শুক্রবার ● ২৬ জুলাই ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » রাজশাহীতে নার্সিং কলেজের মেসে ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ
রাজশাহীতে নার্সিং কলেজের মেসে ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ
রাজশাহী প্রতিনিধি :: রাজশাহী নগরের শালবাগান এলাকার একটি ছাত্রীনিবাস থেকে কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা মেয়েটি আত্মাহত্যা করেছেন। আজ শুক্রবার সকালে গ্লোবাল নার্সিং কলেজের মেস থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত ছাত্রীর নাম শায়লা খাতুন (১৯)। সে পদ্মা নদীর চর মাঝারদিয়াড় এলাকার মাইদুল ইসলামে মেয়ে।
শায়লার মামা মাজাহারুল ইসলাম বলেন, পবার দারুশা বেঘুরাগ্রামে নানার বাড়িতে থাকতো শায়লা। সেই সুবাদে রাজশাহীতেই পড়া-শোনা করতো। এর মধ্যে একই এলাকার আজিজুল ইসলাম নামের এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে শায়লার। বিষয়টি পরিবারের লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়।
তিনি আরো বলেন, এর জেরে কয়েকবার শায়লা ও আজিজুলকে নিষেধ করা হয়। এসময় শায়লা বলে আমি আর আজিজুলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবো না। পরিবারের ইচ্ছাতেই বিয়ে করবো। এর পরও শায়লা ও আজিজুলের মধ্যে সম্পর্ক টিকে ছিলো। আজিজুলের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করা নিয়ে তাদের সমস্যা চলে আসছিলো। এর জেরে হয়তো শায়লা আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা মাহারুল ইসলামের।
বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মন জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের কোন এক সময় গলায় ফাঁস দিয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করে থাকতে পারে। প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে শায়লার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তার বাবা-মা গ্রামে বিয়ে দিতে চাইনা। এ কারণে হয়তো মেয়েটি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। নিহতের লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
রাজশাহীতে গুজবে আটকরা কেউ ছেলেধরা নয় : এসপি
রাজশাহী :: ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে কেউ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ। তিনি বলেন, দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে ছেলেধরা গুজব ছড়ানো কুচক্রী মহলের সাথে যেই জড়িত থাকুত তাদের কঠোর শাস্তির আওত্বায় আনা হবে।
আজ শুক্রবার সকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সভা কক্ষে ছেলেধরা গুজব আতঙ্ক প্রতিরোধে সচেতনতা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন এ হুশিয়ারি দেন পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ জানান, এখন পর্যন্ত রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, বাগমারা ও চারঘাট উপজেলায় ছেলেধরা গুজব ছড়ানো হয়েছে। এসব এলাকা থেকে ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয়রা ১২ জনকে আটক করে এবং কাউকে কাউকে মারধরও করা হয়। এর মধ্যে গোদাগাড়ীতে তিনজন, তানোরে দুইজন, বাগমারায় দুইজন ও চারঘাটে পাঁচজন।
পুলিশ সুপার বলেন, স্থানীয়রা যাদের আটক করেছিলেন তাদের সাথে ছেলেধরা বিষয়ক কোন সম্পার্ক নেই। এদের মধ্যে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন, দুইজন প্রতিবন্ধী ও পাঁচজন প্রতারক।
পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ বলেন, দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতিকে অস্থীতিশীল করতে একশ্রেণীর মানুষ এই গুজব ছড়াচ্ছে। গুজবে বিভ্রান্ত হয়ে ছেলেধরা সন্দেহে কাউকে গণপিটুনি দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। কাউকে ছেলেধরা বলে সন্দেহ হলে আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে তাকে পুলিশের নিকট সোপর্দ করবেন এবং পুলিশকে বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে জানাবেন।
মো. শহিদুল্লাহ আরও বলেন, সচেতনতা সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে রাজশাহী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক কর্মসূচী পালন, সচেতনতামূলক প্রচারণাপত্র (লিফলেট) বিতরন, থানা এলাকায় মাইকিং করা, মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরী করা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের সচেতনতামূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাহামুদুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, (সদর সার্কেল) সুমন দেব, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতে খায়ের আলম ও সহকারি পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রুবেল আহমেদ।