রবিবার ● ২ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » ঢাকা » গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে আওয়ামী সরকার উচ্ছেদের আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছে বাম জোট
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে আওয়ামী সরকার উচ্ছেদের আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছে বাম জোট
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন ও কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জ্মান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক আজ ২ ফেব্রুয়ারি রবিবার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটারদের অনুপস্থিতি বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থা সম্পর্কে জনগণের গণহতাশা ও গণঅনাস্থার বহিঃপ্রকাশ। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচন মানুষকে ভোটের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকার পরিবর্তন সম্ভব সে বিষয়ে নিরুৎসাহিত করে তুলেছে। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায় নি। জনগণের ভোটকেন্দ্র বিমুখিনতার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ, তাদের ১৪ দলীয় জোট ও নির্বাচন কমিশন। এরা নির্বাচনকে তামাশায় পরিণত করেছে।
নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে আরও বলেন, বাম গণতান্ত্রিক জোট ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বলেছিল বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। জাতি আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে মধ্য রাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেছিল। সে নির্বাচনে ৮০% এর বেশি ভোট পড়েছে বলে দেখানো হয়েছিল। এরপর থেকে উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা, জাতীয় সংসদের উপনির্বাচন যতগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে তার সবগুলোতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার ভোটকেন্দ্রে অনুপস্থিত ছিল। নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচন কমিশন তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে আওয়ামী সরকারের নির্লজ্জ তাবেদারি করে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সরকারের পছন্দ অনুযায়ী সাজানোর কাজ করেছে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে এ অথর্ব নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের মধ্যে ভয়-ভীতি সঞ্চার করায় অধিকাংশ মানুষ ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট প্রদান করতে নিরুৎসাহিত হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, অধিকাংশ কেন্দ্রে ভয়ের পরিবেশ এবং সরকারি দলের দখলদারিত্ব সৃষ্টি করে জনমনে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছিল, যাতে জনগণ ভোট কেন্দ্রে আসতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে। ভোট কেন্দ্রের চতুর্দিকে অবাঞ্ছিত ব্যক্তিবর্গ ও সরকার দলীয় লোকজনের উপস্থিতিও মানুষকে ভোট বিমুখ করে তোলে। এজন্যও মানুষ ভয়ে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হয়নি। বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের নিশ্চিত ভোটার ছাড়া অন্যদের তাড়িয়ে দেয় সরকার দলীয় সমর্থকরা। এমনকি ভোট কেন্দ্রের গোপন কক্ষে ঢুকে, ভোটারদের ভোটটিও দিতে না দিয়ে, সরকার দলীয় কর্মীরা নিজেরাই সে ভোট দেওয়ার কাজটিও সম্পন্ন করে। এধরনের অসংখ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভোট প্রদানে ‘গোপনীয়তা’ বলে কোন কিছু রক্ষা করা হয়নি। অধিকাংশ কেন্দ্রে সরকার দলীয় পোলিং এজেন্ট ছাড়া অন্যদের ঠাঁই হয়নি। ইভিএম’র স্বচ্ছতা নিয়ে জনমনে যে অবিশ্বাস জন্ম নিয়েছে তা এ নির্বাচনে আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে পাওয়া নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের অপসারণ ছাড়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। নেতৃবৃন্দ নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচনের দাবিতে গণআন্দোলন ও গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।