মঙ্গলবার ● ২৭ আগস্ট ২০১৯
প্রথম পাতা » কৃষি » ঝিনাইদহের চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন
ঝিনাইদহের চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের চাষিরা এখন ধানের আগাছা দমনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবছর একটু দেরিতে থেমে থেমে বৃষ্টি পাতের কারনে ধানের জমিতে আগাছা পরিমান বেশি। যে কারনে জমিতে আগাছা নাশক ব্যবহার করলে ও ভালো ফল আসেনি। ফলে কৃষকদের বিঘা প্রতি জমিতে প্রায় ৩’হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। সে হিসাবে আমন মৌসুমে ১ লাখ ৫ হাজার ৬৪৬ হেক্টর জমিতে কৃষকের বিপুল পরিমান টাকা আগাছা দমনে খরচ হচ্ছে। এছাড়া ধান উৎপাদনের জন্য উপকরনের দাম বৃদ্ধি পাবার ফলে উৎপানের খরচ বাড়ছে। তবে যে সকল মাঠে ধানের চারা রোপনের পর থেকে জিমিতে প্রয়োজন মত পানির ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে অগাছা পরিমান কম বলে ভুক্তভোগি কৃষকরা জানান। ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসান অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৫ হাজার ৬৪৬ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে সদরে ২৫ হাজার ৩শ হেক্টর, শৈলকুপায় ২৫ হাজার ৮৮০ হেক্টর, হরিণাকুন্ডে ১০ হাজার ৮শ হেক্টর, কালীগঞ্জে ১৯ হাজার ২৭৫ হেক্টর, কোটচাঁদপুরে ৬ হাজার ২৬১ হেক্টর, মহেশপুরে ১৮ হাজার ১৩০ হেক্টর জমি রয়েছে। আর এ পরিমান আবাদ থেকে ৩ লাখ ৫ হাজার ৮৮ টন চাল উৎপাদনের টার্গেট নেয়া হয়েছে। গত বছর আমন আবাদ করা হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়নের আশাননগন গ্রামের কৃষক সহিদুল ইসলাম ও জীবনা গ্রামের মিলন মিয়া বলেন, এবছর দেরি বৃষ্টি হয়েছে, তাও আবার থেমে থেমে। যে কারনে জমিতে আগাছার পরিমান একটু বেশি। বিঘা প্রতি জমিনুযায়ি প্রায় ৩’ হাজার টাকার শ্রমিক খরচ হচ্ছে আগাছা দমনে। জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জি এম আব্দুর রউফ জানান, ঝিনাইদহে এ বছর একটু দেরিতে বৃষ্টি হওয়াতে এখানে একটু দেরিতে ফসল ফলবে। তবে আমরা কৃষকদের সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে বীজতলা তৈরিতে উদ্বুদ্ধ করেছি। গত বছরের তুলনায় কৃষকরা এ বছর বেশি আমনের আবাদ করায় আমরা সন্তুষ্ট। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে এখানে আমন আবাদ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের সারিবদ্ধ চারা রোপণ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগসহ সব ধরনের পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে।
কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে ডাকাতমুক্ত করতে পুলিশের কৌশল
ঝিনাইদহ :: আগে রাত ২টার পর্যন্ত টহল চললেও এখন সকাল পর্যন্ত টহল বাধ্যতামূলক। ৬ মাসে ২ ডাকাতির ঘটনায় ১০জন ডাকাত গ্রেফতার। আগে কিছুদিন পরপরই কুষ্টিয়ার ৪টি মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে ডাকাতি হতো। মহাসড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অস্ত্র ঠেকিয়ে যাত্রীদের সব কিছু লুটে নেয়া হতো। তবে ডাকাত নির্মূল ও ডাকাতি বন্ধে রাতের টহলে কিছু পরিবর্তন আনছে পুলিশ। আগে রাত ২টার পরে সড়কে থানা পুলিশের টহল থাকতো না। এর এ সুযোগটা নিত ডাকাত দলের সদস্যরা। ফজরের নামাজের আগ দিয়ে তারা ডাকাতি করে দ্রুত সটকে পড়তো। তবে এবার ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের নির্দেশে ফজরের নামাজের পরেও টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে জেলায় ডাকাতি প্রায় শুণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। তারপরও বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতরা তৎপর রয়েছে বলে পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়া-আলমডাঙ্গা সড়কের পাটিকাবাড়ি এলাকায়, কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ সড়কের মহিষডাঙ্গা ও শান্তিডাঙ্গায়, কুষ্টিয়া মেহেরপুর সড়কের মশান ও কাতলাগাড়ি, কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের ভেড়ামারার বারমাইল ও লালন শাহ সেতু পয়েন্ট বেশ কিছুদিন আগেও নিয়মিত ডাকাতি হতো। পুলিশের সাথে ডাকাতদের সখ্যতার অভিযোগ ওঠে। ঘনঘন ডাকাতি হওয়ার এইসব সড়কে যাতায়াতকারি যানবাহন চালক ও যাত্রীরা আতঙ্কে থাকতো। এতে জেলা পুলিশের দায়িত্ব নিয়ে আইন শৃংখলা কমিটির সভায় নানা প্রশ্ন উঠে। তবে সেই দৃশ্যপট অনেকটা বদলে গেছে। এসব সড়ক যানবাহন চালক ও যাত্রীদের জন্য নিরাপদ করতে পুলিশ তাদের নিত্যদিনের টহলে কিছু পরিবর্তন আনে। বিশেষ করে যাতে রাতের বেলার বাইরের কোন জেলা থেকে ডাকাত এ জেলায় প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য মধ্যরাত থেকে শুরু করে ফজরের নামাজ না হওয়া পর্যন্ত সড়কে চেক পোষ্ট বসিয়ে তল্লাসী শুরু করা হয়। এছাড়া বিশেষ টহল বসানো হয় সড়কে। পুলিশ ফোর্সরা যাতে ফাঁকি না দেয় সে জন্য ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার নিজেই মনিটরিং করেন নিয়মিত। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, আগে বাইরের জেলা থেকে ডাকাত জেলায় ঢুকে ডাকাতি করে চলে যেত। স্থানীয় ডাকাতরা তাদের সহযোগিতা দিয়ে আসতো। বিষয়টি জানার পর প্রবেশ পথগুলোতে টহল জোরদার করা হয়। আগে পেট্রল টিম রাত ২টার পর ঘুমিয়ে পড়তো, এখন সারারাত জেগে পাহারা দেয়া লাগে। কারণ ডাকাতি হয় নামাজের আগে। পুলিশ টহল এ সময়টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এতে সুফল পাওয়া যাচ্ছে। সড়কে ডাকাতি প্রায়ই শুণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে।’ কুষ্টিয়ার মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম বলেন, মিরপুর-মেহেরপুর রুটের কয়েকটি স্থান রয়েছে সেখানে আগে ডাকাতি হতো। লোকজন রাতে ভয়ে এ সড়কে চলাচল করতে ভয় পেত। এখন টহলে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমান এসপি স্যার রাত ২টার নিয়ম ভেঙ্গে সারারাত পাহারার ব্যবস্থা করেছে। এতে ডাকাতি প্রায়ই বন্ধ হওয়ার পথে। এছাড়া গত এক বছরে তালিকাভুক্ত শীর্ষ ডাকাতদের অনেকে এনকাউন্টারে নিহত হয়েছে। ভয়ে অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এর মাঝে ঈদের আগে ভেড়ামারা থানার লালন শাহ সেতু সংলগ্ন এলাকায় গরু বিক্রি করে আসার সময় ব্যাপারিদের গাড়িতে ডাকাতি হয়। পুলিশ এক সপ্তাহের মধ্যেই ডাকাতদের গ্রেফতার করে। এরা সবাই নতুন ডাকাত বলে পুলিশ জানিয়েছে। এক গরু ব্যাপারীর সাথে আঁতাত করে তারা এ কাজ করে। এছাড়া মিরপুরে আরেকটি ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ ৪জনকে গ্রেফতার করে। এসব ঘটনায় খোয়া অর্থ উদ্ধার করে পুলিশ। একটি সূত্র জানিয়েছে, আগে থানার ওসিরা ডাকাতদের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ায় আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যেত। এতে তারা আবার একই কাজে জড়িয়ে পড়ত। তবে এখন ডাকাতদের বিরুদ্ধে শক্ত আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’ কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত বলেন, ডাকাতরা সাধারন সড়কে ডাকাতি করে ভোরের দিকে। তাই পুলিশের টহল ও চেক পোষ্টে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। সে কারনে ডাকাতরা সুবিধা করতে পারছে না। জেলাকে ডাকাতমুক্ত করতে কৌশলে পরিবর্তন আনা হয়েছে। কৌশলে পরিবর্তণ আনায় সফল হচ্ছে পুলিশ। আর সারারাত সড়ক নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারছে যানবাহন চালক ও যাত্রীরা।’