মঙ্গলবার ● ৩ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » খাগড়াছড়িতে গ্রামবাসীর সাথে বিজিবি’র সংঘর্ষে নিহত-৬, আটক-২ : ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
খাগড়াছড়িতে গ্রামবাসীর সাথে বিজিবি’র সংঘর্ষে নিহত-৬, আটক-২ : ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
আব্দুল্লাহ আল-মামুন, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ি’র মাটিরাঙ্গার গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সঙ্গে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের সংঘর্ষে এক বিজিবি সদস্য ও একই পরিবারের ৪জনসহ মোট ৬ জন নিহত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার গাজীনগর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয়রা ঘটনার জন্য বিজিবি সদস্যদের দায়ী করে বলেন, সকালে গাছ কাটতে গেলে বিজিবি সদস্যদের বাঁধা দেয়াকে কেন্দ্র করে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গ্রামবাসীর উপর অতর্কিত ব্রাশ ফায়ার করে নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে বিজিবি সদস্যরা।
অন্যদিকে, অবৈধভাবে গাছ কাটার সময় বিজিবি সদস্যরা বাঁধা দিলে স্থানীয়রা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিজিবি সদস্য শাওন ঘটনাস্থলে নিহত হয়। পরে আত্মরক্ষার্থে বিজিবি গুলি চালালে হতাহতের ঘটনার ঘটে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয় ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাগান মালিক সাহাব মিয়া সকালে তার নিজের বাগান থেকে বেশকিছু গাছ কাটে। গাছগুলো গাড়িযোগে নেয়ার সময় গাছগুলো অবৈধ দাবি করে বিজিবি সদস্যরা জব্দ করে তাদের হেফাজতে নিতে চায়। এক পর্যায়ে পুরো এলাকাবাসী সমবত হয়ে বিজিবি সদস্যদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে এলাকবাসীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ঘটনাস্থলে নিহতরা হলেন, ৪০বিজিবি’র সিপাহী শাওন (৩৫), সাহাব মিয়া ওরফে মুছা (৭০), আলী আহম্মদ (৩০), আলী আকবর(৩০)। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ মাফিজ মিয়া ও হানিফ মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে ফটিকছড়ি এলাকায় গেলে মফিজ মিয়া (৫০) নামের অপর গ্রামবাসী মারা যায়। এদিকে স্বামী ও দুই সন্তানের করুণ মৃত্যুর খবরে আলুটিলা বটতলী এলাকায় নিজ বাড়িতে সাহাব মিয়ার স্ত্রী নঞ্জু বেগম (৬০) ষ্ট্র্রোক করে মারা যায়। এতে বহু মানুষ আহত হওয়ায় নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দু’জনকে আটক করা হয়েছে। মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামছুদ্দিন ভুঁইয়া জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলেও জানান তিনি।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মাটিরাঙ্গা সার্কেল) খোরশেদ আলম বলেন, সংঘর্ষের সঠিক কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। তদন্তের পর সঠিক কারণ জানানো যাবে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ২টি লাশ এসেছে বলেও জানান।
ঘটনার পর জেলা ২৪আর্টিলারী ব্রিগেড গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহরিয়ার জামান, প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস ও পুলিশ সুপার মো. আব্দুল আজিজসহ প্রশাসনের উধ্বতন কর্মকতারা পরিদর্শনে করে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার আহবান জানান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এম সালাউদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি।
ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।