শনিবার ● ২১ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় কুয়াশায় তিনদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি
গাইবান্ধায় কুয়াশায় তিনদিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা জেলার সর্বত্র এক সপ্তাহ থেকেই হঠাৎ করেই তীব্র কুয়াশা পড়তে শুরু করে। গত তিনদিন থেকে শনিবার পর্যন্ত সারাদিন কোথাও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে গোটা গাইবান্ধা জেলা। সেইসাথে হিমেল হাওয়া বইতে থাকে। হঠাৎ করে শীত শুরু হওয়ায় মানুষ চরম বিপাকে পড়ে। রাতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত ঝড়েছে কুয়াশা। ফলে সকাল ১১টা ১০ মিনিটে পদ্মরাগ ট্রেন হেডলাইট জ্বালিয়ে গাইবান্ধা রেল স্টেশনে প্রবেশ করে। এছাড়া সড়কে হেড জ্বালিয়ে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে।
হঠাৎ শুরু হওয়া এই শীতে জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রিত এবং চরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভোগের কবলে পড়ে। শীতে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা এতে কষ্ট পাচ্ছে বেশি। হঠাৎ করে শৈত্য প্রবাহ শুরু হওয়ায় শিশু ও বয়স্কদের সর্দি, কাশি, কোল্ড ডায়রিয়া, শ্বাস কষ্ট, হাপানিসহ নানা রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে শহরের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে এখন মানুষের উপচে পড়া ভীড়। এই সুযোগে গাউন মার্কেট ও গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ব্যবসায়িরা কাপড়ের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। ফলে অর্থাভাবে দরিদ্র মানুষদের পক্ষে শীতের কাপড় সংগ্রহ করা খুব কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে। হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লেপ তোষক বানানোরও হিড়িক পড়েছে।
ঘন কুয়াশার কারণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনাসহ অন্য নদ-নদীতে নৌ চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। ফলে মূল ভূমির সাথে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। রাতে ঘন কুয়াশার কারণে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঘন কুয়াশার কারণে অনেকে দিনের বেলায় গাড়ির হেড লাইড জ্বালিয়ে চলাচল করছে। ফলে চরাঞ্চলের মানুষরা যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম বিপাকে পড়ে। ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকায় সরিষা গাছের ফুল ঝড়ে পড়তে শুরু করেছে।
সন্ত্রাসী চক্রের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের নাশকতা ও পুলিশ হত্যা মামলার আসামি জামায়াত-শিবির সমর্থক সন্ত্রাসী চক্রের হোতা সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের প্রতাপ গ্রামের মৃত মফিজল হকের ছেলে মো. রতন মিয়াসহ তার সন্ত্রাসী চক্রের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে নলডাঙ্গাবাসি। শনিবার গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী চক্রের মো. প্রিন্স মিয়া, মো. চন্দন মিয়া, মো. নয়ন মিয়ার ছেলে তূর্য মিয়া, খামার দশলিয়া গ্রামের মৃত গোলজার রহমানের ছেলে মো. জোব্বার ও জয়নাল আবেদীনকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
নলডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, খামার দশলিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী কৃষক লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নুর আলম নান্টু সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ১৪ ডিসেম্বর শনিবার বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মিটিং করতে গেলে উক্ত সন্ত্রাসীরা তাকে ভূয়া ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আখ্যায়িত করে নানাভাবে উত্যক্ত করে এবং তার সাথে অশালিন আচরণ করে। এব্যাপারে সে প্রতিবাদ করলে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং গালিগালাজ করতে থাকে। এর জের দরে গত ১৫ ডিসেম্বর রোববার তার বসতবাড়িতে হামলা চালায় এবং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার পাইপ দিয়ে বেদম মারপিট করে এবং তার পকেটে থেকে সাড়ে ৮৮ হাজার টাকা ছিনতাই করে নেয়। এসময় তার ছেলে আরিফুল আলম সীমান্তকেও বেদম মারপিট করা হয়। এব্যাপারে সাদুল্যাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আসামিকে গ্রেফতার না করায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নান্টু মিয়া ও তার পরিবার-পরিজনদেরকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এতে নান্টু মিয়া ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আগামী ইউপি নির্বাচনে তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে তার ভাবমুর্তি নষ্ট করতে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার, হয়রানি ও তাকে হত্যা করাও অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মো. চান মিয়া জানান, তরিকুল ইসলাম নয়ন মিয়া আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ইউপি নির্বাচন করায় তাকে নলডাঙ্গা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিস্কার করা হয়। পরে দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নয়ন মিয়া তার সন্ত্রাসী চক্র তাকেও মারপিট করে এবং নানা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়। তিনি আরও বলেন, শুধু নলডাঙ্গার সাধারণ মানুষ নয়, এই সন্ত্রাসী চক্রের অত্যাচারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তিনি অবিলম্বে তাদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুল মোত্তালিব।