শনিবার ● ১৩ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৩৭ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত : পানিবন্দি হাজারও পরিবার
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ৩৭ সে.মি ওপর দিয়ে প্রবাহিত : পানিবন্দি হাজারও পরিবার
গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: ভারী বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার নদ নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী পানি বেড়ে যাওয়ায় সাথে সাথে ভাঙনের তীব্রতা অনেকটা বেড়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, শনিবার ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপদসীমার ৩৭ সে.মি., তিস্তা ৯ সে.মি ও ঘাঘট নদীর পানি ১১ সে.মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া যমুনা, তিস্তা ও করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমা ছুই ছুই করছে। ফলে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা এবং সদর উপজেলায় নদী তীরবর্তী ও বিভিন্ন চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে ওইসব এলাকার বিভিন্ন ফসলী জমি ও রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলো তলিয়ে যাওয়ায় সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর উড়িয়া, কাবিলপুর, গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারী, গলনা, ফুলছড়ি ইউনিয়নের দেলুয়াবাড়ী, ফজলুপুর ইউনিয়নের পূর্ব খাটিয়ামারী, উজালডাঙ্গা, বাজে তেলকুপি, এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের হরিচন্ডি, জিগাবাড়ী, সন্যাসীর চর এবং সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর ইউনিয়নের বেশকিছু এলাকায় তিস্তার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এদিকে গত এক সপ্তাহে ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জের ওইসব এলাকায় শতাধিক পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে।
ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম সেলিম পারভেজ জানান, সদর উপজেলার রায়দাসবাড়ি, ফুলছড়ি উপজেলার দেলুয়াবাড়ি, জামিরা, গজারিয়া ইউনিয়নের গলনা, ফজলুপুর এখন বন্যা কবলিত। এই সমস্ত এলাকায় নদী ভাঙনও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই সমস্ত এলাকায় এ পর্যন্ত ১২০টি বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, নদীর পানি যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ঘাঘট, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন জানান, প্লাবিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ঘরহারা লোকজনের আবাসনের জন্য ঢেউটিন দেওয়া হচ্ছে।
ছাত্রীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক, বরখাস্ত লম্পট শিক্ষক
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের রহমতপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরিফুল ইসলাম একই বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ম মেয়ে বানিয়ে তার সাথে অবৈধ মেলামেশা করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন। গতকাল শনিবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় অভিযুক্ত শিক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
ওই ছাত্রীর সাথে ধর্ম মেয়ের পরিচয়ে শিক্ষক শফিকুল দীর্ঘদিন থেকে অবাধে মেলামেশা করে আসছিলেন। এরই এক পর্যায়ে সম্প্রতি টিফিনের সময় শফিকুল ওই ছাত্রীকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। তার সাথে অসামাজিক কার্যকলাপের সময় বাড়ির লোকজন দেখে ফেলে। বিষয়টি মুহুর্তেইই এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক এলাকা থেকে পালিয়ে যান। এ নিয়ে এলাকায় তীব্র অসন্তোষ ও সমালোচনার মুখে শনিবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয় বলে রামচন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান।
এলাকাবাসী বলেন, যে শিক্ষক ধর্ম মেয়ের পরিচয়ে একজন ছাত্রীর সাথে এমন ন্যাক্কারজনক কাজ করতে পারে, তার কাছে কোনো ছাত্রীই নিরাপদ নয়। তবে অভিযোগ উঠেছে, ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জোর প্রচেষ্টা চলছে। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক শরিফুল ইসলামের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে ঘটনাটি ষড়যন্ত্রমূলক। এই ছাত্রীর সাথে কোনো ঘটনা ঘটেনি।
জামিনে এসে বাদির পরিবারকে হত্যার হুমকি ভয়ে গ্রাম ছাড়া বাদি ও সাক্ষীরা
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা পলাশবাড়ি উপজেলার পূর্ব ফরিদপুর গ্রামের আব্দুল হাই প্রধানের হত্যা মামলার আসামি মাহজাহান গাছু, আলম মিয়াসহ অন্যান্য আসামিরা বিজ্ঞ হাইকোর্ট থেকে জামিনে এসে হত্যা মামলা প্রত্যাহারের হুমকিসহ নানা ধরণের চাপ প্রয়োগ করে। তারা মামলা প্রত্যাহার অস্বীকার করলে গত ৩০ জুন পুনরায় নিহত হাইয়ের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় আব্দুল হাইয়ের বিধবা স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেওয়া, এসএসসি পরীক্ষার্থীনি খুশি, ৮ম শ্রেণিতে পড়–য়া ছাত্র আল আমিনকে নিয়ে বিচার প্রার্থী হয়ে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। এব্যাপারে গতকাল শনিবার নিহত আব্দুল হাইয়ের পুত্র আল আমিন প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নিকট আবেদন করেছেন।
এদিকে হত্যা মামলার আসামিদের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ, আগুনে পুড়ে ক্ষতি না করলেও গত ১০ জুলাই এই ঘটনা দেখিয়ে পলাশবাড়ি থানায় আব্দুল হাইয়ের পরিবার ও হত্যার মামলার সাক্ষীদের নামে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ফলে হত্যা মামলার বাদি ও সাক্ষীরা প্রাণভয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ মে সন্ধ্যা অনুমান ৬টার সময় পলাশবাড়ি উপজেলার পূর্ব ফরিদপুর গ্রামে পূর্ব শত্র“তার জমিজমার জের ধরে আব্দুল হাইকে আটক করে তাকে দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আঘাত করায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। এব্যাপারে পলাশবাড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে আসামিরা হাইকোর্ট অন্তবর্তীকালিন জামিন নিয়ে আসে।