সোমবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাঙ্গুনিয়াতে দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা
রাঙ্গুনিয়াতে দূর্গা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা
রাঙ্গুনিয়া :: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ধামাইর হাট সংলগ্ন কর্মকার পাড়ায় দুর্গা মন্দিরের স্থাপিত প্রতিমা ও মহা শ্মশান ভাংচুর করছে একদল দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ২টায়। মন্দিরের ফটকের তালা ভেঙ্গে দুইটি প্রতিমা, দানবাক্স ও অনান্য জিনিসপত্র ভাংচুর করে পালিয়ে যায়। মন্দির কমিটির সভাপতি হারাধন কর্মকার বলেন শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ২টার সময় একদল দুর্বৃত্তরা মন্দিরে প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে প্রতিমা ও মহা শ্মশান ভাংচুর করে পালিয়ে যাওয়ার সময় আমরা চারজনকে চিহ্নিত করি। ভাংচুরের ঘটনায় গতকাল রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) চিহ্নিত চারজন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। এর আগে ৯৯৯ যোগাযোগ করে রাঙ্গুনিয়া থানার ফোন নাম্বার নিয়ে তারপর থানায় যোগাযোগ করেছি।
সূত্রে জানা যায়, কর্মকার পাড়ার শ্মশান কর্তৃপক্ষের সাথে স্থানীয় প্রতিপক্ষ মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। গত শনিবার রাত ২টার দিকে দেশীয় অস্ত্র সহ একদল ব্যক্তি শ্মশানের জায়গা দখলের চেষ্টা করলে কর্মকার পাড়ার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিরোধ করতে আসে। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিপক্ষদল শ্মশানের পাশের অপর একটি রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মন্দিরের তালা ভেঙ্গে স্থাপিত প্রতিমা ও অনান্য জিনিস ভাংচুর করে। রাঙ্গুনিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইমতিয়াজ মোহাম্মদ আহসানুল কাদের ভুঁইয়া বলেন, মন্দিরের ভাংচুরের ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। মন্দিরের পাশে শশ্মানের জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে জেনেছি। দীলিপ কর্মকার বাদি হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযুক্তদের আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শ্মশান কমিটির সভাপতি দীলিপ কর্মকার জানান মন্দিরের লকার ভেঙে ১ লাখ ১০হাজার টাকা, প্রতিমার গলায় স্বর্নের হার দুই ভরি সহ দুইটি প্রতিমা ও মহা শ্মশান ভাংচুর করে পালিয়ে যায় তারা। দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে পূজার জন্য কালেকশন করা টাকাসহ লকারে ছিল। লকার ভেঙ্গে টাকাগুলোসহ নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। তবে চিহ্নিত চারজন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। তাদের নাম নাজিমুল করিম পেয়ারু,ফজলুল করিম, মোহাম্মদ মহিউদ্দিন,আব্দুল্লাহ। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান (ইউএনও) বলেন,‘প্রতিমা ভাংচুরের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’এদিকে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় রাঙ্গুনিয়ার হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রীয়া সৃষ্টি হয়েছে। হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন শ্রেণির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের প্রধান উপদেষ্ঠা নির্মল কান্তি দাশ ও সভাপতি বিভূতি ভূষন সেন বলেন, “ মন্দিরে ভাংচুরের ঘটনায় সনাতন সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন পর দূর্গাপূজা শুরু হবে। দূর্গাপূজা পালন করতে পারব কিনা সংশয়ে আছি। আমরা ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু বিচারের দাবি করছি।