শিরোনাম:
●   জাগ্রত প্রতিভার কার্যকরী পরিষদের দায়িত্ব হস্তান্তর ●   কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে তরুণ নেতৃত্ব বিকাশ বিষয়ক প্রশিক্ষণ সমাপ্ত ●   ঈশ্বরগঞ্জে ৪০ বছর পর শ্মশানের জায়গা বুঝিয়ে দিল প্রশাসন ●   নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার সহ আত্মসাৎকারী নিউটন গ্রেফতার ●   কক্সবাজার টু সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচলের অনুমতি ●   চুয়েটে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট এন্ড ফাইনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট শীর্ষক কর্মশালা ●   খাগড়াছড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির অভিষেক অনুষ্ঠান ●   বাড়ির কাছেই মিলছে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ ●   খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন ●   মাটিরাঙ্গায় ট্রাক্টর উল্টে চালক নিহত ●   অদম্য সেরাদের সেরা আইডল অন্বেষণ-২০২৪ শুরু ●   ঘোড়াঘাটে যৌথ বাহিনীর অভিযান অস্ত্রসহ যুবক আটক ●   রাঙমাটি জেলা পরিষদে থেকে আওয়ামীপন্থী সদস্যদের নিয়োগ বাতিল করার দাবীতে মানববন্ধন ●   ঈশান তালুকদার মহামুনি বৌদ্ধ বিহারে গুরু আচারিয পূজা ও সংঘদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন ●   নবীগঞ্জে মোবাইল চুরির হিড়িক ●   বাংলাদেশ রেলওয়ে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিক কারখানায় জনবল সংকট ●   সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যু বার্ষিকীতে মানুষের ঢল ●   মিরসরাইয়ে শান্তিনীড় বৃত্তি পেলো ১১৫ জন শিক্ষার্থী ●   বাংলাদেশের সকল সম্প্রদায়ের সাথে আমাদের সংযোগ বাড়াতে চাই : পার্বত্য উপদেষ্টা ●   বিনা প্রয়োজনে রেললাইন স্টেশন স্থাপনে অর্থ লুটপাট : রেল উপদেষ্টা ●   ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা নির্বাচন কমিশনের পবিত্র দায়িত্ব ●   গাজীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিংয়ে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ●   ঘোড়াঘাটে কারাবরণকৃত নেতাকর্মীদের সাথে বিএনপির মতবিনিময় ●   নবীগঞ্জে পরোয়ানাভুক্ত আসামি গ্রেফতার ●   নতুন নির্বাচন কমিশন নাসির উদ্দীন ●   আত্রাইয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত ●   ঈশ্বরগঞ্জে দন্ত চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় গুরুতর অসুস্থ রোগী ●   যমুনা রেলওয়ে সেতুর দ্বার উন্মোচন হতে যাচ্ছে : নির্মাণে ৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় ●   ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে পুলিশ পরিদর্শক শামছুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা ●   মিরসরাইয়ে বিশ্ব শিশু দিবস উদযাপন
রাঙামাটি, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
বুধবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » পাবনা » স্বকীয়তা হারাচ্ছে চলনবিল এলাকার খাল বিল নদী নালা
প্রথম পাতা » পাবনা » স্বকীয়তা হারাচ্ছে চলনবিল এলাকার খাল বিল নদী নালা
বুধবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

স্বকীয়তা হারাচ্ছে চলনবিল এলাকার খাল বিল নদী নালা

---মো. নূরুল ইসলাম, পাবনা জেলা প্রতিনিধি :: বিল স্থির পানির জলাশয় হলেও এক সময় চলনবিলের মধ্য দিয়ে ধীর গতিতে পানি ভাটির দিকে প্রবাহিত হতো। কথিত আছে এ কারণেই এ বিলের নাম করণ করা হয় চলনবিল। বাংলাদেশের বৃহত বিল এটি। বৃহত এ বিল এখন মরা বিলে পরিণত হয়েছে। এ এলাকার নদ নদী খাল বিলগুলো ভূগছে নব্যতা সংকটে। ফলে সেচ কার্য ব্যহত হবার পাশাপাশি দেশী মৎস সম্পদ ও আজ বিলুপ্তির পথে। এর প্রভাব পরছে ব্যবসা বানিজ্যেও। দীর্ঘ দিন যাবত খনন কাজ না করায় চলনবিল এলাকার খাল বিল নদী নালা হারাচ্ছে স্বকীয়তা।
বোরো মৌসুমের আগে বাড়তি ফসল পাওয়ার জন্য অনেকে জমিতে ছিটিয়েছিলেন সরিষা বীজ। এখন সরিষা উত্তোলন করে বোরো ধানের চারা রোপন করছেন কৃষক। বিলের সাথে নদ নদীর সংযোগ খাল গুলো শুকিয়ে গেছে প্রায় মাস দুয়েক আগে। চলতি মৌসুমে ফাল্গুনের শুরুতেই অধিকাংশ নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে চলনবিল এলাকার প্রায় সকল নৌরুট। নদী খাল বিলে পানি না থাকায় এ এলাকার হাট বাজারে দেশী মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। জল পথে পণ্য পরিবহনে খরচ কম হলেও বর্তমান সময়ে এ এলাকার প্রায় সব জলপথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অধিক খরচে ব্যবসায়ীদের স্থল পথে পণ্য পরিবহন করতে হচ্ছে।
অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল হামিদ রচিত চলনবিলের ইতিকথা গ্রন্থ সূত্রে জানা যায়, জলপাইগুড়ির পাহাড় থেকে উৎপন্ন হওয়া আত্রাই ও গুর নদী রাজশাহীতে এসে কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয়ে পরে। এর একটি শাখা কয়রাবাড়ি, নন্দনালী, ও আত্রাই হয়ে আত্রাই ঘাটের এক মাইল নিন্ম হতে “গুড়” নামে সিংড়া, একান্ন বিঘা,যোগেন্দ্রনগর ও কালাকান্দরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাঁচকৈড় ত্রীমোহনায় নন্দ কুজার সাথে মিশেছে। এদের মিলিত স্রোত গুমানী নামে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে নূরনগরে বড়াল নদীর সাথে মিশেছে। ১৭৮৭ সালে তিস্তার সাথে আত্রাই নদীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরে। জলপাইগুড়ির উত্তর পশ্চিম সীমান্ত থেকে দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ নিমগাছী তাড়াশ, চাটমোহরের হান্ডিয়াল হয়ে অষ্টমনিষার কাছে বড়াল নদীতে মিশেছে। ১৩০৪ সালে ভূমিকম্পে নদীটির কয়েক যায়গা মরে যায়। করতোয়ার নিন্মাংশ আত্রাই ও ফুলঝোড় নামে পরিচিত। বড়াল নদী পদ্মার চারঘাট মোহনা থেকে নাটোরের বাগাতিপাড়া, বড়াইগ্রাম হয়ে চাটমোহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নূরনগরে গুমানীর সাথে মিশে বড়াল নামেই ভাঙ্গুড়া ফরিদপুর বাঘাবাড়ি হয়ে হুরাসাগরের সাথে মিশে নাকালিয়া এলাকায় গিয়ে যমুনার সাথে মিশেছে। উনবিংশ শতাব্দীর দ্বীতীয়ার্ধের মাঝামাঝিতে ও নদীটি ¯্রােতস্বীনি থাকলেও একেবারে শেষের দিকে রাজশাহী থেকে নূরনগর পর্যন্ত নদীটির অনেক স্থানে ক্রস বাধ দেয়ায় এ নদীটি এখন মৃতাবস্থায় পরে আছে। এ নদী উদ্ধারে বড়াল রক্ষা কমিটি দীর্ঘদিন যাবত আন্দোল সংগ্রাম করে আসার ফলশ্রুতিতে চাটমোহর নতুন বাজার, বোঁথর ঘাট ও রামনগরের ঘাটের তিনটি ক্রসবাঁধ অপসারণ করা হলেও এখন ও পদ্মার সাথে যমুনার সংযোগ ঘটানো সম্ভব হয় নি এখনো। নূরনগর থেকে বাঘাবাড়ি পর্যন্ত বর্ষায় কিছুদিনের জন্য প্রাণ ফিরে পায় নদীটি। চেঁচুয়া নদী ধারাবারিষার দক্ষিণপাশ দিয়ে চতরার বিল, জোড়দহ, আফরার বিল, খলিশাগাড়ি বিল ও কিনু সরকারের ধর হয়ে চরসেনগ্রামের পশ্চিমে গুমানী নদীর সাথে মিশেছে। এ নদীটি ও অস্তিত্বহীন হয়ে পরেছে।
দক্ষিণ চলনবিলের বড়াইগ্রামের চিনাডাঙ্গা বিলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে চাটমোহরের মূলগ্রাম ফৈলজানা হয়ে ফরিদপুরের ডেমরার কাছে চিকনাই নদী বড়াল নদীতে মিশেছে। ডেমরা এলাকায় স্লইজগেট থাকায় ফরিদপুর থেকে নদীটি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বর্ষা মৌসুমে মাস চারেক এ নদীতে পানি থাকলেও বাকী ৮ মাস পানি শূণ্য থাকে নদীটি। এগুলো ছাড়া ও বানগঙ্গা, তুলশী নদী, ভাদাই নদী, মরা আত্রাই নদীর অবস্থা অত্যন্ত করুন।
এ নদীগুলো ছাড়াও নবীর হাজীর জোলা, হক সাহেবের খাল, নিয়ামত খাল, সাত্তার সাহেবের খাল, কিনুসরকারের ধর, পানাউল্লাহ খাল, নিমাইচড়া-বেশানী খাল, বেশানী-গুমানী খাল, উলিপুর-মাগুড়া খাল, দোবিলা খাল, কিশোরখালী খাল, বেহুলার খাড়ি, বাঁকাইখাড়ি, গাড়াবাড়ি-ছারুখালী খাল, জনিগাছার জোলা, খলিশাগাড়ি বিল, ধলাইর বিল, ছয়আনির বিল, বাঁইরার বিল, সাধুগাড়ী বিল, মহিষা হালটসহ চলনবিলাঞ্চলের অন্যান্য নদী, শাখানদী, খাল, বিল, খাড়ি এখন একেবারে শুকিয়ে গেছে।
নদী খাল বিল খাড়ি শুকিয়ে যাওয়ায় চলনবিলের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা যমুন নদী হয়ে ঢাকা থেকে যে সকল পণ্য নৌপথে আনতেন এখন তা পারছেন না। সড়ক পথে পণ্য পরিবহনে তাদের বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। ক্রেতারা ও বিভিন্ন হাট বাজার থেকে পণ্য কিনে নৌপথে বাড়িতে নিতে পারছেন না। জলাশয় গুলো শুকিয়ে যাওয়ায় বেকার হয়ে পরেছে হাজার হাজার মৎস জীবি। পেশা পরিবর্তনে বাধ্য হচ্ছেন তারা। পূর্বে নদী থেকে কৃষক অগভীর নলকূপের সাহায্যে বোরো ক্ষেতে পানি সেচ দিতে পারলেও এখন তা পারছেন না। উপরন্ত পানির স্তর দ্রুত নীচে নেমে যাওয়ায় অগভীর পাম্প মালিকরা মৌসুমের শুরুতেই তাদের সেচ পাম্প সমতল থেকে অন্তত ১০ ফিট নিচে স্থাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। আত্রাই রিভার ড্রেজিং কাজ শুরু হলেও সেখানে অনিয়মের প্রশ্ন ওঠে শুরু থেকেই।
চাটমোহর অনার্স কলেজের ভূগোল বিষয়ের বিভাগের বিভাগীয় প্রধান পরিবেশ বিদ ডঃ এস এম মুক্তিমাহমুদ জানান, ভৌগলিক ভাবে এ এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো নদীর জীবন চক্রের শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ বার্ধক্য অবস্থায় পরিণত হয়েছে। লক্ষণীয় যে, চলনবিল এলাকার নদীর তলদেশের ঢালের পরিমান কম, নদীর প্রবাহমান পানির পরিমান কম, ¯্রােতের বেগ ও কম। উৎসস্থান থেকে নদীগুলোর দূরত্ব অধিক হওয়ায়, পানির সংগে প্রবাহিত মৃত্তিকা কনা বালুকনা, নূড়িকনা এবং অন্যান্য ময়লা আবর্জনার পরিমান বেশি ও নদীর তলদেশে তা সঞ্চয়নের পরিমান ও অধিক হওয়ায় ক্রমশই নদী উপত্যকার পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসছে। ফলে বন্যার সময় ব্যাপক বন্যা এবং শুষ্ক মৌসুমে একেবারেই শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের খাদ্য শৃঙ্খল ব্যহত হচ্ছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপন ও ফসল উৎপাদনসহ পানি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সকল কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। ফলে বিপর্যয় ঘটছে সার্বিক পরিবেশের।
চলনবিল রক্ষা আন্দোলন কমিটি ও বড়াল নদী রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব এস এম মিজানুর রহমান বলেন, নদ নদী খাল বিল চলনবিলের প্রাণ। দখল দূষণের ফলে স্বকীয়তা হারাচ্ছে চলনবিল এলাকার নদ নদী খাল বিলগুলো। এগুলো রক্ষা করতে না পারলে চলনবিল তার স্বকীয়তা হারাবেই। আমরা দীর্ঘদিন যাবত এ এলাকার নদ নদী রক্ষায় আন্দোলন করে আসছি। দ্রুত নদ নদী গুলো খনন করা হলে ঐতিহ্য বাহী চলনবিল প্রাণ ফিরে পাবে।





আর্কাইভ