সোমবার ● ১৯ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে মসজিদ নির্মাণে পুলিশি বাঁধা
বিশ্বনাথে মসজিদ নির্মাণে পুলিশি বাঁধা
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:: সিলেটের বিশ্বনাথে পাঞ্জেগানা মসজিদ নির্মাণে পুলিশের বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের গাছতলা নামক স্থানে মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে গতকাল রবিবার সকালে নির্মাণ কাজ পুলিশ বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে টানটান উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। মসজিদটি নির্মাণে এলাকার অন্য লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মসজিদের কাজ বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
জানা গেছে, পুরানগাও গ্রামের গাছতলা নামক স্থানে ওই জায়গাটি মসজিদ নির্মাণের জন্য পুরান গাও গ্রামের চমক আলীর কাছ থেকে ওই গ্রামের তিন মহল্লার মুরব্বিরা প্রায় ২ যুগ আগে পঞ্চায়েতের নামে নেন। পুরানগাঁও গাছতলা এলাকায় প্রায় ৭০ টি মুসলিম পরিবার রয়েছে, যাদের নামাজ পড়তে প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয়। দীর্ঘদিন থেকে মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করে আসছেন ওই এলাকার মুসল্লিরা।
অবশেষে গত শুক্রবার জুম্মার নামাজে পুরানগাঁও জামে মসজিদে ওই জায়গায় নতুন মসজিদ নির্মাণের কথা উঠলে গ্রামের তিন মহল্লার মুসল্লিরা সমর্থন জানান। এরই প্রেক্ষিতে রবিবার বাশঁ ও টিন দিয়ে মসজিদের একটি ঘর নির্মাণ শুরু করেন এলাকার মুসল্লিরা। কিন্তু এর আগে ওই এলাকার জয়নাল আবেদীন কুদ্দুছ নামে একজন মসজিদ নিমাণে আপত্তি জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে রবিবার দুপুর ১২টায় বিশ্বনাথ থানার এসআই দিদার আলম সেখানে গিয়ে মসজিদ নির্মাণ বন্ধ করে দেন। এরপর থেকেই এলাকাবাসীর মধ্যে টানটান উত্তেজনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এলাকার প্রবীণ মুরব্বি আশ্রব আলী, রতন মিয়া, চমক আলী, আব্দুল মালিক, মুতলিব আলী, জহুর আলী, মাহমদ আলী, আশিক আলী, রফিক আলী, আলতাব আলী, মুক্তার আলী, আব্দুল নুর, সাবুল মিয়া, আতাবুল মিয়া, কয়ছর আহমদ, আশদ আলী, আব্দুর নুর, আব্দুল হক, আখতার হোসেন, আব্দুল আহাদ, আনর মিয়াসহ শতাদিক মুসল্লী নির্মাণকাজে অংশ গ্রহন করেন।
তারা বলেন, পুরানগাঁও গ্রামে একটি বড় জামে মসজিদ রয়েছে। কিন্তু গাছতলা এলাকার মুসল্লিরা সেই মসজিদে যেতে হলে প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঠে যেতে হয়। তাই এখানে একটি মসজিদের খুবই প্রয়োজন। এলাকাবাসীদের সাথে নিয়েই এই মসজিদের উদ্যোগ নেন এলাকার মুসল্লিরা। কিন্তু গ্রামের দু’একজনের অভিযোগে মসজিদ নির্মাণ আটকে যায়।
এবিষয়ে অভিযাগকারী জয়নাল আবেদীন কুদ্দুছের কাছে জানতে চাইলে (০১৭১২-৭১৭২১৩) তিনি বলেন, পঞ্চায়েতের জায়গা। পঞ্চায়েতের মতামতের ভিত্তিতে মসজিদ বানালে আপত্তি নেই। কিন্তু কাউকে না জানিয়ে গুটি কয়েকজনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এব্যাপারে থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম মুসা বলেন, পঞ্চায়েতের নামে জায়গা। একপক্ষকে না জানিয়ে অন্য পক্ষ মসজিদ নির্মাণ করছে। একটি পক্ষ থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তাই এলাকায় দুটি পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে আছে। মসজিদকে ঘিরে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তাই নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। দুটি পক্ষ মিলিত হয়ে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বিশ্বনাথে ধর্ষণের অভিযোগে যুবককে পুলিশে সোপর্দ
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে আব্দুল করিম (২০) নামের এক যুবককে ধর্ষণের অভিযোগে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে ওই যুবককে বিশ্বনাথ থানায় সোপর্দ করা হয়। এরআগে রবিবার ভোররাতে কাঠ মিস্ত্রি মোহাম্মদ আলীর বসত ঘর থেকে তাকে আটক করা হয়। অভিযুক্ত আব্দুল করিম উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
কাঠ মিস্ত্রি মোহাম্মদ আলী বলেন, ছোটবোনকে বাড়িতে একা রেখে শনিবার সকালে কাজে চলে যান তিনি। পরে রবিবার ভোররাতে কাজ থেকে বাড়ি ফিরে আপত্তিকর অবস্থায় করিমকে তিনি আটক করেন। এ সময় তার বোনের চিৎকারে বাড়ির লোকজন জড়ো হন। ঘটনা জানাজানি হলে রামচন্দ্রপুর গ্রামের ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিনও সেখানে উপস্থিত হন। পরে বাড়ির লোকজন ও ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিনের সহযোগীতায় রোববার দুপুরে আব্দুল করিমকে থানায় সোপর্দ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, পেশায় ফ্রিজ মেকানিক করিম আত্মীয়তার সুবাধে দীর্ঘদিন থেকে ওই যুবতীর বাড়িতে আসা যাওয়া করেন। এক পর্যায়ে মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কও গড়ে তুলেন। রবিবার বাড়িতে একা পেয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করেন। এসময় হঠাৎ কাজ থেকে তার বড়ভাই মোহাম্মদ আলী বাড়িতে এসে তাদের দু’জনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে আটক করেন।
আটকের পর বাড়ির লোকজনসহ ইউপি সদস্যের উপস্থিতিতে ধর্ষণের কথা স্বীকার করলেও পুলিশের কাছে ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করেন অভিযুক্ত আব্দুল করিম। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত থাানয় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন।
তবে, মুঠোফোনে বারবার থানার ওসি শামীম মুসা ও এসআই দেবাশীষ শর্ম্মার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা ফোনকল রিসিভ করেন নি।
সিলেটের ওসমনীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে মামলাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।