শিরোনাম:
●   হাসিনার উসকানিতে জড়িয়ে পড়লে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে ●   ঈশ্বরগঞ্জে শেখ মুজিবের ম্যুরাল গুড়িয়ে দিলো ছাত্র-জনতা ●   মিরসরাইয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাংচুর ●   ৩২ নম্বর গুড়িয়ে দেয়াসহ দেশজুড়ে সৃষ্ট অরাজক পরিস্থিতির দায়দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকার এড়িয়ে যেতে পারেনা ●   ঈশ্বরগঞ্জে দন্ত চিকিৎসককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ●   মিরসরাইয়ের ভারতীয় ২৪ গরু আটক ●   এবার আমুর ঝালকাঠির বাসভবন ভাঙচুর ●   একুশে পদক পাচ্ছেন ১৪ বিশিষ্টজন ও নারী ফুটবল দল ●   ফটিকছড়িতে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল ছাত্রী নিহত ●   বেণুবন উত্তমানন্দ ধর্মবন বৌদ্ধ বিহারে সংঘদান ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত ●   চাঁদা না পেয়ে পাহাড়ে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করায় পিসিসিপি’র প্রতিবাদ ●   রাবিপ্রবিতে এপ্রোচ রোড ও ভূমি উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন ●   রাঙামাটিতে জুলাই গণহত্যার ভিডিও এবং ছবি প্রদর্শনী ●   রাবিপ্রবিতে শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫ শুরু ●   ৬ ফেব্রুয়ারী কবি শাওনের ৫৮ তম জন্মদিন ●   জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন জরুরি ●   রাউজানে বসতঘর ও মন্দিরে দুর্ধর্ষ চুরি ●   পাঁচখাইন শীলপাড়া একতা সংঘের ১০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ●   কাউখালীতে তৃতীয় লিঙ্গের শীলার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার ●   বাংলাদেশ সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী জেলা শাখার নিবার্চনে নির্বাচিতদের শুভেচ্ছা ●   ফটিকছড়িতে জনপ্রতিধিকে গ্রেফতার ●   হযরত মতিউর রহমান শাহ (রহঃ) এর বার্ষিক ওরশ শরীফ ●   ঝাউদিয়া থানা বাস্তবায়নের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ ●   কোথায় গেলো সেই দিনগুলি : মুহাম্মদ মাসুদ রানা ●   উল্টাছড়ি বাজার চালু করার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা ●   চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ঈশ্বরগঞ্জে বিক্ষোভ ●   নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি সালামের বিরোদ্ধে সাটিফিকেট জালিয়াতির অভিযোগ ●   রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ ●   উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিরাপদ খাদ্য অপরিহার্য ●   পার্বতীপুর জামায়াত যুব বিভাগের উদ্যোগে ফুটবল টুর্নামেন্ট
রাঙামাটি, শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বুধবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » পাবনা » স্বকীয়তা হারাচ্ছে চলনবিল এলাকার খাল বিল নদী নালা
প্রথম পাতা » পাবনা » স্বকীয়তা হারাচ্ছে চলনবিল এলাকার খাল বিল নদী নালা
বুধবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

স্বকীয়তা হারাচ্ছে চলনবিল এলাকার খাল বিল নদী নালা

---মো. নূরুল ইসলাম, পাবনা জেলা প্রতিনিধি :: বিল স্থির পানির জলাশয় হলেও এক সময় চলনবিলের মধ্য দিয়ে ধীর গতিতে পানি ভাটির দিকে প্রবাহিত হতো। কথিত আছে এ কারণেই এ বিলের নাম করণ করা হয় চলনবিল। বাংলাদেশের বৃহত বিল এটি। বৃহত এ বিল এখন মরা বিলে পরিণত হয়েছে। এ এলাকার নদ নদী খাল বিলগুলো ভূগছে নব্যতা সংকটে। ফলে সেচ কার্য ব্যহত হবার পাশাপাশি দেশী মৎস সম্পদ ও আজ বিলুপ্তির পথে। এর প্রভাব পরছে ব্যবসা বানিজ্যেও। দীর্ঘ দিন যাবত খনন কাজ না করায় চলনবিল এলাকার খাল বিল নদী নালা হারাচ্ছে স্বকীয়তা।
বোরো মৌসুমের আগে বাড়তি ফসল পাওয়ার জন্য অনেকে জমিতে ছিটিয়েছিলেন সরিষা বীজ। এখন সরিষা উত্তোলন করে বোরো ধানের চারা রোপন করছেন কৃষক। বিলের সাথে নদ নদীর সংযোগ খাল গুলো শুকিয়ে গেছে প্রায় মাস দুয়েক আগে। চলতি মৌসুমে ফাল্গুনের শুরুতেই অধিকাংশ নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে চলনবিল এলাকার প্রায় সকল নৌরুট। নদী খাল বিলে পানি না থাকায় এ এলাকার হাট বাজারে দেশী মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। জল পথে পণ্য পরিবহনে খরচ কম হলেও বর্তমান সময়ে এ এলাকার প্রায় সব জলপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অধিক খরচে ব্যবসায়ীদের স্থল পথে পণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে।
অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হামিদ রচিত চলনবিলের ইতিকথা গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, জলপাইগুড়ির পাহাড় থেকে উৎপন্ন হওয়া আত্রাই ও গুর নদী রাজশাহীতে এসে কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয়ে পরে। এর একটি শাখা কয়রাবাড়ি, নন্দনালী, ও আত্রাই হয়ে আত্রাই ঘাটের এক মাইল নিন্ম হতে “গুড়” নামে সিংড়া, একান্ন বিঘা,যোগেন্দ্রনগর ও কালাকান্দরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাঁচকৈড় ত্রীমোহনায় নন্দ কুজার সাথে মিশেছে। এদের মিলিত স্রোত গুমানী নামে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে নূরনগরে বড়াল নদীর সাথে মিশেছে। ১৭৮৭ সালে তিস্তার সাথে আত্রাই নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। জলপাইগুড়ির উত্তর পশ্চিম সীমান্ত থেকে দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ নিমগাছী তাড়াশ, চাটমোহরের হান্ডিয়াল হয়ে অষ্টমনিষার কাছে বড়াল নদীতে মিশেছে। ১৩০৪ সালে ভূমিকম্পে নদীটির কয়েক যায়গা মরে যায়। করতোয়ার নিন্মাংশ আত্রাই ও ফুলঝোড় নামে পরিচিত। বড়াল নদী পদ্মার চারঘাট মোহনা থেকে নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম হয়ে চাটমোহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নূরনগরে গুমানীর সাথে মিশে বড়াল নামেই ভাঙ্গুড়া ফরিদপুর বাঘাবাড়ি হয়ে হুরাসাগরের সাথে মিশে নাকালিয়া এলাকায় গিয়ে যমুনার সাথে মিশেছে। উনবিংশ শতাব্দীর দ্বীতীয়ার্ধের মাঝামাঝিতে ও নদীটি ¯্রােতস্বীনি থাকলেও একেবারে শেষের দিকে রাজশাহী থেকে নূরনগর পর্যন্ত নদীটির অনেক স্থানে ক্রস বাধ দেয়ায় এ নদীটি এখন মৃতাবস্থায় পরে আছে। এ নদী উদ্ধারে বড়াল রক্ষা কমিটি দীর্ঘদিন যাবত আন্দোল সংগ্রাম করে আসার ফলশ্রুতিতে চাটমোহর নতুন বাজার, বোঁথর ঘাট ও রামনগরের ঘাটের তিনটি ক্রসবাঁধ অপসারণ করা হলেও এখন ও পদ্মার সাথে যমুনার সংযোগ ঘটানো সম্ভব হয় নি এখনো। নূরনগর থেকে বাঘাবাড়ি পর্যন্ত বর্ষায় কিছুদিনের জন্য প্রাণ ফিরে পায় নদীটি। চেঁচুয়া নদী ধারাবারিষার দক্ষিণপাশ দিয়ে চতরার বিল, জোড়দহ, আফরার বিল, খলিশাগাড়ি বিল ও কিনু সরকারের ধর হয়ে চরসেনগ্রামের পশ্চিমে গুমানী নদীর সাথে মিশেছে। এ নদীটি ও অস্তিত্বহীন হয়ে পরেছে।
দক্ষিণ চলনবিলের বড়াইগ্রামের চিনাডাঙ্গা বিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাটমোহরের মূলগ্রাম ফৈলজানা হয়ে ফরিদপুরের ডেমরার কাছে চিকনাই নদী বড়াল নদীতে মিশেছে। ডেমরা এলাকায় স্লইজগেট থাকায় ফরিদপুর থেকে নদীটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বর্ষা মৌসুমে মাস চারেক এ নদীতে পানি থাকলেও বাকী ৮ মাস পানি শূণ্য থাকে নদীটি। এগুলো ছাড়া ও বানগঙ্গা, তুলশী নদী, ভাদাই নদী, মরা আত্রাই নদীর অবস্থা অত্যন্ত করুন।
এ নদীগুলো ছাড়াও নবীর হাজীর জোলা, হক সাহেবের খাল, নিয়ামত খাল, সাত্তার সাহেবের খাল, কিনুসরকারের ধর, পানাউল্লাহ খাল, নিমাইচড়া-বেশানী খাল, বেশানী-গুমানী খাল, উলিপুর-মাগুড়া খাল, দোবিলা খাল, কিশোরখালী খাল, বেহুলার খাড়ি, বাঁকাইখাড়ি, গাড়াবাড়ি-ছারুখালী খাল, জনিগাছার জোলা, খলিশাগাড়ি বিল, ধলাইর বিল, ছয়আনির বিল, বাঁইরার বিল, সাধুগাড়ী বিল, মহিষা হালটসহ চলনবিলাঞ্চলের অন্যান্য নদী, শাখানদী, খাল, বিল, খাড়ি এখন একেবারে শুকিয়ে গেছে।
নদী খাল বিল খাড়ি শুকিয়ে যাওয়ায় চলনবিলের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা যমুন নদী হয়ে ঢাকা থেকে যে সকল পণ্য নৌপথে আনতেন এখন তা পারছেন না। সড়ক পথে পণ্য পরিবহনে তাদের বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। ক্রেতারা ও বিভিন্ন হাট বাজার থেকে পণ্য কিনে নৌপথে বাড়িতে নিতে পারছেন না। জলাশয় গুলো শুকিয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পরেছে হাজার হাজার মৎস জীবি। পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন তারা। পূর্বে নদী থেকে কৃষক অগভীর নলকূপের সাহায্যে বোরো ক্ষেতে পানি সেচ দিতে পারলেও এখন তা পারছেন না। উপরন্ত পানির স্তর দ্রুত নীচে নেমে যাওয়ায় অগভীর পাম্প মালিকরা মৌসুমের শুরুতেই তাদের সেচ পাম্প সমতল থেকে অন্তত ১০ ফিট নিচে স্থাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। আত্রাই রিভার ড্রেজিং কাজ শুরু হলেও সেখানে অনিয়মের প্রশ্ন ওঠে শুরু থেকেই।
চাটমোহর অনার্স কলেজের ভূগোল বিষয়ের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পরিবেশ বিদ ডঃ এস এম মুক্তিমাহমুদ জানান, ভৌগলিক ভাবে এ এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো নদীর জীবন চক্রের শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ বার্ধক্য অবস্থায় পরিণত হয়েছে। লক্ষণীয় যে, চলনবিল এলাকার নদীর তলদেশের ঢালের পরিমান কম, নদীর প্রবাহমান পানির পরিমান কম, ¯্রােতের বেগ ও কম। উৎসস্থান থেকে নদীগুলোর দূরত্ব অধিক হওয়ায়, পানির সংগে প্রবাহিত মৃত্তিকা কনা বালুকনা, নূড়িকনা এবং অন্যান্য ময়লা আবর্জনার পরিমান বেশি ও নদীর তলদেশে তা সঞ্চয়নের পরিমান ও অধিক হওয়ায় ক্রমশই নদী উপত্যকার পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসছে। ফলে বন্যার সময় ব্যাপক বন্যা এবং শুষ্ক মৌসুমে একেবারেই শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের খাদ্য শৃঙ্খল ব্যহত হচ্ছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপন ও ফসল উৎপাদনসহ পানি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকল কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। ফলে বিপর্যয় ঘটছে সার্বিক পরিবেশের।
চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটি ও বড়াল নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমান বলেন, নদ নদী খাল বিল চলনবিলের প্রাণ। দখল দূষণের ফলে স্বকীয়তা হারাচ্ছে চলনবিল এলাকার নদ নদী খাল বিলগুলো। এগুলো রক্ষা করতে না পারলে চলনবিল তার স্বকীয়তা হারাবেই। আমরা দীর্ঘদিন যাবত এ এলাকার নদ নদী রক্ষায় আন্দোলন করে আসছি। দ্রুত নদ নদী গুলো খনন করা হলে ঐতিহ্য বাহী চলনবিল প্রাণ ফিরে পাবে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)