সোমবার ● ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে ত্রিপুরা ষ্টুডেন্ট ফোরামের ২৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত
রাঙামাটিতে ত্রিপুরা ষ্টুডেন্ট ফোরামের ২৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত
রাঙামাটি :: আওয়ামীলীগ সরকার জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের কল্যাণে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন বলে আজ পাহাড়ের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে বলে মন্তব্য করেছে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা। তিনি বলেন, চুক্তির পূর্ববর্তী ও পরবর্তি পরিস্থিতি অবলোকন করলে দেখা যাবে বর্তমানে পাহাড়ের মানুষ সার্বিক দিক দিয়ে স্বস্তি ও শান্তিতে রয়েছে। তিনি চুক্তির বাকী ধারাগুলো বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আজ সোমবার ৩০ডিসেম্বর সকালে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ইন্সটিটিউিটে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ত্রিপুরা ষ্টুডেন্ট ফোরামের ২৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রেম কুমার ত্রিপুরা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরী, পরিষদ সদস্য ও রাঙামাটি ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক প্রভাংশু ত্রিপুরা, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রীতি কান্তি ত্রিপুরা, রাঙামাটি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক দিনময় রোয়াজা, রাঙামাটি ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের উপদেষ্টা সাগরিকা রোয়াজা, ত্রিপুরা কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ঝিনুক ত্রিপুরা ও ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের সাবেক সভাপতি সুরেশ মোহন ত্রিপুরা।
অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে শিক্ষিত জাতি ও মেধাবী জনগোষ্ঠীর বিকল্প নেই। তাই পার্বত্য এলাকায় শিক্ষিত জাতি গঠনে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার বছরের প্রথম দিনে বিনামূল্যে বই বিতরণ, শিক্ষাবৃত্তি’সহ শিক্ষিত জাতি গঠনে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহন ও বাস্তবায়ন করছে। আমাদের পার্বত্য এলাকার শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে নৃ-গোষ্ঠীদের নিজস্ব বর্ণমালায় পাঠ্য বই বিতরণ করছে । যাতে করে সমতলের ন্যয় এখানকার ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়। সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সুযোগগুলোকে কাজে লাগিয়ে আমাদের উন্নত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে শিক্ষিত জাতি ও মেধাবী জনগোষ্ঠী গড়তে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান চেয়ারম্যান।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টায় ত্রিপুরা ষ্টুডেন্ট ফোরামের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শহরে বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
র্যালিটি রাঙামাটি সরকারী কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিটিউট প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়ে জাতীয় সঙ্গীতের সুরে সুরে জাতীয় পতাকা ও পরে সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর ফেস্টুন ও শান্তির পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভ উদ্বোধন করেন অতিথিরা। আলোচনাসভা শেষে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মাননা ক্রেষ্ট প্রদান করা হয় এবং স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
রাঙামাটিতে সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা বলেছেন, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার ভর্তুকি দিয়ে কৃষককে সার, বীজ ও কৃষি যন্ত্রপাতি দিচ্ছে। স্বল্পসুদে ও সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। বাজার ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করেছে।
আজ সোমবার ৩০ ডিসেম্বর সকালে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প (৩য় পর্যায়) সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা কৃষক মাঠ স্কুল বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্ট্রেনদেনিং ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট ইন সিএইচটি (এসআইডি-সিএইচটি)-ইউএনডিপি’র বাস্তবায়নে এবং ড্যানিডা’র অর্থায়নে জেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা।
এ সময় কর্মশালায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সাধন মনি চাকমা, পরিষদের সদস্য সান্তনা চাকমা, বিলাইছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরত্তোম তংচঙ্গ্যা, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দূর্গেশ্বর চাকমা, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা’সহ বিভিন্ন উপজেলার কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের জেলা কর্মকর্তা সুকিরন চাকমা।
কর্মশালায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, পার্বত্য জেলার সাধারণ জনগনের শান্তি ও উন্নয়নের কথা চিন্তা করে আওয়ামীলীগ সরকার ১৯৯৭সালে পার্বত্য চুক্তি করেছিল। যার সুফল এখনো পার্বত্যবাসী ভোগ করছে। তিনি বলেন, পার্বত্য জেলায় সরকারের পাশাপাশি ইউএনডিপি’র বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে পশ্চাদপদ গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। যার ফলে এখন এ জেলার গবাদি পশু, মৎস্য, ফল ফলাদি নিজ জেলার আমিষ ও পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলায়ও রপ্তানি হচ্ছে। যা পূর্বে কখনো হয়নি। জেলার উন্নয়নের গতি অব্যাহৃত রাখতে তিনি ইউএনডিপি’র কার্যক্রমে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা এ জেলার ভৌগলিক পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিকরনে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন।