শনিবার ● ২৮ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তিতে পুনর্মিলনী
নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তিতে পুনর্মিলনী
রাউজান :: চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পূর্নমিলনী ও বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আজ শনিবার ২৮ ডিসেম্বর বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি ও পুনর্মিলনী উদযাপন পরিষদের ব্যানারে প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েক হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করার সময় যারা এক সাথে ছিলেন তারা তাদের খুঁজে বের করে সে সময়কার স্মৃতি রোমন্থনে মেতে ওঠেন।
শনিবার সকালে নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি চৌধুরী হাট হয়ে নোয়াপাড়ার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় নানা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে নানান সাজে সেজে প্রায় হাজারেরও অধিক বর্তমান, নবীন ও প্রবীণ শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এর আগে বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষনা করেন নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সভাপতি নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. দিদারুল আলম।
প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, কলামিস্ট ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ড. মো. মাসুম চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মা ও শিশু হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ কামাল হোসেন (জুয়েল), একুশে পদকপ্রাপ্ত কবিয়াল ফণি বড়ুয়ার সন্তান কবি ও লেখক অধ্যাপক ডাঃ পরিতোষ বড়ুয়া, নোয়াপাড়া মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ্ জামাল, নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মিসেস টিংকু চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ডাঃ দিদারুল আলম ।
এসময় নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এ.জে.এম বদিউল আলম ভূঁইয়াসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও সরকারী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
১৯১৯ সালে প্রাচীন এই বিদ্যাপিঠ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই বছর ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠটি একশতে পা দিয়েছে। ১৯১৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ব্যাচের প্রাক্তন এবং বর্তমানে অধ্যায়ণরত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। এখানে যোগ দেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কলেজ শিক্ষক, স্কুল শিক্ষক, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, ব্যাংকার ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অনেকেই কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া যারা চাকরি না করে গৃহিণী হয়েছেন তারাও এই প্রাণের মেলায় যোগ দিয়েছেন।
নোয়াপাড়া মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক এ.জে.এম বদিউল আলম ভূঁইয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, একশ বছরের নবীন প্রবীণ যারা আছেন তারা সকলে আজ এক সাথে মিলিত হয়েছি। তাই আমাদের মধ্যে একটা আনন্দের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে যা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। আমরা আর হয়ত একশ বছর পাব না। তবে আগামী একশ বছর যারা এখানে পড়বে তাদের জানাই স্বাগতম ও শুভেচ্ছা। পুরানো অনেক বন্ধুরা শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে এক সঙ্গে মিলিত হয়েছে। অনুষ্ঠানের মাঠ প্রাঙ্গনে এমন এক পরিবারের দাদু ছেলে নাতি উপস্থিত ছিলেন যারা তিন পুরুষ এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আজকের অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছে কেককাটা, স্মৃতিচারণ, সম্মাননা প্রদান, আলোচনা সভা ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আলোকবর্তিকা নামে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হয়। আলোকবর্তিকা ম্যাগাজিনটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি ড. মো. মাসুম চৌধুরী।
সকাল ১০ টায় বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে শুরু হওয়া শতবর্ষ পূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানটি দুপুর ২ টায় কেক কাটার মাধ্যমে শেষ হয়।