মঙ্গলবার ● ২৬ নভেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সবচেয়ে খাটো শিক্ষার্থী বিশ্বনাথের ফাতেমা
সবচেয়ে খাটো শিক্ষার্থী বিশ্বনাথের ফাতেমা
ষ্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার সবচেয়ে খর্বকায় (খাটো) ৯ম শ্রেনী পড়ুয়া শিক্ষার্থী ফাতেমা হোসেন। ১৭ বছর বয়সেও তাঁর উচ্চতা মাত্র ৩৮ইঞ্চি ও ওজন ১১কেজি ৮০০ গ্রাম। ফাতেমা উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের আলাপুর গ্রামের মৃত হোসেন আলী ও সাহেনা বেগম দম্পতির জ্যেষ্ঠ কন্যা এবং স্থানীয় জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। পড়ালেখা করে ভবিষ্যতে বড় চাকুরীজিবী হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে মেধাবী ছাত্রী ফাতেমার। উপজেলার ফাতেমা হোসেনের বয়সি ৩৮ইঞ্চি উচ্চতা ও ১১ কেজি ৮০০ গ্রাম ওজনের আর কোন শিক্ষার্থী সন্ধান না পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে উপজেলায় সবচেয়ে খর্বকায় (খাটো) শিক্ষার্থীই ফাতেমা হোসেন।
ফাতেমার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ৮ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন ফাতেমা হোসেন। জন্মের পর থেকে চার বছর বয়স পর্যন্ত তার শরীরের গড়ন স্বাভাবিক বৃদ্ধি পাচ্ছিল। চার বছর পর হঠাৎ করে তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমতে থাকে। তখন তাকে নিয়ে সিলেট শহরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তার পরিবার। চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শের ভিত্তিতে ফাতেমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে দীর্ঘদিন চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তখন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসক জানান ফাতেমার শরীরে বর্ন হরমোন না থাকায় তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। তাই তার ৮বছর বয়সের মধ্যে ভারত থেকে বর্ন হরমোন এনে প্রতি মাসে একবার করে টানা ৪বছর শরীরে প্রয়োগ করতে হবে। তাতে ফাতেমার শরীর স্বাভাবিক বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বর্ন হরমোন প্রয়োগের ফলে স্বাভাবিক বৃদ্ধি কমে যাওয়ার আশঙ্কার কথাও জানান চিকিৎসক। এনিয়ে এবং চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় দ্বিধাদ্বন্ধে পড়েন পরিবারের লোকজন। তখন আর ফাতেমার শরীরে হরমোন প্রয়োগ করা হয়ে ওঠেনি তাদের। তার বেড়ে ওঠার আর কোনো আশা নেই। তবে তা নিয়ে কোনো রাগ-দুঃখ-অভিমান নেই ১৭বছর বয়সী এই তরুণীর।
ফাতেমা হোসেন জানান, স্থানীয় জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীতে তিনি অধ্যয়নরত রয়েছেন। ২০১৭ সালে তার পিতা হোসেন আলী আরব আমিরাতে হঠাৎ করে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর থেকে মা সাহেনা বেগম, ছোট ভাই হাফেজ জাহির হোসেন (১৩) ও ছোট বোন ফাবিহা হোসেন মাইসা (২)’কে নিয়ে নিজ গ্রামেই অবস্থিত মামার বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। তাকে সকলেই আদর করেন। তিনি জীবনটাকে হাসিখুশিভাবে কাটাতেই ভালোবাসেন। সে পড়ালেখা করে ভবিষ্যতে বড় চাকুরীজিবী হওয়ার স্বপ্ন দেখছে।
এব্যাপারে জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ফখরুল ইসলাম বলেন, ফাতেমা হোসেন বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী। সে একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক তাকে লেখা-পড়ার জন্য সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
ভাঙ্গা ব্রীজের ওপর সাঁকো দিয়ে পারাপার
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তবলপুর গ্রামের বয়ে যাওয়া উজানভাটি খালের পূর্বে মুখে ভাঙা ব্রীজের সাঁকো। এ প্রশ্ন এখন ওই এলাকায় বসবাসরত সবার। দীর্ঘ দিন আগে ভেঙে যাওয়া এ ব্রীজটি পুনর্নিমাণ না করায় এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক গ্রামের মানুষ। বিকল্প পথ না থাকায় ভাঙা ব্রীজের ওপর বাঁশের সাঁকো বানিয়ে শিক্ষার্থীসহ কয়েক শ’ মানুষকে এই পথে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার ছৈফাগঞ্জ বাজারে আসা-যাওয়া মানুষ, মাদরাসা-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ এলাকার সর্বস্তরের মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।স্থানীয়রা জানান, প্রায় ছয় বছর আগে উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তবলপুর সংলগ্ন উজানভাটি খালের পূর্বে মুখে দীর্ঘ দিনের পুরনো একটি ব্রীজ ভেঙে যায়। ব্রীজটি ভেঙে যাওয়ার কারণে কয়েক গ্রামের কয়েক শত মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। ইউনিয়নের বাওয়ান পুর, তবলপুর, নুরপুর মুছেধরপুর,কায়স্থ গ্রামসহ আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষ ওই ব্রীজে দিয়ে চলাচল করে আসছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানো হলেও ব্রীজ মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই এলাকাবাসী এ ব্রীজের ওপর একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। এছাড়া অঞ্চলের মানুষ কৃষিনির্ভর হওয়ায় উৎপাদিত সবজি নিয়ে ভাঙা ব্রীজের ওপর দিয়ে পার হতে ভোগান্তি শিকার হতে হচ্ছে। বর্তমানে ওই ব্রীজের ওপর স্থানীয়রা বাঁশ সাঁকো তৈরি করে জীবন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই নানা দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটছে। যে কোন সময় আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছেন।এব্যাপারে তবলপুর গ্রামের ময়নুল ইসলাম বলেন, ব্রীজটি যখন নির্মিত হয়েছিল, তখন সঠিকভাবে নির্মাণ হয়নি। যার ফলে ব্রীজটি প্রায় ছয় বছর আগে ভেঙে যায়। এরপর থেকে আমরা বাঁশের সাঁকো দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারপার করে আসছি। ছৈফাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাজনা বেগম বলেন, আমরা নারী মানুষ এমনিতেই বাঁশের সাঁকো অথবা নৌকা পারাপার ভয় পাই, কি আর করব, জীবন জীবিকার তাগিদে চাকুরী করি, এরই জন্য ঝুঁকি নিয়ে ভয়কে দূরে ফেলে ওই ব্রীজের সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতে হয়।
তিনি আরো বলেন, মুছেধরপুর, তবলপুর, বাওয়ানপুর গ্রামের শিক্ষার্থীরা সুরমা নদীর উত্তর দিকে বহু পথ অতিক্রম করে বিদ্যালয়ে পৌঁছতে হয়। ব্রীজটি মেরামত না হওয়ায় এলাকার শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
খাজাঞ্চী ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, এ ব্রীজের বিষয়টি আমি স্থানীয় এমপি মহোদয়কে অবহিত করেছি। খুবই শিগগিরই ব্রীজের মেরামতের কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে মাদক ব্যবসায়ী ইন্তাজ আলী গ্রেফতার
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে শেষ রক্ষা হয়নি মাদক সম্রাট ইন্তাজ আলীর। তার চ্যালেঞ্জ ছিল টাকার ভাগ বাটোয়ারা যখন দিচ্ছি তখন কে ধরবে আমাকে? তাই সে প্রকাশ্যে ইয়াবা-গাঁজার ব্যাগ নিয়ে চলাফেরা করত। বিশ্বাস ছিল কেউ তাকে ধরবেনা। কিন্তু তার মন্দ কপাল। অবশেষে র্যাবের জালে আটকা পড়লেন সেই সম্রাট। ইন্তাজ আলী নাকি একটি মসজিদের মোতাওয়াল্লি বটে। তার দাড়ি দেখলে কেউ বিশ্বাস করবেনা যে, সে একজন মাদক ব্যবসায়ি? একে একে এই এলাকার মাদক সশ্রাটদের গ্রেফতার করলে বিশ্বনাথবাসি র্যাব সহ আইন শৃংখলা বাহিনীকে স্যালুট জানাবে। ইন্তাজ আলী উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের চকরামপ্রসাদ গ্রামের মৃত ইছাক আলী ছেলে। গতকাল রবিবার বিকেলে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয় র্যাব-৯ এর একটি দল ইন্তাজ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দেড় কেজি গাজাসহ তাকে গ্রেফতার করে। ধৃত ইন্তাজ আলী র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র্যাব তাকে দৌড়াইয়ে হাতে নাতে গাঁজা সহ গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ৩৬ (১) এর ১৯ (ক) ধারা মতে থানা পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করে, (মামলা নং-২০) তারিখ ২৪/১১/২০১৯ইং। আজ থানা পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাটিয়েছে। র্যাব ইন্তাজ আলীকে থানায় হস্থান্তর করার পর এসআই গোপেশ চন্দ্র দাস বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। ইন্তাজ আলী একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর হাতে ১০ থেকে ১২ বার প্রেফতার হয়েছে। রাজনৈতিক দু’একজন পাতিনেতার সহযোগীতায় সে বড় বড় ইয়াবা ও গাঁজার চালান এনে বিভিন্ন উপজেলার পাইকারি বিক্রি করে বলে স্থানীয় জনসাধারণের অভিযোগ। কিন্তু মাত্র কয়েক দিনে সংবাদের সত্যতা প্রমান করলেন র্যাব কর্মকর্তারা।
বিশ্বনাথে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে ক্ষোব্ধ অভিভাবকরা
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ইলামেরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ভূমিদাতা ও অভিভাবক সদস্যদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। কমিটির নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলেও তারা কেউ জানে না। ফরম বিতরণের শেষ দিনে অফিস কক্ষে তালা দিয়ে প্রধান শিক্ষক উধাও হয়ে যান। তাই স্কুল থেকে ফরম নিতে যাওয়া লোকজন অপেক্ষা করে ক্ষোব্ধ হয়ে ওঠেন। কোন অভিভাবককে না জানিয়ে প্রধান শিক্ষক নিজের পছন্দের লোক নিয়ে স্কুলের ওই নির্বাচন অনেকটা ঘোপনে করার পায়তারা করছেন বলে এমন অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ভূমিদাতা ও অভিভাবক সদস্যরা। স্কুলের সহকারি শিক্ষকদের সাথেও তার কোন মনমিল নেই বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও নির্বাচনী রহস্যজনকভাবে ভোটার তালিকায় মৃত ব্যক্তির নামও অন্তরভুক্ত করা হয়েছে।
জানাযায়, বর্তমানে অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে ওই স্কুল পরিচালনা করা হচ্ছে। তাই গত ২১নভেম্বর বৃহস্পতিবার প্রধান শিক্ষক নিজের পছন্দের লোকজন নিয়ে আগামি ১০ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। আর ওই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহিরা ২৪, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন বলে তারিখ নির্ধারণ করা হয়। ফরম বাচাই ২৭নভেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৮নভেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার ফরম সংগ্রহ ও জমা দেয়ার শেষ দিন হলেও প্রধান শিক্ষক তার অফিস কক্ষে তালা দিয়ে চলে যান বিশ^নাথ উপজেলা সদরে। কিন্তু স্কুলের এই নির্বাচন অথবা ফরম বিতরণের খবর জানেন না ভোটার ও অভিভাকরা। হঠাৎ করে সোমবার রাতে স্কুলের নির্বাচনের ফরম বিতরণ ও তফসিল ঘোষণার কথা জনাতে পারেন সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জালাল উদ্দিন, ভূমি দাতা আলী হোসেন, আইয়ব আলী, অভিভাবক সদস্য ইসলাম উদ্দিন, শেখ আজিজ মিয়া, মখলিছ আলী, সাজ্জাদ আলীম ইউনুস আলী, আছাব আলী ও সঞ্জব আলী। এমন খবরে ফরম সংগ্রহ করতে গতকাল মঙ্গলবার তারা স্কুলে গিয়ে দেখতে পান প্রধান শিক্ষক তার অফিস কক্ষে তালা দিয়ে উধাও রয়েছেন। তাদের উপস্থিতি জানতে পেরে দুপুর ২টায় প্রধান শিক্ষক স্কুলে গিয়ে ক্ষোব্ধ অভিভাবকদের সম্মুখিন হন। ফরম পুরণ ও জমা দেয়ার সময় কমে আসলে অনেকটা ছাপে পড়ে নিজের স্কুলের শিক্ষক দিয়ে তাদের ফরম পুরণ করান প্রধান শিক্ষক। তবে ওই নির্বাচন বাতিলের দাবি জানান উপস্থিত প্রতিষ্টাতা সদস্য, ভূমিদাতা ও অভিভাবক সদস্যরা।
এব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক নিরেন্দ্র চন্দ্র দাস তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, তিনি ইউএনও খবর দিলে উপজেলা সদরে যান।
মোবাইল ফোনে জানতে ইউএনও বর্ণালী পাল জানান তিনি একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন।