রবিবার ● ৭ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ১০৩ টাকায় পুলিশের চাকরি পেল গাইবান্ধার ১৪৪ জন
১০৩ টাকায় পুলিশের চাকরি পেল গাইবান্ধার ১৪৪ জন
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: ১০৩ টাকা ব্যয়ে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে গাইবান্ধা জেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ৯৯ জনসহ ১৪৪ জন তরুণ-তরুণী পুলিশের চাকরি পেল। গাইবান্ধা জেলায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ উপলক্ষে আজ রবিবার পুলিশ লাইনে অনুষ্ঠিত জেলা পুলিশের মিট দ্যা প্রেস এ পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান মিয়া বিপিএম এ কথা বলেন।
মিট দ্যা প্রেস এ পুলিশ সুপার উলে¬খ করেন, একাত্তুরের মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধকারি বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি অব্যাহত রাখতেই অত্যান্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখে শুধুমাত্র মেধা এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত্তিতেই এবারে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোথাও যাতে কোন আর্থিক লেনদেন বা অন্য কোন নিয়ম সম্পন্ন না হয় সেব্যাপারে গোপন তৎপরতা অব্যাহত রেখেই কনস্টেবল নিয়োগে অত্যান্ত আন্তরিকতার সাথে সুষ্ঠুভাবে যাচাই বাছাই করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের প্রায় এক মাস আগে থেকেই ফেসবুকে, লিফলেট বিতরণ করে এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে প্যানা টাঙিয়ে এবারে আর্থিক লেনদেনসহ সকল অনিয়ম ও সুপারিশ পরিহার করে সুষ্ঠুভাবে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের বিষয়টি সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। দুর্নীতিমুক্তভাবে আন্তরিকতার সাথে মাত্র ১০৩ টাকা ব্যয় করে এবারে পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগ সম্পন্ন করবে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ। এ কথা জানাতেই তিনি নিজে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, এতিমখানা, চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে বক্তব্য দিয়ে এব্যাপারে সংশি¬ষ্ট সকলকে সচেতন করতে চেষ্টা চালিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। পরে তিনি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য ও চিত্র সাংবাদিকদের প্রদর্শন করেন। তা থেকে জানা যায়, ১৪৪ জন নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলের মধ্যে ৯৯ জন অতিদরিদ্র পরিবার থেকে এসেছে। এদের মধ্যে অনেকেই পিতামাতা হারা এতিম, চরাঞ্চলের অতিদরিদ্র কৃষক, নৈশ প্রহরী, দর্জি, দিনমজুর, ভূমিহীন বর্গাচাষী, শ্রমজীবি, রিক্সা-ভ্যান চালক, গৃহ পরিচারিকার কাজ করে এমন পরিবার থেকে।
মিট দ্যা প্রেস এ অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারি পুলিশ সুপার (প্রশিক্ষণ) আবু সায়েম প্রধান, সহকারি পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) মো. আনোয়ার হোসেন, ডিআইও ওয়ান আব্দুল লতিফ মিয়া পিপিএম, সদর থানা অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার। পরে কনস্টেবল পদে নবনিয়োগ প্রাপ্তদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রাথমিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। পরে নিয়োগপ্রাপ্তদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান মিয়া।
উলে¬খ্য, ২৯ জুন পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রথমে শারীরিকভাবে যোগ্য প্রার্থীরা ৩০ জুন লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে এবং ৩ জুলাই লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়।
মহিমাগঞ্জে যাত্রাবিরতির দাবি রাজধানীগামী আন্ত:নগর ট্রেনের
গাইবান্ধা :: রেলপথে রংপুর বিভাগের প্রবেশদ্বার গাইবান্ধার মহিমাগঞ্জ রেলস্টেশনের উপর দিয়ে প্রতিদিন অনেকগুলো আন্ত:নগর ট্রেন যাতায়াত করলেও যাত্রাবিরতি নেই রাজধানীগামী একটি ট্রেনেরও। ফলে এতদঞ্চলের জনগণকে রেলপথে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাস ছাড়া তাদের যাতায়াতের আর কোন বিকল্প যানবাহন নাই।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধা জেলার একমাত্র সরকারি ভারীশিল্প কারখানা রংপুর চিনিকলসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার অবস্থানের কারণে শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত, অনেক ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী জনপদ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রধান রেলস্টেশন এই মহিমাগঞ্জ। আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবীতে বছর দুয়েক আগে এলাকার লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে রেল কর্তৃপক্ষ জনবল সংকটের কারণে ‘ক্লোজডাউন’ হওয়া এ স্টেশনে পরবর্তীতে আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি দেয়া হবে বলে দীর্ঘ দিনেও এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়ায় এলাকার রেলযাত্রীসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ফলে ভুক্তভোগী জনগণ রাজধানীগামীসহ সকল আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবীতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও ছাত্র সংগঠন।
জানা গেছে, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কারণে গাইবান্ধা জেলার সবচাইতে উন্নত উপজেলা গোবিন্দগঞ্জের প্রধান রেলস্টেশন মহিমাগঞ্জের ওপর দিয়ে আপ-ডাউন মিলিয়ে প্রতিদিন আটটি আন্ত:নগরসহ ১৬টি ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে লোকাল ও মেইল ট্রেন এবং দিনাজপুর থেকে সান্তাহারের মধ্যে চলাচলকারী আন্ত:নগর দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়া বাকী ছয়টি ট্রেনই এখানে যাত্রা বিরতি করে না।
এলাকার রেলযাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, এ রেল রুটের অন্যান্য স্টেশনের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ রাজস্ব আদায় হলেও অজ্ঞাত কারণে জনগুরুত্ব সম্পন্ন এ স্টেশনে রাজধানী ঢাকা ও বুড়িমারী স্থলবন্দরগামী আন্ত:নগর ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি নেই। রংপুর চিনিকল, বেশ কয়েকটি ব্যাংক, সরকারি ও বেসরকারি অনেকগুলো অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কারণে এখানকার শত শত মানুষকে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হয়। এ জন্য তাদের বোনারপাড়া, গাইবান্ধা, বগুড়াসহ বিভিন্ন স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠতে হয়। কিন্তু আন্ত:নগর ট্রেনগুলোর যাত্রাবিরতি না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় যাত্রীদের। একইভাবে ঢাকা থেকে এসে ওই সব স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে সিএনজি অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন ছোট ছোট হালকা যানবাহনে চড়ে মহিমাগঞ্জে পৌঁছুতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন ট্রেন যাত্রীরা আরেক দফা।
এ কারণে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ও পাশ^বর্তী সাঘাটা উপজেলার একাংশের রেলযাত্রীসহ একটি বিশাল এলাকার মানুষের চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে ট্রেনের বিকল্প হিসেবে সড়ক পথ ব্যবহার করায় সরকারও হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। জনদুর্ভোগ লাঘবে অবিলম্বে এখানে সকল আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবি করেছেন এলাকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।
এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল লতিফ প্রধান জানান, বর্তমান জনবান্ধব সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে অবিলম্বে মহিমাগঞ্জ স্টেশনে সকল আন্ত:নগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশা করছি।
গাইবান্ধায় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে অর্ধদিবস হরতাল
গাইবান্ধা :: গ্যাসের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ও সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা দেশব্যাপী হরতালের সমর্থনে আজ রবিবার গাইবান্ধায় অর্ধ দিবস হরতাল পালন করে। সকাল ১১টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাট বন্ধ ছিল। যানবাহন চলাচল করলেও তা অন্যান্যদিনের চাইতে অপেক্ষাকৃত কম ছিল। এদিকে হরতালের সমর্থনে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলটি রেলগেট থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহরের ১নং ট্রাফিক মোড়ে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটিরি প্রেসিডয়াম সদস্য মিহির ঘোষ, বাসদ মার্কসবাদী আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম মিঠু, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, গোলাম রব্বানী প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ছয় মাসের মধ্যে অযৌক্তিকভাবে সরকার তিন দফায় মনগড়া ভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। গ্যাসের এই মূল্যবৃদ্ধি মানুষের জীবন যাত্রার উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। বর্তমান সরকার বিভিন্ন কায়দায় মধ্যবিত্ত নিন্মবিত্তদের কষ্টের কথা না ভেবে ব্যবসায়িদের স্বার্থে দফায় দফায় নিত্য প্রয়োজনী জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।