বৃহস্পতিবার ● ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতি
গাইবান্ধায় মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতি
গাইবান্ধা :: দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে গোবিন্দগঞ্জের শোলাগাড়ী ঈদগাহ আলিম মাদ্রাসা। অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির কারণে এ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি তার ্ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। শিক্ষার মান ও শুন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।
ইতিপূর্বে নানা দুর্নীতির কারণে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনার পর তদন্তে তার প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ধীর গতিতে প্রশাসনিক পদক্ষেপের কারণে অধ্যক্ষ তার অপকর্ম চালিয়েই যাচ্ছে। গত মাসে ঐ প্রতিষ্ঠানের এমপিও ভুক্ত হয়ে আরবী প্রভাষক পদে সাজ্জাদুর রহমান নামে একজনের নাম আসে। যা এলাকাবাসী সহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ ও আশ্চার্য হয়ে পড়েন। ছাত্র-ছাত্রী সহ এলাকাবাসী ও শিক্ষকবৃন্দও কোনদিন ওই শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানে দেখেননি। এমপিও ভুক্তি হওয়ার পর ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় যোগদানের পর সবার নজরে আসে। এলাকাবাসীর অভিযোগ অত্যত্ম গোপনে ও ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে অর্থের বিনিময়ে ওই শিক্ষককে বিধি বহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে ওই মাদ্রাসার আরবী বিভাগের প্রভাষক একেএম বদরুল হুদা ২০১৮ সালে অন্য একটি মাদ্রাসায় অধ্যক্ষপদে যোগ দেয়ায় পদটি শুন্য হয়। নিয়ম অনুযায়ী ওই পদে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক নিয়োগ দেয়ার কথা। কিন্তু অধ্যক্ষ ও সভাপতি বিপুল অংকের টাকা নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে গোপনে ২০১৫ সালের ভুয়া পেপার কাটিং দেখিয়ে ওই শিক্ষককে নিয়োগ দিয়েছে। যেহেতু বর্তমান নিয়মানুযায়ী ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক নিযোগ দেয়া সম্ভব নয় তাই দুর্নীতির মাধ্যমে সাজ্জাদুর রহমানের এমপিও ভুক্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নিয়ম মেনেই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পদ শুন্য হওয়ার প্রায় ৪ বছর আগে কিভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলো এমন প্রশ্ন করা হলে অধ্যক্ষ নিশ্চুপ থাকেন। হাজিরা খাতা সহ নিয়োগের কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, আজকে কোন কিছুই দেখাতে পারব না আগামী সপ্তাহে আসেন তখন দেখানো যাবে।
এদিকে অধ্যক্ষ মিনহাজের নানা দুর্নীতির খবর সমকালে প্রকাশিত হওয়ার পর মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড, ঢাকা থেকে তদন্ত দেয়া হয়। তদন্তে অধ্যক্ষের নানা দুর্নীতির প্রমান পাওয়ায় তার এমপিও বন্ধের সুপারিশ সহ কেন বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে ১৫ দিনের মধ্যে সুস্পষ্ট লিখিত জবাব দেয়ার জন্য নির্দেশ জারী করা হয়। বোর্ড কর্তৃক জারী করা ওই চিঠির স্মারক নং-বামশিবো/প্রশাসন/৩৩৩১৯১২১২৯৯১/গাইবান্ধা-৭০/১১৪৫/৪।
মিনহাজ্ব উদ্দিন ২০০৯ সালে প্রভাব খাটিয়ে সিনিয়রদের ডিঙ্গিয়ে একজন সহকারি শিক্ষক হয়েও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করে। পরবর্তীতে মাস্টার্সের ভূয়া সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে গোপনে ২০১২ সালের ৬ জানুয়ারী অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ নেয়। ভূয়া-কাগজপত্রের মাধ্যমে নিয়োগ নেয়ায় দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সহকারি শিক্ষক হিসেবেই এখনো তিনি বেতন উত্তোলন করছেন। এলাকাবাসী সহ অভিভাবক মহল অধ্যক্ষের জালিয়াতির বিষয়গুলো তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অতি জরুরী বলে মনে করেন। তা নাহলে দুর্নীতি মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার মুখ থুবরে পড়বে।
উপ-নির্বাচন গাইবান্ধা-৩: আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন ৫ জন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ি-সাদুল্লাপুর) আসনের উপ-নির্বাচনে মোট ৫ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিনে গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আ’লীগের মনোনিত প্রার্থী উম্মে কুলছুম স্মৃতি, বিএনপির মনোনিত প্রার্থী ডা. মইনুল হাসান সাদিক, জাপার মনোনিত প্রার্থী মইনুর রাব্বী চৌধুরী ও জাতীয় পার্টির অঙ্গ সংগঠন যুব সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা মো. মঞ্জুরুল হক গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মো. মাহবুবুর রহমানের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। মঞ্জুরুল হক নিজেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের প্রার্থী এসএম খাদেমুল ইসলাম খুদি তার মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার মাহাবুবুর রহমান বলেন, আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি রবিবার মনোনয়নপত্র বাছাই, ২৯ ফেব্রুয়ারি শনিবার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষদিন এবং ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২১ মার্চ শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। সাদল্লাপুরে ১১টি, পলাশবাড়ি পৌরসভা ও পলাশবাড়ী উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৪ লাখ ১১ হাজার ৮৫৪ জন ভোটার রয়েছে।
২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর আ’লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকার মৃত্যুবরণ করায় নির্বাচন কমিশনার এ আসনটি শূন্য ঘোষণা করেন।