রবিবার ● ২২ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে পূন: খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন
ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে পূন: খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন
গাইবান্ধা :: পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে নদী খননের নামে শ্যালো মেশিন দিয়ে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে দায় সাড়া নদী পূন: খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও রংপুরের মিঠাপুকুরের মধ্যবর্তী সিমানা দিয়ে বয়ে চলা ঘাঘট নদী এভাবেই খনন করছে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। দরপত্রে ড্রেজার ব্যবহারের কথা থাকলেও তার কোন ব্যবহার নেই খনন কাজে। ফলে নদীর উপর নির্মিত চরকাবাড়ি ব্রীজ, এলজিইডির সড়ক ও আশেপাশের গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ ও রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মধ্যবর্তী সিমানা দিয়ে প্রবাহমান ঘাঘট নদীর চরকাবাড়ি ব্রীজের উজানে ও ভাটিতে ২ হাজার মিটার পূন: খনন কাজ শুরু করেছে রংপুর পাউবো। প্রায় ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে মো. ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামক চট্টগ্রামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দরপত্র অনুযায়ী ড্রেজার ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা না মেনেই শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে খনন করছে প্রতিষ্ঠানটি। নকশা অনুযায়ী নদীর দু’ধারে ১৫ মিটার পাড় নির্মাণ, ৩০ মিটার করে স্লোভ নির্মাণ ও ২০ মিটার নদীর তলদেশ খনন করা হবে। তবে প্রকল্পটিতে ড্রেজিং কাজের জন্য ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন কাজ বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হলেও তা করা হচ্ছে না। শ্যালো মেশিন দিয়ে ভূ-গর্ভস্থ অবৈধ বালু উত্তোলনের কাজ করা হচ্ছে। এমনকি আধা কিলোমিটারের মধ্যে ৬টি শ্যালো মেশিন লাগিয়ে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করে দায় সারা নদী খনন কাজ করছে পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। আর খনন করা পলিমাটি ও বালু গুলো ফেলা হচ্ছে নদীর কাছেই। বর্ষা মৌসুম আসলে এসব মাটি বৃষ্টির ঢলে আবারো নদী নেমে গিয়ে ভরাট হবে। এতে একদিকে যেমন সরকারের কোটি টাকা নদীর পানিতে ভেসে যাবে, অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আশেপাশের ফসলি জমি, ব্রীজ, রাস্তা-ঘাট ও পার্শ্ববর্তী গ্রাম। নদী নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বলছে, শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করলে তা হবে অপরিকল্পিত নদী খনন। যা নদীর নাব্যতা ফেরার পরিবর্তে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। ফলে চারপাশ থেকে বালুর স্তর ভেঙ্গে এসে তলদেশ ভরাট হয়ে যাবে। এমনকি বন্যার সময় নদীর ¯্রােত বেঁেক গিয়ে অন্যদিকে ভাঙন সৃষ্টি করতে পারে বলেও ধারণা তাদের। বিপর্যয় রোধে প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগ করে নদীর পূন:খনন কাজ বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসি।
নদী বাচাঁও দেশ বাচাঁও আন্দোলনের আহ্বায়ক সাদেকুল ইসলাম দুলাল বলেন, নদী পূন: খনন কাজে সরকারি যে নির্দেশনা দেয়া আছে তা মানতে হবে। অন্যথায় শ্যালো মেশিন দিয়ে নদী ড্রেজিং কাজ করলে তা পরবর্তীতে ক্ষতির কারণ হবে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তবিবুর রহমান বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য হলে নদী খনন করা তা ড্রেজার হোক বা শ্যালো মেশিন। ড্রেজার ব্যবহার না করে শ্যালো মেশিন ব্যবহার করা নিয়ম বর্হিভুত কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘাঘট নদীতে ড্রেজার মেশিন প্রবেশ করার কোন উপায় না থাকায় শ্যালো মেশিন দিয়েই খনন কাজ করা হচ্ছে।
গাইবান্ধায় তীব্র কুয়াশায় নৌ চলাচল বন্ধ
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা জেলার সর্বত্র এক সপ্তাহ থেকেই হঠাৎ করেই তীব্র কুয়াশা পড়তে শুরু করে। গাইবান্ধায় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত কুয়াশা পড়ছে। গত চারদিন থেকে রোববার পর্যন্ত সারাদিন কোথাও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে গোটা গাইবান্ধা জেলা। সেইসাথে হিমেল হাওয়া বইতে থাকে। হঠাৎ করে শীত শুরু হওয়ায় মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। রাতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মত ঝড়েছে কুয়াশা। এছাড়া সড়কে হেড জ্বালিয়ে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে।
এদিকে শহরের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে এখন মানুষের উপচে পড়া ভীড়। এই সুযোগে গাউন মার্কেট ও গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ব্যবসায়িরা কাপড়ের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়িয়েছে। ফলে অর্থাভাবে দরিদ্র মানুষদের পক্ষে শীতের কাপড় সংগ্রহ করা খুব কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে। হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লেপ তোষক বানানোরও হিড়িক পড়েছে।
ঘন কুয়াশার কারণে ব্রহ্মপুত্র-যমুনাসহ অন্য নদ-নদীতে নৌ চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। ফলে মূল ভূমির সাথে চরাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। তদুপরি রাতে ঘন কুয়াশার কারণে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে অনেকে দিনের বেলায় গাড়ির হেড লাইড জ্বালিয়ে চলাচল করছে। ফলে চরাঞ্চলের মানুষরা যাতায়াতের ক্ষেত্রে চরম বিপাকে পড়ে। ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকায় সরিষা গাছের ফুল ঝড়ে পড়তে শুরু করেছে।