বৃহস্পতিবার ● ৫ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে দোকানের দুই বস্তা পেঁয়াজ চুরি
বিশ্বনাথে দোকানের দুই বস্তা পেঁয়াজ চুরি
ষ্টাফ রিপোর্টার :: বিশ্বনাথে দুই বস্তা পেঁয়াজসহ দোকানঘরের মালামাল চুরি সংগঠিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলা সদরের পুরান বাজারস্থ মের্সাস আল-জয়নাল এন্ড ব্রাদার্স নামের দোকানে এ চুরির ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার মালামাল চুরের দল নিয়ে যায়। খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছে।
জানাগেছে, প্রতিদিনের ন্যায় গত বুধবার রাতে দোকানঘর বন্ধ করে দোকান মালিক নিজ বাসায় চলে যান। আজ বৃহস্পতিবার ভোরবেলায় দোকান মালিক জানতে পারেন তার দোকান ঘর চুরি সংগঠিত হয়েছে। খবর পেয়ে তিনি দোকানে ছুটে আসেন। এসময় দোকানে এসে তিনি দেখতে পান দোকানের তিনটি সাটারের তালা ভাঙ্গা ও মালামাল এলোমেলো অবস্থায় পড়ে আছে। দোকানে থাকা পেঁয়াজ-দুধ-তৈলসহ বেশকিছু মালামাল নেই। দোকানের সামনে থাকা সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করা হয়। ধারনা করা হচ্ছে রাতের কোনো এক সময় চুরেরদল দোকানের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
এব্যাপারে দোকান মালিক পুরান বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আহমদ মিয়া বলেন, বুধবার রাত ১২টায় দোকানঘর বন্ধ করে বাসায় চলে যাই। আজ বৃহস্পতিবার ভোর বেলায় খবর পাই দোকানঘর চুরি হয়েছে। দোকানে এসে দেখতে পাই দোকানে থাকা দুই বস্তা পেঁয়াজ-দুধ-তৈলসহ বেশ কিছু মালামাল নেই। তবে দোকানে অদূরে দুই কাটুন দুধ পাওয়া যায়। এতে প্রায় ৪ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ দোকান ঘর পরির্দশন করেছে। তবে অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিশ্বনাথে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতি, আহত-১
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের বাহাড়া দুবাগ গ্রামে ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বুধবার গভীর রাতে উপজেলার বাহাড়া দুবাগ গ্রামের আবদুল খালিকের বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে ডাকাতদলের হামলায় গৃহকর্তা আবদুল খালিক আহত হয়েছেন। এসময় ডাকাতদল ঘরে থাকা স্বর্ণালংকার, নগদ, টাকা ও মোবাইল সেটসহ আসবাবপত্র লুঠ করে নিয়ে যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শাহিন তালুকদার।
গৃহকর্তা আবদুল খালিকের বাতিজা হাসান মিয়া জানান, বুধবার রাত আনুমানিক ৩টার দিকে মুখোশধারী ৮জনের ডাকাতদল চাচার বসতঘরে গেইটের তালা ও ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। এসময় ডাকাতদল পরিবারের সকল সদস্যদের বেধে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এসময় চাচা আবদুল খালিকের কাছে এক ডাকাত ঘরের আলমিরার চাবি চাইলে তিনি তা দিতে রাজি না হওয়ায় ডাকাতদল তার ওপর হামলা করে। এতে তিনি আহত হন। এসময় ডাকাতদল জোরপূর্বক আলমিরার চাবি নিয়ে ঘরে থাকা আলমিরা থেকে ১০ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৩৩ হাজার টাকা ও ২টি স্মার্ট মোবাইল ফোনসহ কয়েক লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুঠ করে নিয়ে যায়।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে খোঁজ নিয়ে দেখতেছি।
ফটো সাংবাদিক শফিকের ঘর নির্মাণের সাহায্যের তহবিল
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথের অত্যন্ত নম্র ভদ্র ও অমায়িক ব্যবহারের অধিকারি সবার প্রিয় ফটো সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম সফিক। তিনি উপজেলার পুরানগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। উপজেলার যেখানেই সরকারি কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে হাজির ফটো সাংবাদিক শফিক। তাঁর ক্যামেরায় বন্ধি অনুষ্ঠানের ছবি। এভাবেই তিনি প্রতিদিন ঘুরে বেড়ান উপজেলার প্রত্যান্ত অঞ্চল। সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিজ ফেসবুকে আইডিতে তার বসতঘর নির্মাণের জন্য একটি পোষ্ট করেন। শফিকের সেই লেখা দেখে কালের কণ্ঠ শুভসংঘ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উদ্যোগ নেন তাঁর ঘর নির্মাণের জন্য কিছু করার। ফটো সাংবাদিক শফিকুর ইসলাম সফিকের ঘর নির্মাণের জন্য কালের কণ্ঠ শুভসংঘ বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। বুধবার শুভসংঘের নেতৃবৃন্দ শফিকুর ইসলাম সফিকের ঘর নির্মাণের জন্য সভার আয়োজন করেন।শুভসংঘের সহ-সভাপতি মাস্টার আমিরুল হক সরকারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল বাতিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন শুভসংঘের প্রধান উপদেষ্ঠা মোহাম্মদ আলী শিপন, উপদেষ্ঠা ফজল খান, শামছুল ইসলাম মুমিন, কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহমদ আলী হিরন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পারভেজ হক মোহন, সদস্য আনোয়ার আলী, সংগঠক মিজাজুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ফুলকাছ মিয়া প্রমুখ।
সভায় এলাকার প্রবাসী, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও বৃত্তবানদের আর্থিক সহযোতিা নিয়ে ফটো সাংবাদিক শফিকের বসতঘর নির্মাণের জন্য সিন্ধান্ত গৃহিত হয়। ঘর নির্মাণের ব্যয় প্রায় ৫ লাখ টাকা হবে। সভায় তাৎক্ষণিকভাবে শুভসংঘের সদস্যদের কাছে থেকে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা তুলে একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। এলাকার সর্বস্তরের জনগণ আর্থিক এবং বিভিন্নভাবে সহযোগিতা প্রদান করার আহবান করা হয়।
ফটো সাংবাদিক শফিকের ঘর নির্মাণের জন্য সাহায্যে অর্থ বা অনুদান পাঠাতে চাইলে শুভসংঘের উপদেষ্ঠা শিপন আহমদ অ্যাকাউন্ট নম্বর ১৩১.১০১.৫৯৭৮২ ব্যাংক ডাচ বাংলা বিশ্বনাথ শাখা, সিলেট। বিকাশ নম্বর ০১৭১২-০৫১৩৫৫ (পার্সোনাল) শুভসংঘের অর্থ সম্পাদক মো. আবুল কাশেমের বিকাশ নম্বর ০১৭১২-৪০৩৭১৬ (পার্সোনাল)। যারা অর্থ পাঠাবেন তাদের নাম ও টাকার হিসেব বিশ্বনাথের অনলাইন পোর্টাল ডেইলি বিশ্বনাথ ডটকম ও দৈনিক কালের কণ্ঠ শুভসংঘের পাতায় প্রতি সপ্তাহ শনিবার প্রকাশিত হবে।
বিশ্বনাথে জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে পিতাকে হত্যার অভিযোগ
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে পিতাকে হত্যা করার অভিযোগে সৎ মাকে প্রধান অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেছে কন্যা। উপজেলা অলংকারী ইউনিয়নের বড়তলা গ্রামের বাসিন্দা ও জোরপূর্বক খাওয়ানো বিষক্রিয়ায় মৃত্যুবরণকারী মুক্তার মিয়ার কন্যা রেজিয়া বেগম (২২) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলা নং ২ (তাং ২.১২.১৯ইং)।
সৎ মা জিয়াছমিন বেগম (৩৫)’কে প্রধান অভিযুক্ত করে নিহতের কন্যা রেজিয়া বেগমের মামলার অভিযুক্তরা হলেন- অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও বাদীনির ফুফু (রাজনা)’র অবৈধ প্রেমিক সাইদুর রহমান (৪৬), বাদীর চাচা সেবুল মিয়া (৩৫) ও ফুফু রাজনা বেগম হেলন (৩২)। বাদী তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, বাদীনিসহ তারা ৭ ভাই-বোন, মা-বাবা, চাচা-ফুফু, দাদা-দাদীসহ সবাই একই বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। ২০১৮ সালে বাদীনির মা মারা গেলে যাওয়ার পর ২০১৯ সালের প্রথম দিকে মামলার প্রধান অভিযুক্ত জিয়াছমিন বেগমের সাথে ২য় বারের মতো বিবাহ আবদ্ধ হন তার (বাদীনি) পিতা মুক্তার মিয়া। পিতার দ্বিতীয় বিয়ের পূর্ব থেকে বাদীনির ফুফু রাজনা বেগম হেলনের সাথে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার সাইদুর রহমানের অবৈধ সম্পর্ক চলে আসছিলো। আর পিতার ২য় বিয়ের পর বাদীনির সৎ মা জিয়াছমিন বেগমের সাথে চাচা সেবুল মিয়ার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই ৪ জনের অবৈধ মিলামেশায় বাদীনি ও তার মৃত পিতা মুক্তার মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বাঁধা-নিষেধ দিয়ে আসছিলেন। অবৈধ কাজে বাঁধা-নিষেধ দেওয়ার জের ধরে তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ নিরসনের জন্য একাধিক বার গ্রাম পঞ্চায়েতের সালিশ-বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব কারণে বাদীনি ও তার পিতার উপর অভিযুক্তরা চরম ক্ষিপ্ত ছিল। যার জের ধরে মাস খানের পূর্বে অভিযুক্ত সেবুল মিয়া বাদীনির পিতা মুক্তার মিয়াকে মারার জন্য দা হাতে নেয় ও প্রধান অভিযুক্ত জিয়াসমিন বেগম তার (মুক্তার) গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্ঠা করে। পরবর্তিতে এবিষয়টি নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সালিশ-বিচার অনুষ্ঠিত হয়। এরপর অভিযুক্ত চারজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে একে অপরের সহযোগীতায় নিজের অপকর্ম চালিয়ে যেতে থাকে। আর বাড়ির অভিভাবক হিসেবে মুক্তার আলীর এতে বাঁধা দিলে অভিযুক্তদের সাথে তার (মুক্তার) শত্রুতা সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ নভেম্বর রাতে অভিযুক্ত সেবুল-রাজনার বসত ঘরের সামনে অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে জোরপূর্বক বাদীনির পিতা মুক্তার আলীকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে বিষ খাওয়ায়। যা বাদীনি নিজ চোখে দেখেছেন। বাদিনীর এগিয়ে যাওয়া দেখে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় মুক্তার আলীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ঘটনার ৫/৬দিন পূর্বে বাদীনি ও ১-২নং স্বাক্ষীকে বাদীনির পিতা ‘আমাকে তারা বাঁচতে দিবেনা। তারা যে কোন সময় আমাকে মেরে ফেলবে’ বলে ছিলেন বলে লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে মামলা সূত্রে জানা গেছে।
এব্যাপারে মামলার অভিযুক্ত অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাইদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্ঠা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।