শুক্রবার ● ১২ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের উপর দিয়ে প্রায় ৩-৪ ফুট পানি প্রবাহিত হচ্ছে
চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের উপর দিয়ে প্রায় ৩-৪ ফুট পানি প্রবাহিত হচ্ছে
রাউজান (দক্ষিণ) প্রতিনিধি :: গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের স্রোতে সর্তার খালে ব্যাপক পানি প্রবাহিত হলে সর্তার খালে বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে । গতকাল ১১জুলাই বিকালের দিকে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের উপর দিয়ে প্রায় ৩-৪ ফুট পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় যান চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়। অপর দিকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সর্তার খালে পানি প্রবাহিত হলে নোয়াজিষপুর- চিকদাইর সড়কটির একাংশ ধসে গিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই সড়কটি দু”কুলের মানুষের একমাত্র যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। দু”কুলের হাজারো মানুষের চলাচলেরপথ এ সড়ক পথে। সর্তার খালেরের ভাঙ্গনে এ সড়ক বিলীন হয়ে গেলে দু”কুলের মানুষের ব্যবসা - বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে । চিকদাইর ইউনিয়নের মানুষ সড়কটি দিয়ে নোয়াজিষপুর নতুন হাট বাজারে ব্যবসা - বাণিজ্য ও বাজার ক্রয়- বিক্রি করার জন্য যাতায়াতের একমাত্র সড়ক। চিকদাইর ইউনিয়নের আকবর শাহ”র বাড়ী, তাঁরা মিয়া মেম্বারের বাড়ী, জামাল খন্দকার বাড়ী, মাওলানা রহিম উল্লাহ্ ও করিম উল্লাহ্ বাড়ী, ইদ্রিস মাষ্টারের বাড়ী, করম আলী হাজীর বাড়ী, নবাব মিয়া চৌধুরীর বাড়ী, জলিল মেম্বার বাড়ী, মুন্সির বাড়ী, হক সাহেবের বাড়ী, গইয়া মোহাম্মদের বাড়ীসহ চিকদাইর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের মানুষ নোয়াজিষপুর নতুন হাটে বাজার করার জন্য এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন।
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সর্তার খালে পানি প্রবাহিত হয়ে সড়কটি ভেঙ্গে গেলে নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের নতুন হাট বাজারসহ কয়েকটি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে যাবে। পানির নিচে আরো তলিয়ে যাবে কৃষকদের ফসলী জমি, বীজতলা , বসতবাড়ী-ঘর ও রাস্তাঘাট । এতে নোয়াজিষপুর - চিকদাইর ও দইল নগর ইউনিয়নের লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়বে। তাদের চরম দূর্ভোগের পোহাতে হবে । কয়েকটি গ্রাম বন্যাপ্লাবিত হয় পড়বে। নোয়াজিষপুর -চিকদাইর সড়কটি সর্তার খালের পাড়ে উপর দিয়ে অদুদ চৌধুরী সড়কের সাথে মিলিত হয়। এ সড়কের একটি সেতু রয়েছে সর্তার খালের উপর । সেতুটি নাম আকবর শাহ্ সেতু। সর্তার খালে ডিজেল পাম বসিয়ে ভালু উত্তল করায় সর্তার খালের উপর অবস্থিত আকবর শাহ্”র পিলারের ঘোরা থেকে সরে গেছে মাটি। আকবর শাহ্ সেতুটির পিলারের মাটি সরে যাওয়ায় সেতুটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের ফতেনগর এলাকার পূর্বে পাশে সর্তার খাল ভেঙ্গে গাবগুলাতল সড়ক দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে ফতেনগর , বাঁশটুয়াতল, গণী পাড়া, আব্দুল্লাহ্ পুর এলাকার বাড়ী-ঘর , রাস্তাঘাট ফসলী জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
সরজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় রাউজান উপজেলার চিকদাইর হক বাজার এলাকায় সর্তার খালের ভাঙ্গনে চিকদাইর ইউনিয়ন পরিষদের ভবন ও জনগণনের চলাচলের সড়ক হুমকির মুখে পড়েছে। চিকদাইর আকবর শাহ্ সড়কটি সর্তার খালের মধ্যে ধসে পড়েছে। চিকদাইর গহিরা কালচাঁন্দ চৌধুরী হাট থেকে শুরু হওয়া দক্ষিণ সর্তা সড়কটি সর্তার খালের মধ্যে ধসে পড়েছে ।
পশ্চিম ডাবুয়া এলাকার পাল পাড়া ও ভৈরব চন্দ্র সওদাগর বাড়ীর কয়েকটি পরিবারের বসতঘর খালে বিলীন হয়ে গেছে। সর্তার খালের তীরবর্তী রাউজান উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের বসতঘর খালের ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে । তবে আরো অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতঘর হুমকির মুখে রয়েছে । এদিকে কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সর্তার ও ডাবুয়া খালে পানি প্রবাহিত হলে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ১ টি পৌরসভার বিভিন্ন নিচু অঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। জানা যায় উপজেলার চিকদাইর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঠান পাড়া, উত্তর পাঠান পাড়া, সাহেব বাড়ীর সড়ক, নতুন রাস্তা, গহিরা ইউনিয়নের দইল নগর, কোতোয়ালি ঘোনা, গহিরা মোবারক খীল সড়ক, পশ্চিম গহিরা, দক্ষিণ গহিরা এলাকার কৃষকদের ফসলী জমি, বীজতলাও বাড়ী-ঘর, রাস্তাঘাট ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের শ্রোতের পানিতে ডুবে যায় । ভারী ভর্ষন ও পাহাড়ী ঢলের স্রোতের পানিতে ডাবুয়া খালের ডাবুয়া খামার বাড়ী, কন্দিপাড়া, রামনাথ পাড়া, রাউজান পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের ক্ষেত্রপাল এলকায় ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে পাহাড়ী ঢলের শ্রোতের পানিতে ডাবুয়া রামনাথ পাড়া, কেউকদাইর, সুলতানপুর বড়বাড়ী পাড়া ও চট্টগ্রাম রাঙ্গামাটি সড়কের বেরুলিয়া, শরতের দোকান, কুণ্ডেশরী, দ্যাইয়ার ঘাটা পানিতে ডুবে যায়।
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের শ্রোতে কর্ণফুলী নদী -হালদা নদীতে বেড়েছ। কর্ণফুলী নদী ও হালদা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়া পানিতে নদীর আসে পাশে তাকা এলাকার বাসিন্দাদের বসতবাড়ী -ঘর ফসলী জমি জনগনের চলাচলের সড়ক পানিতে ডুবে গেছে । রাউজান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার নিয়াজ মোরশেদ জানান- ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের শ্রোতের পানিতে সর্তা খাল ও ডাবুয়া খালের কয়েকটি স্থানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে । এসব ভাঙ্গনের ব্যাপারে স্থানীয় এমপির সাথে কথা বলে দ্রুত গতিতে মেরামত করা হবে। জনপ্রতিনিধিদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, রাউজানে কিছু খাল খনন করায় পানি দ্রুত গতিতে নেমে যাওয়ায় অনান্য বৎসরের মতো রাউজান উপজেলায় বড় ধরণের বন্যা হয়নি ।