বুধবার ● ১৫ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » নবীগঞ্জে দুপক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অনুময় দাশের মৃত্যু
নবীগঞ্জে দুপক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অনুময় দাশের মৃত্যু
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের মুক্তাহার গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুরুতর আহত অনুময় দাশ ঘটনার ৯৫ দিন পর অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। গতকাল বুধবার সকালে নিজ বাড়িতে মৃত্যু বরণ করে অনুময় দাশ। এর আগে গত ১২ জানুয়ারী ঢাকা পিজি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে বাড়ি নিয়ে আসা হয় তাকে। তার মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। পাশাপাশি নিহতের আত্মীয় স্বজনদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ উপজেলার করগাওঁ ইউপির মুক্তাহার এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিগত ১০ অক্টোবর ২০১৯ ইং সকালে মুক্তাহার স্কুল মাঠে দু’পক্ষের লোকের মাঝে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে। এতে উভয় পক্ষে অনুময় দাশসহ অর্ধ শতাধিক লোক আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। উভয় পক্ষের আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অনুময় দাশসহ প্রায় ১০ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে আহত অনুময় দাশ (৩০) এর অবস্থা খারাপ হলে আশংখ্যা জনক অবস্থায় তাকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে প্রেরন করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে গত ১২ জানুয়ারী অনুময় দাশকে নিজ বাড়ি মুক্তাহার গ্রামে নিয়ে আসা হয়। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টায় অনুময় দাশ মৃত্যু বরণ করে। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ মুক্তাহার গ্রামে গিয়ে মৃতদেহের ছুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিবাদমান দু’গ্রুপের মধ্যে এক গ্রুপে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউপি আওয়ামীলীগ সেক্রেটারী শৈলেন চন্দ্র দাশ, অপর গ্রুপে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাত্রলীগ নেতা রত্মদীপ দাশ রাজু। নিহত অনুময় দাশ শৈলেন দাশের পক্ষের লোক এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা অনন্ত দাশের ছোট ভাই। এ ব্যাপারে হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নিহতের পরিবার। এদিকে গ্রামবাসী অনুময় দাশের হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন। নিহতের পরিবার জানান, সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষ রত্মদীপ দাশ রাজু, শংকর দাশসহ তারা দলবল নিয়ে নিহত অনুময় দাশ অনুপ এর উপর উপযর্পুরি হামলা চালায় এবং এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকে। তাদের ওই আঘাতেই দীর্ঘ ৩ মাস ৫ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে অনুময় দাশ। তারা অনুময় দাশের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করছেন।
নবীগঞ্জ যুবউন্নয়ন অফিসের কম্পিউটার অপারেটর এর মাতার পরলোকগমন
নবীগঞ্জ :: নবীগঞ্জ উপজেলা যুবউন্নয়ন অফিসের কম্পিউটার অপারেটর পানু লাল চন্দের মাতা সুরবালা চন্দ(৯০) আর নেই। তিনি আজ বুধবার সকাল ১১ টার সময় উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের নিজবাড়ীতে বার্ধক্যজনিত কারনে পরলোক গমন করেন। ঐদিন বিকালে সুজাপুর সার্বজনীন শ্মশানঘাটে তার অন্তোষ্টিক্রিয়া অনুষ্টিত হয়। মৃত্যকালে তিনি ৪ পুত্র,৩ কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে গেছেন। তার মৃত্যুর খবর শোনে শেষবারের মত একনজর তাকে দেখার জন্য বাড়ীতে বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ ভীড় জমান। পানু লাল চন্দের মাতার মৃত্যতে নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সাইফুল জাহার চৌধুরী,উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নারায়ন রায়,সাধারন সম্পাদক সাংবাদিক উত্তম কুমার পাল হিমেলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নের্তৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
সাংবাদিক মুন্নাকে প্রাণনাশের হুমকি
নবীগঞ্জ :: বাংলা টিভির নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার বার্তা সম্পাদক মতিউর রহমান মুন্নাকে চিঠি মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ বুধবার সকালে দৈনিক হবিগঞ্জ সময়ের কার্যালয়ে হুমকি সংক্রান্ত একটি চিঠি পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সাংবাদিক মতিউর রহমান মুন্না বুধবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রী করেছেন। সাধারণ ডায়রী নং- ৮৪৬।
জানা যায়, সাংবাদিক পেশায় জড়িত হওয়ার পর থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অসাধু ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করে আসছেন সাংবাদিক মতিউর রহমান মুন্না। এর আগেও তাকে বিভিন্নভাবে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল দুর্বৃত্তরা। থানায় জিডিও রয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় কে বা কারা সাংবাদিক মুন্নার কর্মস্থল দৈনিক হবিগঞ্জ সময় পত্রিকার অফিসে তার নামে একটি চিঠি রেখে যায়। বুধবার সকালে দৈনিক হবিগঞ্জ সময়ের কার্যালয়ে হুমকি সংক্রান্ত এই চিঠি পাওয়া যায়। সাংবাদিক মুন্না বিকেল অনুমান ৫ টার দিকে অফিসে এসে চিঠিটি খুলে দেখেন চিঠিতে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে।
হুমকি দেয়া চিঠিতে লেখা ছিল- ‘সাংবাদিক মতিউর রহমান মুন্নাকে একটি কথা বলতে চাই, তোর ভালোর জন্য বলছি সাংবাদিকতা ছেড়ে দে, সাংবাদিকতা না ছাড়লে তুই বেশি দিন বাচঁতে পারবিনা, তুই কার বিরুদ্ধে লেখালেখি করিছ বুঝতে পারিছ নি। তোর থেকে অনেক বড় বড় সাংবাদিকরা মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করছে। তুইতো হইলে চুনোপুটি। এখনো সময় আছে আমার পিছনে আর লাগবিনা। আমার বিরুদ্ধে পত্রিকায় লেখালেখি করে কিছুই করতে পারছনি, পুলিশ কি আমায় বা আমার কিছু ছিড়তে পারছে? শুন টাকা থাকলে পুলিশদের মত বড় বড় অফিসারদের কেনা যায়। এখনো সময় আছে আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি বন্ধ কর। নয়তোবা তোর অবস্থাও সাংবাদিক জুনাইদের মতো হবে। তোর হাত পা কেটে টুকরো টুকরো করে বস্তা বন্দি করে পাহাড়ে রেখে আসবো। তোর পরিবারের সদস্যদের কথা মাথায় রাখিস। উপরের কথাগুলো মাথায় রাখবি এবং এই চিঠি যদি থানায় দেখাস তে তোর বড় ধরনের ক্ষতি হবে। যা ভাবতেও পারবিনা। ইতি তোর আজরাইল’ এছাড়াও অশ্লিল ভাষায় বিভিন্ন গালিও লেখা ছিল চিঠিতে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নবীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়রী করেছেন।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক মতিউর রহমান মুন্না বলেন, অজ্ঞাতনামা লোকের এই হুমকিতে আমি ও আমার পরিবার পরিজ্বন জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। তদন্ত পূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন মুন্না।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘সাংবাদিক মতিউর রহমান মুন্নাকে হুমকি দিয়ে একটি চিঠি দিয়েছে অজ্ঞত ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।’