলা পরিষদের সদস্য হয়ে তিনিও একই রকম ভাবে দলকে বারোটা বাজাচ্ছে। সম্প্রতিক প্রধান মন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী নিজেই কাউয়া,হাইব্রিতদের চিহিৃত করতে বলা হলেও মুখোজধারীদের চিহিৃত করার জরুরী বলে মনে করছেন অনেকেই। দলের নেতা কর্মীদের সাথে কথা বললে হাইব্রিত, কাউয়া ও মূখোজধারীদের জানা যাবে ।
কউন্সিল ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি আহবায়ক স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, সাংগঠনিকভাবে দলীয় নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছেন। যেই নির্বাচন করুক এবং বিজয়ী হোক তার পক্ষে কাজ করবেন বলে তিনি মত দেন। প্রশ্ন করা হলে নির্বাচন যদি কোন কাল ক্রমে না হয় তাহলে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি ও বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মহোদয় যাকে দায়িত্ব দেবে তার পক্ষে আমরা কাজ করে যাবো। তবে থানচি উপজেলার স্থায়ীভাবে অবস্থান করে এবং নেতা কর্মীরা সুখে দুঃখে বিপদে আপদে যাকে সার্বক্ষনিক কাছে পাবো তাকে অভিবাবক হিসেবে করলে আমাদের কোন দুঃখ থাকবে না বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের নেত্রীবৃন্দরা।