বৃহস্পতিবার ● ২১ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার গাছ
বিশ্বনাথে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার গাছ
ষ্টাফ রিপোর্টার :: বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদাসিনতায় সিলেটের প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিতে ভিজে আর রোদে শুকিয়ে ও মাটিতে পঁচে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের গাছগুলো। আর বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওই দায়িত্বহীনতার কারণে কাঙ্খিত রাজস্ব আদায় করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সরকার। এমনকি সঠিক মূল নির্ধারণের অভাবে গাছ কর্তন করে জায়গা খালি করে না দিতে পারায় আটকে আছে সরকারের অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডও। উপজেলার ৮ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সড়কে পার্শ্বে থাকা দীর্ঘদিনের পুরনো গাছ ঝড়ে কিংবা গুড়ির মাটি সরে যাওয়ার ফলে উপড়ে আছে। কোন কোন গাছ আবার অতিরিক্ত ডালপালার ভারে হেলে বা উপড়ে পড়ছে। উপড়ে পড়া গাছগুলো সঠিক সময়ে বিধি মোতাবেক নিলাম করা হলে সরকারের রাজস্ব আদায় হতো ব্যাপকহারে। কিন্তু বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চরম অবহেলায় না সম্ভব হচ্ছে না।
সড়কের পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নদীর তীরে থাকা গাছগুলো উপড়ে পড়ছে। আর উপড়ে পড়ার পর সেই গাছগুলোর অর্ধেক মাটিতে আর অর্ধেক নদীর পানিতে থাকার ফলে বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে মানুষের ও নৌ চলা চল। তথাপিও গ্রহন করা হচ্ছেনা কার্যক্রর কোন প্রদক্ষেপ। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন স্থানে উপড়ে পড়া গাছগুলোর ডালপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছেন এলাকাবাসী শুধুমাত্র বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অযত্ন আর অবহেলার কারণেই।
অনেক স্থানে আবার সড়কের পার্শ্বে থাকা গাছ কৃষি জমিতে উপড়ে পড়ার কারণে সেই জমির মালিক (কৃষক) বা বর্গাচাষী ওই কৃষি জমির বিরাট অংশে চাষাবাদ করতে পারছেন না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে তাদেরকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে ফসল উৎপাদন থেকে। কোথাও কোথাও আবার সড়কের পার্শ্বে থাকা পুরাণো গাছের ডাল হঠাৎ করেই ভেঙ্গে পড়ছে নিচে। এতে যেকোন সময় ঘটনা পারে অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আবার কোন কোন সড়কে গাছ উপড়ে পড়ার কারণে সৃষ্টি হওয়া গর্তগুলো দীর্ঘদিন ধরে মেরামত না হওয়াতে চলাচলে মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ।
সরেজমিনে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, পরিষদের কয়েকটি স্থানে দীর্ঘদিন ধরে উপড়ে পড়া গাছগুলো পড়ে আছে। বৃষ্টিতে ভিজে আর রোদে শুকিয়ে গাছগুলো নষ্ট হলেও সেগুলো নিলাম হচ্ছে না শুধু মাত্র বন বিভাগ কর্তৃক সঠিক মূল্য নিধারণের কারণে। তাছাড়া পরিষদের বাম দিকে থাকা গাছ কর্তন করে সেস্থানে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে গ্রহন করা উপজেলা কমপ্লেক্স ভবনের সঙ্গে মিলনায়তন নির্মিত হওয়ার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না শুধু মাত্র বন বিভাগ কর্তৃক সঠিক মূল্য নিধারণের কারণে।
অন্যদিকে, উপজেলা আইন-শৃংখলা কিংবা সম্বন্বয় সভায় একাধিকবার উপড়ে পড়া গাছগুলো বিধি মোতাবেক নিলাম করার দাবী ও সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হলেও শুধুমাত্র বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদাসিনতার কারণে তা কার্যক্রর হচ্ছে না।
এদিকে সড়কগুলোর পার্শ্বে হেলা পড়া অনেক গাছের কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দূর্ঘটনার শিকার হতে হচ্ছে উপজেলাবাসীকে।
উপজেলা পরিবহন শ্রমিক ঐক্য জোটের যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, উপজেলা সদরের টিএনটি রোডসহ বিশ্বনাথের বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গাছ উপড়ে পড়ে নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে যান চলাচল। সাথে সাথে প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হলে গাছগুলো থেকে সরকার যেমন রাজস্ব পেতেন, তেমনি উপড়ে পড়া গাছের কারণে সড়কেও কোন প্রকার সমস্যা সৃষ্টি হতো না।
ব্যবসায়ী মঈন উদ্দিন বলেন, বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন সড়কে মাঝে মধ্যেই হঠাৎ পুরাণো গাছের ডাল ভেঙ্গে সড়কে পড়ে। এতে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর সড়কের পার্শ্বে থাকা পুরাণো গাছগুলোর ডালপালা কর্তন করা হলে কিংবা করেই পুরাণো গাছগুলো কর্তন করে নতুন করে গাছ রোপন করা হলে মানুষের ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যেতো।
উপজেলার জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান বলেন, বিদ্যালয়ের মধ্যখানে থাকা প্রায় শত বছরের পুরনো গাছটি বিধি মোতাবেক কর্তন করার অনুমতির জন্য প্রায় দেড়/দুই বছর পূর্বে আবেদন করে ছিলাম। কিন্তু আজও অনুমতি পাইনি। গাছটি বিদ্যালয়ের মধ্যখানে থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলাও করতে পারেনা। তাছাড়া হঠাৎ করেই গাছের ডালপালা ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে। সেজন্য সর্বদা আমাদেরকে একটি অজানা আতংকের মধ্যে থাকতে হয়।
বিশ্বনাথে পুলিশের অভিযানে পলাতক ১১ আসামি গ্রেফতার
বিশ্বনাথ :: বিশ্বনাথ থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে পলাতক ১১ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গত বুধবার রাতে ও আজ বৃহস্পতিবার সকালে পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-উপজেলার বৈরাগীগাঁও গ্রামের মৃত নজারত খানের ছেলে গুলচন খান, গুলচন খানের ছেলে দুলাল খান, আলাল খান, হেলাল খান, একই গ্রামের মৃত নজারত খানের ছেলে হুছন খান, হুছন খানের ছেলে আবদুল খান, উপজেলার সাঙ্গারাই গ্রামের আবদুল হাসিমের ছেলে মোঃ জামাল, একই গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে শাহিন মিয়া, মেয়ে জুসনা বেগম, উপজেলার শেখেরগাঁও গ্রামের মাহমদ আলীর ছেলে কবির মিয়া, ছত্রিশ গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে কাবিল উদ্দিন।
পুলিশ জানায়, বিশ্বনাথ থানার এসআই মিজানুর রহমান, এএসআই সাইফুর রহমানের নেতৃত্বে পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে ওয়ারেন্ডভুক্ত পলাতক ১১ আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক মামলা রয়েছে। আর এসব মামলায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেন।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, গ্রেপ্তারকৃত পলাতক ১১ আসামিকে (২১ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিশ্বনাথে ওরসের নামে অশ্লীল কার্যকলাপের প্রতিবাদে মানববন্ধন
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দশপাইকা গ্রামে নুরাই শাহ মাজারে ওরসের নামে গান-বাজনা-মদ-গাঁজা-নারীদের নিয়ে অশ্লীল কার্যকলাপ বন্ধের প্রতিবাদে মিছিল-মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। (২১ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলা সর্বস্থরের মুসলিম জনতার ব্যানারে উপজেলা সদরের বাসিয়া সেতুর ওপর এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে বাসিয়া সেতুর ওপর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে উপজেলা পরিষদ মাঠে গিয়ে শেষে হয়। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করা হয়।
উপজেলা আল-ইসলাহ সভাপতি মাওলানা তালুকদার ফয়জুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও আশিকুর রহমান সাঈদ এবং ইমরান আহমদের পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান।
বক্তব্য দেন উপাধ্যক্ষ মাওলানা আখতার আলী, মুহাদিস মাওলানা নূরুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ মাওলানা লুৎফুর রহমান, শিক্ষক মাওলানা আবদুল মতিন, মাওলানা সাদিক সিরাজী, উপজেলা তালামীযের সভাপতি আবদুল মুক্তাদির ফয়ছল, জমিয়তের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান বিন ফাহিম, লতিফিয়া ইমাম সমিতির সভাপতি এম এ সুয়েব। কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা সাদিকুর রহমান সিরাজী ও দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা নাজিম উদ্দিন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ইসলাম উদ্দিন লতিফি, মাওলানা লুৎফুর রহমান, আবু ইউসুফ, ওলিউর রহমান, আবু সুফিয়ান, ইসলাম উদ্দিন, অ¦দুল কাদির, খায়রুজ্জামান, মাহবুবুল ইসলাম আঙ্গুর, ফারুক আহমদ প্রমুখ।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারকলিপিতে উল্লেখ রয়েছে, উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দশপাইকা গ্রামের নুরাই শাহ (রহ:) মাজারকে কেন্দ্রে করে দশপাইকা গ্রামে কিছু উগ্রপন্থি লোকজন মিয়ে প্রতি বছর গান-বাজনা-মদ-গাঁজা ও জোয়ার আসর বসিয়ে নারীদের নিয়ে সারা রাত অশ্লীলতায় মেতে উঠে। অথচ তার পাশে রয়েছে দশপাইকা আলিম মাদরাসা, জামে মসজিদ, আবাসিক হাফিজিয়া মাদরাসা, স্কুল-কলেজসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। (আজ) বৃহস্পতিবার পবিত্র ওরস মোবারকের নামে গান-বাজনা-মদ-গাঁজা-নারীদের নিয়ে অশ্লীল কার্যকলাপ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা:) মাসে এ ধরনের অনুষ্ঠান ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা কোনো কিছুতে মেনে নেবে না। এটাকে কেন্দ্রে করে এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা ক্ষোদ্ধ হয়ে আছেন। যেকোনো সময় গঠে যেতে পারে রক্তক্ষীয় সংঘর্ষ। ওরসের নামে এসব অশ্লীল কার্যকলাপ বন্ধের দাবি জানান।
বিশ্বনাথের হিরণ যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ অবস্থা সংকটাপন্ন
বিশ্বনাথ :: যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বিশ্বনাথের প্রবাসী হিরণ আলী (৪০)। মঙ্গলবার রাতে (১৯ নভেম্বর) পূর্ব লন্ডনের বাংলাদেশী অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের নেলসন স্ট্রিটে নিজ ঘরের সমানে তিনি এই হামলার শিকার হন। এসময় তার মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
হিরণ আলী সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বৈদ্যকাপন (উজান মসলা) গ্রামের মরহুম ইরপান আলী পুত্র। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্বপরিবারে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন।
হিরণ মিয়ার চাচাত ভাই ও বিশ্বনাথ প্রবাসী এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের সাধারণ সম্পাদক মো. মিছবাহ উদ্দিন জানান, সন্তানদের জন্য খাবার আনতে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় (যুক্তরাজ্য সময়) হিরণ আলী ঘর থেকে বের হলে দুর্বৃত্তরা তার মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। মারাত্মক আহত অবস্থায় হিরণ মিয়ার রয়েল লন্ডন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি সংকটাপন্ন অবস্থায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মাথায় গুলি লাগায় ইতিমধ্যে তার ব্রেইন ডেমেইজ হয়ে গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। হিরণ মিয়ার সুস্থতা কামনা করে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন মিসবাহ উদ্দিন।