মঙ্গলবার ● ১৯ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধা পৌরসভার ঘাঘট লেক বাস্তবায়নে ধীরগতি
গাইবান্ধা পৌরসভার ঘাঘট লেক বাস্তবায়নে ধীরগতি
ষ্টাফ রিপোর্টার :: গাইবান্ধা পৌরসভার দীর্ঘ প্রত্যাশিত শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পরিত্যক্ত ঘাঘট লেকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। সম্প্রসারিত বাজেটের অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় প্রকল্পটির কাজ অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের একটি প্রকল্পের আওতায় ২০১৭ সালে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। এজন্য ব্যয় বরাদ্দ করা হয় ১৬ কোটি ২১ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় লেকটির ভাঙনরোধ কল্পে দু’পাশে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ, ব্রীজ ও শ্মশানঘাটে ৫৪ ও ৪৫ মিটার দীর্ঘ দুটি আরসিসি ব্রীজ নির্মাণ এবং শহরের ডেভিড কোম্পানীপাড়া-ব্রীজ রোড এসিল্যান্ড অফিস সংলগ্ন এ্যাকোয়াষ্টেটপাড়া ও শ্মশানঘাটে বসার দুটি পাকা বেঞ্চ ও নদীর তলদেশ পর্যন্ত প্রশস্ত সিঁড়িসহ চারটি ঘাট নির্মাণ ও ঘাটগুলোতে উন্নতমানের নান্দনিক আলোক সজ্জার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়া হয়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চারটি ঘাট নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ব্রীজ দুটি নির্মাণের কাজ এখনও অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় রয়েছে। তদুপরি লেকের দেয়াল নির্মাণের কাজ এ পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে মাত্র শতকরা ২২ ভাগ। এছাড়া ঘাট সংলগ্ন সড়ক উন্নয়ন ও আলোকসজ্জার কাজ শতকরা ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।
কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকালে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ি প্রকল্পের আওতায় আরও কিছু জরুরী কাজ একান্ত প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ায় এলজিইডির সংশ্লিষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একটি সম্প্রসারিত বাজেট সরকারের নিকট দাখিল করেছেন। এতে প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বমোট ৭৫ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রসারিত এই প্রকল্পের আওতায় ঘাঘট লেক সংলগ্ন এলাকায় একটি শিশু পার্ক, সড়ক, নদীর দু’পাড়ে পানি নিস্কাশনের দুটি ড্রেন নির্মাণ এবং ড্রেনের উপর ওয়ার্কওয়ে নির্মাণ, লেকের দু’পাশে নান্দনিক বাগান সৃজন, উন্নত প্রযুক্তির আলোকসজ্জায় সজ্জিতকরণ, লেকের দু’পাশেই আরও বসার বেঞ্চ নির্মাণ করা এবং লেকের পানি সবসময় বিশুদ্ধ রাখার জন্য একটি পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হবে। সম্প্রসারিত এই প্রকল্পের অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ না করায় ঘাঘট লেক প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ এখন স্থগিত হয়ে পড়েছে।
এব্যাপারে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন বলেন, সম্প্রসারিত ঘাঘট লেক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দসহ প্রকল্পটি যাতে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয় সেব্যাপারে গাইবান্ধা সদর আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলতি বছরেই চাহিদা মোতাবেক অর্থ বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে দ্রুত প্রকল্পটির উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের অগ্রগতি হবে।
উল্লেখ্য, গাইবান্ধা তিস্তার শাখা নদী হিসেবে এই ঘাঘট নদীটি রংপুর পেরিয়ে গাইবান্ধায় প্রবেশ করে এবং জেলা শহরের মাঝ বরাবর প্রবাহিত হয়ে গাইবান্ধার গিদারী ইউনিয়নের বাগুড়িয়া হয়ে ব্রহ্মপুত্রে গিয়ে পড়ে। শহরের মাঝ বরাবর প্রবাহিত হওয়ায় ঘাঘট নদীটির অকাল বন্যা, নদী ভাঙন, শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমস্যা সংকটসহ নানা দুর্ভোগের কবলে পড়তে হয় গাইবান্ধা পৌরবাসিকে। এমতাবস্থায় পৌর এলাকার ডেভিড কোম্পানীপাড়া ও শ্মশানঘাট এলাকায় নদীটির মুখ বন্ধ করে দিয়ে ডেভিভ কোম্পানীপাড়া থেকে পূর্বকোমরনই পর্যন্ত লুপকাটিং করে ঘাঘট নদীর মূল প্রবাহটিকে শহরের বাইরে দিয়ে প্রবাহের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে।
ফলে পরিত্যক্ত এই ঘাঘট লেকটিতে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের সৃষ্টি হয় এবং শহরের সৌন্দর্যকে ব্যাহত করে। এমতাবস্থায় পরিত্যক্ত লেকটিকে উন্নয়ন করে শহরের নান্দনিক সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি এবং বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার এই উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গাইবান্ধাবাসির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গাইবান্ধা সদর আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনির সার্বিক সহযোগিতা ও পৌরসভার বর্তমান মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগেই ঘাঘট লেক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়।
গাইবান্ধায় মূল্য বৃদ্ধির গুজবে লবণ কেনাবেচার হিড়িক
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় লবণের দাম বাড়ার গুজবে জেলা শহরসহ হাট-বাজারগুলোতে লবণ কেনাবেচার হিড়িক পড়েছে। তিতাস, পঁচা ও ফ্রেস লবণের ডিলার জেলা শহরের ভিএইড রোডের মেসার্স সবুর অ্যান্ড ব্রাদার্সের দোকান এবং গুদামে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকেই লবণ কেনার হিড়িক পড়ে যায়। আবার কোথাও কোথাও লাইন ধরে খুচরা ও পাইকারীভাবে লবণ ক্রেতারা কিনছেন বলেও জানা গেছে। এছাড়া শহরের পুরাতন বাজার, নতুন বাজার, হকার্স মার্কেটের দোকানসহ অন্যান্য মনোহারী দোকানগুলোতেও একসাথে একাধিক প্যাকেট লবণ ক্রয় করতে দেখা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, পলাশবাড়ি, সাদুল্যাপুর উপজেলা সদর এবং গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারগুলোতে লবণের মূল্য বৃদ্ধি এবং দুষ্প্রাপ্যতার গুজব সকাল বেলা থেকেই ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এই গুজবের ফলেই ক্রেতারা অধিক পরিমাণ লবণ কিনতে শুরু করেন। এই সুযোগে কোনো কোনো উপজেলা সদর এবং গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারগুলোতে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী প্রতিকেজি লবণের দাম ২০ থেকে ৪০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাঘাটার কামালের পাড়া ইউনিয়নের ফলিয়ার বাজারে প্রতি কেজি লবণ ১শ টাকা করে বিক্রির খবর পাওয়া গেছে।
এব্যাপারে গাইবান্ধার লবণের ডিলার মেসার্স সবুর অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুস সবুর জানান, এই গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে সকাল ১০টা থেকে হঠাৎ করেই তার দোকানে লবণ বিক্রি বেড়ে যায়। দুপুর ২টা মধ্যেই ৮শ’ বস্তা (প্রতি বস্তায় ২৫ কেজি লবণ) বিক্রি হয়। এ খবর লেখা পর্যন্ত তার দোকানে লবণ বিক্রি অব্যাহত ছিল। এদিকে লবণের গুজবের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বিভিন্ন লবণের দোকান পরিদর্শন করেন বলে জানা গেছে। এসময় দোকানদারদের একজন ক্রেতার কাছে অতিরিক্ত লবণ বিক্রি না করার পরামর্শ দেন।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মতিন ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মোবাইল ফোনে কথা বললে তারা জানান, এ ধরণের গুজবের কোনো ভিত্তি নেই এবং লবণের কোনো সংকট বা মূল্য বৃদ্ধিরও কোনো কারণে নেই। তবে এব্যাপারে বাজার মনিটরিং করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে জানান তারা।
গাইবান্ধায় গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে বিউটি বেগম (২২) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে বাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে পলাশবাড়ী পৌরশহরের সিধনগ্রামে শ্বশুরবাড়ী থেকে বিউটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বিউটি সিধনগ্রামের মামুন মিয়ার স্ত্রী এবং শহরের নুনিয়াগাড়ী গ্রামের আব্দুস ছামাদ মিয়ার মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, তিনবছর আগে বিউটির সঙ্গে মামুনের বিয়ে হয়। তাদের নয় মাসের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। দা¤পত্য কলহের জের ধরে গত সোমবার বিউটির ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায় শ্বশুরবাড়ীর লোকজন। এতে মনের ক্ষোভে বিউটি বাবার বাড়ীতে চলে যায়। বাবা-মা বিউটিকে বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়ীতে পাঠায়। মঙ্গলবার ভোরে বাক-বিতন্ডার জের ধরে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ীর লোকজনের মারপিটে বিউটির মৃত্যু হয়।
পলাশবাড়ি থানা পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের শরীরে মারপিটের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় বিউটির শ্বশুর আব্দুল মজিদকে আটক করা হয়েছে।
পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অসহনীয় মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গাইবান্ধায় কৃষক দলের মানববন্ধন
গাইবান্ধা :: পেঁয়াজসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অসহনীয় মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার গাইবান্ধা জেলা কৃষক দলের উদ্যোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা কৃষক দলের সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুন্নবী টিটুল, সাবেক এমপি সাইফুল আলম সাজা, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান সরকার, পৌর বিএনপির সভাপতি শহীদুজ্জামান শহীদ, সদর থানা বিএনপির আহবায়ক খন্দকার ওমর ফারুক সেলু, জেলা বিএনপির উপদেষ্টা আলমগীর সাদুল্যা দুদু, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান নাদিম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, জেলা তাতী দলের আহবায়ক রাশেদুজ্জামান লিটন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ঝর্না মান্নান, জেলা কৃষক দলের সহ-সভাপতি ছলিমুদ্দিন ব্যাপারী, কৃষক দল শহর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রানা, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ নজরুল ইসলাম, আতাউর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা কৃষক দলের সহ-সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সাজু।