বৃহস্পতিবার ● ২৮ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » অপরাধ » বিশ্বনাথে মাদরাসা ছাত্র হত্যা কান্ড বলাত্কারের প্রতিবাদ করায় সালমানকে হত্যা
বিশ্বনাথে মাদরাসা ছাত্র হত্যা কান্ড বলাত্কারের প্রতিবাদ করায় সালমানকে হত্যা
মোঃ আবুল কাশেম,বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে মাদসারা ছাত্র সালমান হত্যার দীর্ঘ প্রায় ২৮দিন পর মুখ খুলে পুলিশ৷ বুধবার দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকদের সালমান হত্যার বিভিন্ন কারণ তুলে ধরেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল হাই৷ শিক্ষক কর্তৃক বলাত্কারে বাঁধা দেয়ায় খুন করা হয়েছে উপজেলা সদরের জামেয়া ইসলামিয়া দারম্নল উলুম মাদানিয়া মাদরাসার ফজিলত ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী সালমান আহমদকে৷ এমন তথ্য দিয়েছেন ওসি৷ এছাড়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিবি্বর আহমদের সত্ ভাই ও নিহতের সহপাঠী মহসিন উদ্দিন নাঈম’র বাসা থেকে ব্যবহৃত জুতা উদ্ধার করেছে পুলিশ৷
থানার ওসি আবদুল হাই বলেন, নিহত মাদরাসা ছাত্র সালমানকে শিক্ষক বশির আহমদ কর্তৃক দুই বার বলাত্কারের স্বীকার হয়৷ এমন ভিডিও ফুটেজও রয়েছে৷ বলাত্কারের বিষয়টি প্রতিবাদ করায় সালমানকে হত্যা করা হতে পারে এমন ধারনা করা হয়েছে৷
ওসি বলেন, নিহত মাদরাসা ছাত্র সালমানকে দিয়ে স্থানীয় একটি ব্যাংক থেকে তিন লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়৷ ওই টাকা নাঈমের যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক ভাইয়ের৷ সালমান কে দিয়ে টাকা তোলার ব্যাংকের ক্লুজ সার্কিট ক্যামেরা ফুটেজও রয়েছে৷ এ টাকার তোলার কারণেও তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে৷ বলাত্কার ও টাকা তোলার কারনে সালমানকে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে৷ এ দুটি তথ্যের ভিত্তিত্বে পুলিশ এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করার চেষ্টা করছে৷ তবে খুবই শিগগিরই পুরো তথ্য বের হয়ে আসবে বলে তিনি জানান৷
তিনি আরও বলেন, সালমানের জুতা নাঈমের ঘরেই পাওয়া গেছে৷ এছাড়াও তদনত্মে আরো কিছু স্পর্শকাতর বিষয় ওঠে এসেছে৷ সঠিক সময়ে ঘটনার রহস্য বেরিয়ে আসবে৷
পুলিশ সূত্রে জানাযায়, নিহত মাদরাসা ছাত্র সালমানের সহপাঠী মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিবি্বর আহমদের ভাই মহসিন উদ্দিন নাঈমের বাসার সামনের রাসত্মা থেকে গত ৩০ ডিসেম্বর সালমানের লাশ উদ্ধার করে৷ পরে নাঈমের ঘরে তল্লাশি চালায় পুলিশ৷ এসময় সালমানের ব্যবহৃত জুতা পেয়ে হেফাজতে নেয়া হয়৷ নাঈম তার ঘরে একা থাকলেও ওই সময় বিছানায় পাওয়া যায় একের অধিক লোক থাকার আলামত৷ পাশে পড়ে থাকা কুশন বিহীন সোফাও রহস্যের জন্মদেয় পুলিশের মনে৷ নাঈমের মা পুলিশকে জানান কুশন চুরে নিয়ে গেছে৷ আলামতের ওপর ভিত্তি করে এ ঘরেই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ৷
বিশ্বনাথ থানার ওসি (তদনত্ম) মাসুদুর রহমান বলেন, হত্যার পরদিন উদ্ধার হওয়া জুতা সালমানের মা কুতুবি বেগম সনাক্ত করেছেন৷ ইতি মধ্যে ওই হত্যাকান্ডের বেশ কিছু তথ্য উদঘাটন করা হয়েছে৷ নিহত সালমান আহমদকে মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিবি্বর আহমদের ভগি্নপতি একই মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা বশির আহমদ বলাত্কার করেন৷ বলাত্কারের ঐ ভিডিও চিত্রটিও পুলিশের হাতে রয়েছে৷ পুলিশ ধারনা করছে বলাত্কারে বাঁধা দেয়ায় কারণেই খুন করা হয়েছে সালমানকে৷ এছাড়া আরো একাধিক কারণ রয়েছে বলেও ওসি সাংবাদিকদের জানান৷
তিনি বলেন, সালমান হত্যা মামলায় এখনও পর্যনত্ম মাদরাসা প্রিন্সিপালসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে৷ তবে গ্রেফতারকৃত নাঈম জামিনে বের হয়ে আসে বলে তিনি জানান৷
এব্যাপারে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা কামরম্নল ইসলাম ছমিরের সঙ্গে মুঠো ফোনে আলাপ হলে তিনি মাদরাসায় এসে এবিষয়ে বক্তব্য দিবেন বলে জানান৷
প্রসঙ্গত, সালমান আহমদ সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার পূর্বগাঁও গ্রামের বাকপ্রতিবন্দি ছোটন মিয়া ও কুতুবি বেগম দম্পত্তির সনত্মান৷ দীর্ঘদিন ধরে সে মাদরাসার বোডিং- থেকে লেখাপড়া করে আসছিল৷ ৩০ ডিসেম্বর সকালে উপজেলার নতুন বাজার এলাকার তফজ্জুল আলী কমপ্লেক্সে সামনে সালমান আহমদের লাশ পাওয়া যায়৷ পরদিন ৩১ ডিসেম্বর সালমানের মা বাদি হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন৷
আপলোড : ২৮ জানুয়ারী ২০১৬ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ১১.৫০মিঃ