বুধবার ● ২০ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » গাজিপুর » গাজীপুরের ভূরুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষা নিচ্ছে কোমলমতি শিশুরা
গাজীপুরের ভূরুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে শিক্ষা নিচ্ছে কোমলমতি শিশুরা
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: আধুনিক নগরায়ণের কাজ শুরু হলেও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভূরুলিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে জড়াজীর্ণ ভবনে৷ ভবনের চার পাশের ইটের দেয়ালে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে৷ প্রতিদিন শিক্ষা নিতে আসা কয়েক শত কোমলমতি শিশু বিদ্যালয় ভবনের দেয়াল ভেঙ্গে পড়ার আতঙ্ক নিয়েই ক্লাস করছে৷ এদিকে সন্তানদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কগ্রস্থ থাকেন অভিভাবকরাও৷ বার-বার তাগিদ দিলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যেন কানে তালা৷ এদিকে সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার আন্তরিক হলেও, এই এলাকায় শিক্ষা কার্যক্রমের সফলতা অনিশ্চয়তার মুখে পরেছে৷ হুমকীর মুখে রয়েছে শত শত শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক ও অভিবাবকদের জীবন৷ অনাকাঙ্খিত ভাবে ভুমিকম্পসহ যে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগে দুর্ঘটনা ঘটলে ব্যাপক প্রাণহানীর আগেই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান এলাকাবাসি৷
অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানায়, পুরাতন টিনের ঘর ভেঙ্গে, ১৯৯৫ সালে নতুন করে ৪কক্ষ বিশিষ্ট একতলা বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ করে সরকার৷ নির্মাণ কাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়৷ যে কারণে নির্মানের এক বছর পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে৷ গেল কয়েক বছরে তা আরও ভয়াবহ রম্নপ নিয়েছে৷ যে কোন সময় এই ভবনটি ভেঙ্গে পরতে পারে৷ অনাকাঙ্খিতভাবে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে এই গ্রামের কোমলমতি শতশত শিক্ষার্থীসহ শিক্ষক ও আগত অভিভাবকদের ব্যাপক প্রাণহানীর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছে এলাকাবাসি৷
এ ছাড়াও অরক্ষিত মাঠ, স্বাস্থ্য সম্মত পর্যাপ্ত টয়লেট না থাকায় বেশীরভাগ সময়ই বিদ্যালয়ে আগত শিক্ষার্থীদের পরতে হচ্ছে নানা সমস্যায়৷ খেলার মাঠটিরও বেহাল অবস্থা৷ ইতোমধ্যেই মাঠের পশ্চিম অংশের জমি বেদখল হওয়ায় মাঠে খেলাধুলার পরিবেশ হারিয়েছে শিক্ষার্থীরা৷ বাত্সরিক ক্রীড়াপ্রতিযোগীতার আয়োজনে ব্যার্থ হচ্ছে পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা৷ জরুরী ভিত্তিতে মাঠের জমি উদ্ধার করে বাউন্ডারী (ওয়াল) নির্মানের দাবি জানান তারা৷ এসব কারনে শিশুদের স্কুলে পাঠানোর পর থেকে বাড়ি ফেরা পর্যন্ত উত্কন্ঠিত ও চিনত্মিত থাকে অভিবাবকরা৷ বিদ্যালয় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকার কারনে অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে চায় না, যার কারনে শিশুরা পড়ালেখার দিকে অমনোযোগী হয়ে উঠছে৷ ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা এবং সমাজ হারাচ্ছে মেধাবী মুখ৷ নামে মাত্র পরিচালনা পরিষদ থাকলেও তাদের কোন কার্যক্রম নেই৷ এই পরিচালনা পরিষদের আমুল সংঙ্কার করা প্রয়োজন৷
২০ জানুয়ারি সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গাজীপুরের ভূরুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবনটির চারপাশের পিলার, ওয়ালে ও ছাদের নিচে বড় বড় ফাটল দৃশ্যমান রয়েছে৷ এ কারণে এখানকার কয়েকশত শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ আগত অভিবাবকরা সর্বদাই থাকেন আতংকিত৷ ১৯৬৮ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়ের পুরাতন টিনের ঘর ভেঙ্গে, ১৯৯৫ সালে মাঠের উত্তর পাশ্চিম পার্শে ৭২ ফুট দৈর্ঘ এবং ২২ফুট প্রস্থ একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়৷ ভবনের ফ্লোরের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে, চারপাশের দেয়ালসহ ছাদ ও পিলারের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে এবং ডালাইসহ প্লাষ্টার খুলে খুলে পরছে৷ যেখানে শিক্ষাথীদের জন্য ৩টি এবং অফিস, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকবৃন্দের জন্য একটি কক্ষ রয়েছে৷ যার মধ্যে প্রতি বছর ঠাসাঠাসি করে বসে এবং দাড়িয়ে সাড়ে তিন থেকে চারশত শিক্ষার্থী শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে৷
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাশেদা গণী জানান, বিদ্যালয়টি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত৷ ভবনে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে, পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ ও অফিস কক্ষ নাই, দপ্তরী ও নাইটগার্ড নাই, মাঠের জমি জবর দখল করে রাখায় শিক্ষার্থীদের শরীর চর্চা ও খেলাধুলায় বিগ্ন ঘটছে এবং স্কুল ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাউন্ডারী (ওয়াল) করা প্রয়োজন৷ শিশুদের জন্য স্বাস্থ সম্মত পর্যাপ্ত টয়লেট নাই৷ এই সমসত্ম সমস্যার বিষয়ে কয়েক বছর যাবত্ কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানালেও কোন কাজ হয়নি।