শনিবার ● ৯ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » অবসরপ্রাপ্ত এক উপ সচিবের আবেগঘন স্ট্যাটাস
অবসরপ্রাপ্ত এক উপ সচিবের আবেগঘন স্ট্যাটাস
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ শহরে সববাসকারী সরকারের অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি সেক্রেটারি আবু বকর তার অভাব অনটন ও যাপিত জীবন নিয়ে একটি আবেগঘন লেখা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। গত ৫ নভেম্বর “হায়রে নিয়তি! হায়রে মুক্তিযোদ্ধা” শিরোনামে লেখাটি তিনি তার টইমলাইনে পোস্ট করার পর নেটিজেনরা তার পাশে দাড়ানোর প্রত্যায় ব্যক্ত করেন। ২৪ বছর আগে অবসর নেওয়া এই মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বানিয়াবহু গ্রামে। বর্তমান তিনি দ্বতীয় স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়ে বসবাস করনে ঝিনাইমহ শহরের মহিলা কলেজ পাড়ায়। ফেসবুকে তার লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো “কিছু বলতে বড় বেদনা বাজে বুকে। আমি একজন সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা, প্রথম সারির সংগঠক। মুজিব নগর সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দায়িত্বপ্রাপ্ত এসডিও (মেহেরপুর ড. তৌফিক-ই- এলাহির অবর্তমানে- ৭১ এর ডিসেম্বরের ৫ তাং থেকে), জাতির পিতার অনুমোদনক্রমে মহাকুমা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান, ১৭ এপ্রিলের শপথ অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক (অন্য দু’জন হচ্ছেন দুই বীর বিক্রম, ড.তৌফিক-ই- এলাহী ও এসডিপিও জনাব মাহবুব)। ১৮০০ মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র সমর্পণের কমান্ডার, ৭৫০ জন শহীদকে গণকবর থেকে তুলে তাদের দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেছি। ২.৫ লক্ষ শরনর্থীকে নিজ গ্রামে ভারতীয় আর্মীর গাড়িতে পৌছে দিয়েছি। এ ছাড়া মুজিনগর কর্মচারী কল্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ৪ বার জাতির পিতার সান্নিধ্য লাভ করেছি। তাঁর আদরের কিল খেয়েছি পিঠে।
গোপালগঞ্জ জেলার এডিএম থাকা কালে ১৯৯১ সালে মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর অনুরোধে টুঙ্গী-কোটালিপাড়ার সকল গ্রামে সংসদ নির্বাচন পরিচালনার জন্য ছুটে বেড়িয়েছি। দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিসি হিসাবে কাজ করেছি। মাঠ পর্যায়সহ ৬ টি মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু কী পেলাম জীবনে? ডিএস হিসাবে ২৪ বছর আগে অবসর জীবনের শুরুতে ৩০৮০ টাকা ভাতা পেতাম। আজ তা ১১৫০০/- মাত্র। আমি আজ গৃহহীন, সহায় সম্বলহীন। পৈত্রিক জমি বিক্রী করে ছেলেমেয়ের লেখাপড়া শিখিয়েছি। তারা আজ লন্ডন, অস্ট্রেলিয়া, ঢাকা ও খুলনায়। প্রধান শিক্ষিকা বউ মরে গেলে ঝিনেদার ভাড়াবাসায় একাকী থেকেছি এবং নিজেই রান্না করে খেতাম। পরে সবাই মিলে আবার আমায় বিয়ে করালো। বউ ও এক কন্যা নিয়ে সংসার। পেনশনের টাকা ঘরভাড়া, চাল, ডাল,ওষুূধ গ্যাস বিদ্যুৎ বিল দিতেই শেষ। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা দিয়ে ছোটমাছ, ডিম ও তরকারি কিনি। ঐ দিয়েই ফকিরের মত জীবন যাপন। অথচ রাজাকার ও ক্ষমতাসীনরা আজ হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। হায়রে জীবন! এ জীবন চাইনা, চাই মৃত্যু। জীবন নামের যাত্রাপালার এটি শেষ দৃশ্য। এবার অন্যকথা। বউ মেয়ে এবং আমি তিনজনই গুরুতর অসুস্থ্য। মেয়ে অজানা কঠিন রোগে আক্রান্ত। ২৯.১০ তারিখে সে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি হলো। একটি সিট মিললো, কিন্তু তারা ওষুধ দিলনা, বাইরে চারটি পরীক্ষা ও ওষুধ কিনতে গেল হাজার দশেক। গতকাল ৩.১১,১৯ তারিখে বাধ্যতামুলক ভাবে ডাক্তার তাকে রিলিজ করে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করে দিল। গতমাসের ভাতা তুলে তাদের আজ (৪.১১) ঢাকা পাঠিয়েছি। ঢাকায় গিয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে সিট পেল না, নার্স এসে টাকা চায়। পরিশেষে অন্য এক রোগীর সিটে জায়গা দিয়েছে এক দিনের জন্য। আগামী কাল একতলার বারান্দায় মাদুর পেতে শুতে হবে বলে ফরমান জারী হয়েছে। হাসপাতালে পরীক্ষা নয়। রক্ত ছাড়াও আরও ৪ টি পরীক্ষা বাইরে থেকে করাতে হবে এবং ওষুধও কিনতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের বউ- বাচ্চার জন্য সিট রিজার্ভ বাখা বা ওষুধ দেওয়ার সরকারি আদেশ কেন হাসপাতাল মানেনা? কে দেবে এর জবাব? আমি মরবো, বউ মরবে, মেয়ে মরবে, কারন পয়সা নেই। হায়রে স্বদেশ! হায়রে মুক্তিযোদ্ধা! আমি চাইনা এ ঘৃণিত জীবন। মন্ত্রী, এমপি মহোদয়রা সর্দি হলে বিদেশ যায় সরকারি খরচে। আমি বাংলা সাহিত্যের একজন মহাকবি, কিন্তু আজও সরকার দেয়নি কোনো পদক বা খেতাব। জাতির জনকের মহামহীম কন্যার আদেশ ছাড়া রাষ্ট্রযন্ত্র ঠিক মত চলে না। তিনি জনতার নেতা, তিনি জননী, তিনি কল্যাণকামী বিশ্ববরেণ্য নেতা। তাঁকেই জানাই, মাগো দৃষ্টি দিন আমার পানে। আমার ও আমার পরিবারকে আরও কিছুদিন বাঁচতে দিন। তা না হলে-চাইনা ভাতা,চাইনা ওষুধ, চাইনা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন। মরার পর চাইনা কাফন- দাফন, চাইনা বেহেশত্।নীরবে নিভৃতে মিশে যেতে চাই দূর অজানায়, যেখানে হাসপাতাল নেই, সরকার নেই, নেই চ্ন্দ্র- সূর্য, গ্রহ- তারা। ৮৪ বছরের এক হৃদ রোগী মুক্তিযোদ্ধা, ঝিনাইদহ,৪.১১.২০১৯।
ঝিনাইদহে শুরু হয়েছে লেপ-তোষক তৈরির ধুম
ঝিনাইদহ :: শীত জেকে বসার আগেই ঝিনাইদহের প্র্যান্তলে লেপ-তোষক তৈরির ধুম পড়েছে। ক্রেতারা ভীড় জমাচ্ছেন লেপ-তোষকের দোকানে। আর তাই লেপ-তোষক তৈরিতে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন কালীগঞ্জের কারিগররা। জেলার ছোট বড় হাট বাজার গুলোতে লেপ তোষক প্রস্তুতকারী বিভিন্ন দোকান মালিক শ্রমিক, ধুনাইকার এখন তুলা ধুনায় ও লেপ-তোষক তৈরি ও সেলাই এর কাজে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। লেপ-তোষকের দোকান গুলোতে বাড়ছে ক্রেতাদের আনাগুনা। অনেকে তুলা কিনে যাচ্ছে বাড়িতে লেপ তৈরি করার জন্য। কারিগররা বলছেন, দিন যতই গড়াচ্ছে শীতের তীব্রতা ততই বেশি বাড়ার আশঙ্কায় উপজেলা শহরের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ নতুন নতুন লেপ-তোষক তৈরি করছে। বছরে অন্য সময় বেঁচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েক গুণ বেড়ে যায়। প্রতিদিন গড়ে ১০-১২টি লেপ তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন বলে কারিগররা বলেন। লেপ-তোষক ব্যবসায়ীরা বলেন, এ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রচুর লেপ-তোষক তৈরির অর্ডার পাচ্ছি। কাজ সামাল দিতে অতিরিক্ত কারিগর রেখে দিয়েছি। চেষ্টা করছি সাধ্য মত সঠিক সময়ে গ্রাহকদের কাছে পণ্য ডেলিভারি দিতে। অর্ডার নেওয়ার পাশাপাশি অগ্রিম কিছু লেপ-বালিশ ও তোষক বানিয়ে রেখেছি। ক্রেতা সাধারণের কাছে এসব রেডিমেট হিসাবে বিক্রি করে থাকি। অনেকে রেডিমেট তৈরি করা লেপ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। লেপ ও তোষক তৈরি করা কারিগরদের এখন আর বসে থাকতে হচ্ছে না। তারা প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছে। দোকান গুলোতে দেখা গেছে কেউ তুলা ধুনছে, কেউ সেলাই করছে, কেউ কাপড় কাটছে। সব মিলিয়ে দোকানে কেউ বসে থাকছে না। অবশ্য ক্রেতারা বলছে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর তুলার দাম একটু বেশি, যে কারণে তৈরি করতে দাম বেশি নিচ্ছে। লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন কারিগররা। ঋতু বৈচিত্র্যে শীতের শুরুতেই রাতে কুয়াশা আর দিনে হাল্কা গরম থাকলেও ঠান্ডার প্রকোপ কিছুটা বাড়তে শুরু করেছে। ফলে ঠান্ডা নিবারণে এ অঞ্চলের মানুষের প্রস্তুতি চলছেও পুরোদমে। কালীগঞ্জ উপজেলাটি নদী, খাল, বিলবেষ্টিত হওয়ায় শীতকালে এ অঞ্চলে তুলনামূলক ভাবে শীতের প্রকোপ বেশি থাকে। প্রতি বছরের অভিজ্ঞতা থেকে ঠান্ডা নিবারণের জন্য লেপ-তোষক বানিয়ে মানুষের আগাম প্রস্তুতি চলছে। আর এ সুযোগে পশরা সাজিয়ে বসেছেন পুরাতন কাপড়ের দোকানীরাও। পুরাতন কাপড়ের দোকানে ও ভীড় শুরু হয়েছে। শহরের লেপ-তোষক তৈরীর দোকান গুলোতে গিয়ে দেখা যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। অনেকে পুরাতন লেপের তুলা বদলীয়ে নতুন কাপড় দিয়ে সেলাই করে নিচ্ছে। পরে ঝমেলা হয়, তাই আগাম লেপ-তোষক বানাচ্ছি বলে রেখা খাতুন জানান। দোকানী প্রতিটি লেপ-তোষক বানাতে মজুরী হিসেবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হয়। বর্তমান বাজারে গার্মেন্টস ঝুট দিয়ে তোষক তৈরিতে ১ হাজার থেকে ১২শত পর্যন্ত টাকা খরচ পড়ে। তাছাড়া কার্পাশ তুলা দাম বেশি হওয়ায় অনেকে গার্মেন্টসের তুলা দিয়ে লেপ তৈরি করে থাকেন। বাজারে কম্বলের তুলনায় লেপের দাম কম থাকায় চাহিদাও বেশি থাকে।
শৈলকুপায় ৭ জুয়াড়ীকে আটক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নগদ টাকাসহ ৭ জুয়াড়ীকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যা রাতে তাদেরকে শৈলকুপার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ঠাকুর মালিথিয়া গ্রাম থেকে আটক করা হয়। জানা যায়, ঐ গ্রামের দীলিপ মন্ডলের পরিত্যাক্ত ঘরে জুয়া খেলা চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে শৈলকুপা থানার ওসি বজলুর রহমানের নেতৃেত্ব সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় ৭ জুয়াড়ীকে হাতেনাতে আটক করে। জুয়ার কোট থেকে ৯ হাজার ৭৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযানে অংশ নেয় লাঙ্গলবাধ ক্যাম্প আইসি এসআই রাজ্জাক ও এএসআই এনামুল। আটককৃতরা হলো, ঠাকুর মালিথিয়া গ্রামের কৃষ্ণ বিশ্বাস, কামারিয়া গ্রামের পার্থ মন্ডল, শৈলেন মন্ডল, গৌতম কুমার বিশ্বাস, নিরপতি বিশ্বাস ও শ্রীপুর উপজেলার মাসালিয়া গ্রামের আলাই মন্ডল এবং খবির শেখ। আটককৃতদের বিরুদ্ধে শৈলকুপা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানায়।