শুক্রবার ● ৫ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » নবীগঞ্জে রথউৎসব পালিত
নবীগঞ্জে রথউৎসব পালিত
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: সারাদেশের ন্যায় যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে মধ্য দিয়ে নবীগঞ্জ উপজেলায় হিন্দু ধর্মের অন্যতম উৎসব জগন্নাথ বলদেব সুভদ্রার রথযাত্রা উৎসব গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন অনুষ্টানমালার মধ্য দিয়ে অনুষ্টিত হয়েছে। অনুষ্টানমালার মধ্যে ছিল গোবিন্দ প্রতিকৃতিসহ বাজার প্রদক্ষিন,দুপুরে রথ টান,বিকালে প্রসাদ বিতরন। সকাল সাড়ে সাতটা থেকেই সনাতন ধর্ম্বামলর্ম্বী লোকজন স্থানীয় গোবিন্দ জিউড় আখড়ায় সমবেত হয়ে গোবিন্দ নিয়ে । বিকাল ২.২০মিনিটে গোবিন্দ জিউড় আখড়া প্রাঙ্গন থেকে সহস্রাধিক ভক্তবৃন্দ রথ টেনে পশ্চিম বাজার এনে পুনরায় গোবিন্দ জিউড় আখড়ায় গিয়ে শেষ হয়। বাজারের দুপাশের বাসা-বাড়ীর নর-নারীগনসহ হাজারো মানুষ রথ টানার দৃশ্য উপভোগ করেন। পরে গোবিন্দ জিউড় আখড়ায় সকল ভক্তবৃন্দের মাঝে প্রসাদ বিতরন করে শেষ হয়। রথ উযাপন কমিটির আহবায়ক রঙ্গ লাল রায়ের সভাপতিত্বে রথ উৎসবের উদ্ধোধনী অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ-বাহুবল আসনের এমপি গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ গাজী,সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া,নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী,নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ছাবির আহমদ চৌধুরী,জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট আবুল ফজল,নবীগঞ্জ থানার ওসি ইকবাল হোেসেন, গোবিন্দ জিউড় আখড়া কমিটির সভাপতি নিখিল আচার্য্য,সাবেক সভাপতি সুবিনয় কর,উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টাান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নারায়ন রায়,উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুখেন্দু রায় বাবুল,উপজেলা আওয়ামীলীগের উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান সেফু, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সমর চন্দ্র দাশ,উপজেলা পুজা কমিটির সাধারন সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ,উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম কুমার পাল হিমেল,আখড়া কমিটির সাধারন সম্পাদক বিধান ধর,নবীগঞ্জ পৌরসভার প্যানেল মেয়র কাউন্সিলর এটিএম সালাম,প্যানেল মেয়র বাবুল চন্দ্র দাশ,সাবেক পৌর কাউন্সিলর রিজভী আহমদ খালেদ,প্যানেল মেয়র ফারজানা আক্তার পারুল, মহিলা কাউন্সিলর রোকেয়া আক্তার,উপজেলা রামকৃষ্ণ সংঘের সাবেক সভাপতি অশোক তরু দাস,অর্থ সম্পাদক প্রমথ চক্রবর্ত্তী বেনু,উপজেলা আওয়ামীলগ নেতা অঞ্জন পুরকায়স্থ,উপজেলা পুজা উদযাপন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নীলকণ্ট দাশ সামন্ত নন্টী,বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি দুলাল চৌধুরী,ভানু লাল দাশ,নবীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক সলিল বরন দাশ,পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাপদক ওহি চৌধুরী,অজিত কুমার দাশ,সঞ্জয় দাশ,পবিত্র বনিক,অমলেন্দু সুত্রধর,লোকনাথ সেবা সংঘের সভাপতি নিতেশ চন্দ্র রায়,সাধারন সম্পাদক সাধন চন্দ্র দাশ, চারু দেব,মৃদুল কান্তি রায়,প্রধান শিক্ষক প্রজেশ রায় নিতন,আমার এমপি হবিগঞ্জ ১ আসনের এ্যাম্বাসেডর রতœদীপ দাস রাজু, আমেরিকা প্রবাসিী বিশ্বমনি সরকার,দিপক পাল,গৌরমনি সরকার,মহেন্দ্র রায়,উৎপল দাশ,কাঞ্চন বনিক,রাজীব রায়,লিটন চন্দ্র দেব,দীপংকর ভট্টাচার্য্য দেবুল,সুমন তালুকদার,বিপুল চন্দ্র দাশ প্রমূখ। অনুষ্টানে নবীগঞ্জ বাহুবল আসনের এমপি গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ নবীগঞ্জ গোবিন্দ জিউড় আখড়ার পুরাতন জীর্ন ভবন ভেঙ্গে সেখানে অফিস কক্ষ ও অতিথি শালার জন্য দ্বিতল ভবন নির্মানের ঘোষনা দেন। উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী নবীগঞ্জের প্রায় ২৫ ফুট উচু রথটি জ্বালিয়ে দিয়ে ধ্বংস করার ফলে পরবর্ত্তীতে অন্য একটি রথ তৈরী করে অনুষ্টান পরিচালনা করে আসছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকজন। দীর্ঘ ৪৭ বছর পর প্রায় ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গত বছরই প্রথম ১৫ ফুট উচু অত্যাধুনিক একটি রথ তৈরী করে উদ্বোধন করা হয়েছে।
নবীগঞ্জে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রেগুলোর বেহাল অবস্থা
নবীগঞ্জ(হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: জনবল সংকট ও তদারকির অভাবে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র । ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদে জনবল না থাকায় প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম ইউনিয়ন ভিত্তিক এসব ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের। এতে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা’সহ গ্রামীণ শিশু,নারী ও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ব্যাপক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীর বদলী জনিত কারণে জনবল শূণ্য হয়ে পড়েছে এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলো । জোড়াতালি দিয়ে চলছে এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা কার্যক্রম।
সংশ্লীষ্ট সূত্রে জানা যায়, নবীগঞ্জ উপজেলার দেওপাড়া,আউশকান্দি,গোপলার বাজার,মান্দারকান্দিতে ৫টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। এসব স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে মেডিকেল অফিসার,মিডওয়াইফ,উপ-সহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা,ফার্মাসিস্ট,অফিস সহায়কের পদে ২৫ টি পদ রয়েছে। এর বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৬ জন। জনবল না থাকায় প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম সবকটি উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের।
ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আশপাশ ও দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগিদের। জনবল সংকটের কারণে গর্ভবতী মহিলারা প্রসব সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জরুরী প্রয়োজনে নিয়ে যেতে হচ্ছে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। জনবল না থাকায় এবং নিয়মিত তদারকি অভাবে ঝোপঝাড়ের বাসস্থানে পরিণত হয়েছে অনেক উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র গুলো।
চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ফুলেছা বেগম বলেন, আমার জ্বর কাশি, এসেছিলাম ঔষুধ নেয়ার জন্য এখানে ঔষধ ও নেই ডাক্তার ও নেই তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।
দেওপাড়া এলাকার শাহ বজলুর রশীদ জানান, দীর্ঘদিন ধরে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক নেই। শুধুমাত্র একজন অফিস সহায়ক রয়েছেন,যিনি মাঝে মধ্যে আসেন এবং ঘন্টা দুয়েক পরে আবার চলে যান। তাই জরুরী প্রয়োজনে গুরুতর রোগীরা বাড়ির কাছে স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকা সত্বেও চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
উদয় আহমেদ নামে এক যুবক জানান, অনেক দিন যাবত চিকিৎসক নেই,ঔষধও নেই,অন্যান্য পদেও লোক নেই, তাই এই এলাকার মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সঠিক ভাবে দেখভাল না করায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি ঝোপঝাড়ের জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। আমরা দ্রুত চিকিৎসকসহ অন্যান্য পদে লোকবল দেয়ার জোর দাবী জানাচ্ছি।
স্থানীয় লুৎফুর রহমান নামে একজন জানান, কিভাবে আমাদের সমস্যা বলবো ভাষা খুজে পাচ্ছিনা, অনেক গর্ভবর্তী মায়েরা জরুরী প্রয়োজনে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রসব সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। চিকিৎসক না থাকায় প্রায় প্রসব সেবার জন প্রায় ২৫-৩০ কিলো মিটার দূরত্বে নিয়ে যেতে হচ্ছে। দ্রুত এ সমস্যা সমাধাণে সংশ্লীষ্ট কর্র্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা সমস্যার কথা স্বীকার করে জানান, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ডাক্তার সংকট রয়েছে, তাই রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সরকার ডাক্তার নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে,এটি প্রক্রিয়াধীন আছে । নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে প্রত্যাকটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডাক্তাসহ অন্যান্য পদে জনবল দিতে পারবো বলে আমি আশাবাদী।