মঙ্গলবার ● ৩ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » শ্যালো মেশিন দিয়ে ঘাঘট নদী পুনঃ খনন ঝুঁকিতে চরকাবাড়ি সেতু
শ্যালো মেশিন দিয়ে ঘাঘট নদী পুনঃ খনন ঝুঁকিতে চরকাবাড়ি সেতু
গাইবান্ধা :: ঘাঘট নদীর নাব্যতা আর গতিপথ ফেরাতে দুই কিলোমিটার পুন:খনন কাজ শুরু করেছে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার মধ্যবর্তী সিমানা দিয়ে বয়ে চলা ঘাঘট নদীর নাব্যতা ফেরাতে পুনঃ খনন কাজ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে নদীর ৫০ শতাংশ খনন কাজ শেষ করেছে নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে স্থানীয় লোকজনের দাবি জানান, জরুরী ভিত্তিতে জিও বস্তার ডাম্পিং ও ব্লক নির্মাণ করে নদীর তীর ও সেতু রক্ষা করা হোক।
ঘাঘট নদীর পুনঃ খননের ফলে সম্পূর্ণ ঝুঁকিতে পড়েছে চরকাবাড়ি সেতু। সেতুর নিচ থেকে শ্যালো মেশিনে তৈরি ড্রেজার দিয়ে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করায় পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এমনকি সেতুর পূর্ব দিকের গাইড ওয়ালের নিচের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। উপরের গার্ডার ও একটি পিলার দেবে গেছে। এছাড়াও পিলার নিচ থেকে পানির স্রোতে মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
গত বছরের বন্যায় পানির চাপে এমনিতেই সেতুর পূর্ব দিকের সংযোগ সড়কটি দেবে গেছে। সে সময় বালুর বস্তা ফেলে ব্রীজ রক্ষার চেষ্টা করে মিঠাপুর এলজিইডি। কিন্তু পূর্ব থেকেই ঝুঁকিতে থাকা চরকাবাড়ি সেতুটির নিচ থেকে বালু উত্তোলনের কারণে এখন আরো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। ফলে বন্যার সময় সেতু ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কায় এলাকাবাসি।
কিন্তু সেতু রক্ষায় কেউ কারো দায় নিতে চাইছে না। পাউবো বলছে, শুধু নদী খনন করা তাদের কাজ। এর বাহিরে কোন প্রকল্প না থাকায় তাদের কিছুই করার নেই। আর এলজিইডি বলছে, নদীর তীর রক্ষার দায়িত্ব পাউবোর। কাজেই ঘাঘট নদীর পুন:খননের ফলে ঝুঁকিতে থাকা সেতু তাদেরকেই রক্ষা করতে হবে। অনেকটা ঝুঁকিতে থাকা সেতু অরক্ষিত রেখেই দায়সারা খনন কাজ শেষ করতে চাইছে পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এমন দায়সারা দায়িত্বে সেতু ও খননের পর নির্মিত নদীর তীর দুটোই হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও আশপাশের গ্রাম ও ফসলি জমি রক্ষা করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৮-৯৯ অর্থ বছরে ঘাঘট নদীর উপর চরকাবাড়ি সেতুটি নির্মাণ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের অর্থায়নে ৭০ মিটার সেতুটি নির্মাণ করেন রংপুর এলজিইডি। প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর উদ্বোধন করেন তৎকালীন বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী এনএইচ আশিকুর রহমান। ২০০০ সালের ২৮ ফেব্র“য়ারি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ ও রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে সেতুটি। সেতুটি দিয়ে দুই উপজেলার প্রায় লাখো মানুষ চলাচল করে। এছাড়াও আশপাশের কলেজ ও স্কুলে দুপারের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসেন। সেতুটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে দুই উপজেলার মানুষের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এতে একদিকে যেমন বাড়বে দুর্ভোগ অন্যদিক ব্যবসায়িক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন অনেকে।
গাইবান্ধায় পেটে লাথি মেরে ৭ মাসের বাচ্চা নষ্ট : বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর লুটপাট
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা সদর উপজেলার মৌজা মালিবাড়ি গ্রামের ছামছুল হকের ছেলে খয়বর রহমানের সাথে একই এলাকার সন্ত্রাসী প্রকৃতির মজিবর রহমান, ফজলুল হকসহ তাদের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে মজিবর রহমান, ফজলুল হকসহ ১০/১২ জন গত ২৬ মার্চ খয়বর রহমানের বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার মৌজা মালিবাড়ি গ্রামের নুরুল হকের ছেলে মজিবর রহমান, ফজলুল হক, কচুয়ার খামারের ডিপটি মিয়াসহ ১০/১২ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে গত ২৬ ফেব্র“য়ারি সকালে একই এলাকার খয়বর রহমানের বাড়িতে জোর পূর্বক ঢুকে হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে খয়বর রহমানের পলের পালা, কলম কাটা আমের গাছের চারা, ছাপরা ঘরসহ বাউন্ডারী বেড়া ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে। এতে খয়বর ও তার স্ত্রী লাইজু বেগম বাঁধা দিলে আসামী মজিবর রহমানের হুকুমে অন্যান্য আসামীরা মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এসময় খয়বরের স্ত্রী ৭ মাসের গর্ভবর্তী জানা সত্ত্বেও তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তলপেটে লাথি মেরে কাপড় টেনে ধরে বিবস্ত্র করে এবং গলায় থাকা স্বর্ণের চেন ছিনিয়ে নেয়। লাইজু আত্মচিৎকার করলে খয়বরের শ্যালিকা নাজমা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে আসামী ফজলুল হক তার হাতে থাকা ধারালো ছোরা দিয়ে তার মাথায় এলোপাথারি চোট মারে। এসময় নাজমা বেগম হাতধারা আটকানোর চেষ্টা করলে তার হাতের কনুই কেটে গুরুতর জখম হয়। শুধু তাই নয়, আসামিরা নাজমাকে গলাটিপে ধরে শ্বাস বন্ধ করে। এদিকে খয়বরের স্ত্রীর অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে সে মরা সন্তান প্রসব করে।
এব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানায় গত ১ মার্চ রবিবার খয়বর রহমান বাদি হয়ে একটি মামলা (নং ০২) দায়ের করে। মামলা করার পর থেকে আসামিরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং বাদিকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হত্যাসহ নানা ধরণের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে।