বৃহস্পতিবার ● ২৬ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকান্ডের সংবাদ
রাঙামাটিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকান্ডের সংবাদ
বলাকা ক্লাবের উদ্যেগে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জীবাণুনাশক স্প্রে রাঙামাটি :: প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও জনসচেতনতার লক্ষ্যে রাঙামাটিতে প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী ও ক্রীড়া-সামাজিক সংগঠনগুলো শুরু করেছে নানামুখী সচেতনতামূলক তৎপরতা। এরই অংশ হিসেবে রাঙামাটি পৌরসভার সহযোগীতায় ক্রীড়া ও সামাজিক সংগঠন বলাকা ক্লাবের উদ্যেগে শহরের গর্জনতলী পুরো এলাকায় করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সচেতনতামূলক লিফলেট, মাস্ক বিতরণের পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজেশন লিকুইট ও পানির জার স্থাপন এবং রাস্তা ও জনবসতিপুর্ন স্থানে জীবাণুনাশক ওষুধ স্প্রে করেছে ।
আজ বৃহস্পতিবার ২৬মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে সকালে বলাকা ক্লাবের সামনে এ কর্মসুচীর উদ্বোধন করেন রাঙামাটি পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো.জামাল উদ্দিন। এ সময় বলাকা ক্লাবের সভাপতি ঝিনুক ত্রিপুরা, সহ-সভাপতি উজ্জ্বল ত্রিপুরা, সহ-সভাপতি নতুন কুমার ত্রিপুরা (আপেল), সাধারণ সম্পাদক মিঠুন মারমা, অর্থ সম্পাদক টিলু মারমা, সদস্য অমিত ত্রিপুরা’সহ ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা অংশ নেন।
উদ্বোধনকালে পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোঃ জামাল উদ্দিন বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে। এ পরিস্থিতিতে রাঙামাটি পৌরসভা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসুচী গ্রহণ করেছে। কর্মসুচীর অংশ হিসেবে পৌরসভার জনগুরুত্বপুর্ন স্থানে হাতা ধোয়ার ব্যবস্থা করাসহ জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। তিনি বলেন, জনসচেতনতাই একমাত্রই করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের একমাত্র হাতিয়ার। সচেতনতার মাধ্যমে আমাদের নিজে বাঁচতে হবে। তাহলেই আমাদের সমাজ ও দেশ বাঁচবে। পৌরসভার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সংগঠন ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বলাকা ক্লাবের সভাপতি ঝিনুক ত্রিপুরা বলেন, আমরা সবাই যদি সকলে সচেতন হই, আর যার যার অবস্থান থেকে অন্যকে সচেতন করি তাহলে যে কোনো মহামারি থেকে জনগণকে রক্ষা করা সম্ভব। মানুষকে সচেতন করাই মূল উদ্দেশ্য জানিয়ে তিনি বলেন, সমাজের প্রতিটি মানুষ তার নিজ অবস্থান থেকে সচেতনামূলক ও সামাজিক কর্মকান্ডে এগিয়ে আসুক। সচেতনতা ছাড়া করোনাভাইরাসের মহামারী থেকে বাঁচার কোন পথ নেই। তিনি পৌর পরিষদকে জনগনের দু:সময়ে পাশে থাকায় কৃতজ্ঞতা জানান।
রাঙামাটিতে যুব সংগঠন স্বপ্নবুনন ৫শত হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি এবং ১ হাজার মাস্ক বিতরণ
রাঙামাটি :: করোন ভাইরাস (কভিড ১৯) একটি ভয়াবহ প্রাণঘাতী ভাইরাস। নাম মনে পরতেই চোখে ভেসে উঠে বিশ্বের হাজারো লাশের মিছিল। বাংলাদেশেও ইতমধ্যে আঘাত হেনেছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। করোনা প্রতিরোধে সরকারী ভাবে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যেগ। পার্বত্য জেলা রাঙামাটি ও বিভিন্ন উপজেলায় সরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি করোন প্রতিরোধে স্বপনবুনন-করোনায় মানবিকতা প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে বিতরণ করেছে ১০০০ মাস্ক এবং স্বপ্নবুনন এর সদস্যরা তৈরি করেছে ৫০০ হ্যান্ড স্যানিটাইজার যা প্রস্তুত করতে সহযোগিতা করেছে রাঙামাটি সরকারী কলেজের রসায়ন বিভাগ। এই হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হচ্ছে দিন মজুর, শ্রমজীবি গরীব অসহায়দের মাঝে এবং জরুরী অবস্থায় যারা জাতির সেবায় কাজ করছেন যেমন চিকিৎসক ও নার্সদের মাঝে । এছাড়াও স্বপ্নবুনন অসহায় দিনমজুর ও শ্রমজীবিদের মাঝে এক সপ্তাহের বাজার রসদ বিতরণ করবে। এছাড়াও লিফলেট বিতরণ, পোষ্টারিং, ও মাইকিং করেছে সেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সচেতনাতামূলক যুব সংগঠন স্বপ্নবুনন। কার্যক্রম সম্পর্কে স্বপ্নবুনন এর চেযারম্যান প্রকৌশলী নূর তালুকদার মুন্না বলেন, বিশ্বের এই ক্রান্তি লগ্নে রাঙামাটিবাসীর সেবায় সদর উপজেলা এবং কাউখালী, বরকল, লংগদু, বিলাইছড়ি উপজেলা সমূহে কাজ করছে স্বপ্নবুনন। বরাবরের মতই এসকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বৃত্তবান এবং দাতা সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতায়। সমাজের বৃত্তবানরা এগিয়ে আসলে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করা আরো সহজ হবে বলে জানান তিনি। এছাড়াও তিনি যেসকল সদস্যরা নিরলস পারিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং যারা আর্থিক সহযোগিততা করছেন তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
করোনা ভাইরাস জনসচেতনতায় রাঙামাটির জেল রোড কন্ট্রাকটর পাড়ায় নেমেছে একদল তরুন
রাঙামাটি :: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে রাঙামাটি জেলা শহরের জেল রোড কন্ট্রাকটর পাড়ার একদল তরুনদের উদ্যোগে এলাকার রাস্তা ও বাড়ীর আঙ্গিনায় ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধক জীবাণু নাশক ওষুধ স্প্রে মেশিন দ্বারা ছিটানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ২৬ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শহরের জেল রোডস্থ কন্ট্রাকটর পাড়ার পুরো এলাকা জুড়ে এই সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালিত করা হয়।
এসময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে এলাকাবাসীদের হাতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার স্প্রে করা হয়। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে জন সচেতনতামূলক বার্তাগুলো প্রচার করা হয়।
এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন সাংবাদিক অলি আহমেদ, সাংবাদিক নন্দন দেবনাথ, সাংবাদিক মিল্টন বাহাদুর, সাংবাদিক লিটন শীল, সাংবাদিক শেখ ইমতিয়াজ কামাল ইমন, সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা তানিয়া ইলা, তরুন সংগঠক ঈশান দেওয়ান (বেনসন), জেকি তালুকদার, কোয়েল দাশ, বাধন দেওয়ান, মিঠুন চাকমা, জুন চাকমা, অজিত বাহাদুর (কেনি), প্রত্যয় চাকমা (শ্রেষ্ঠ) ও প্রজ্জ্বল চাকমা।
উদ্যেক্তারা বলেন, পাড়ায় বসবাসরত সাধারণ মানুষকে সচেতন ও করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে এই উদ্যোগ। এতে পাড়া আসা যাওয়া সাধারণ মানুষসহ পাড়ায় বসবাসরত মানুষরা করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় কিছুটা হলেও সতর্ক হবে। আমাদের ন্যায় প্রতিটি এলাকা ও মহল্লায় তরুনরা এভাবে উদ্যোগ নিলে মানুষ আরো সচেতন ও সতর্ক হবে এবং এই মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে পারবো। তাই যতদিন করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে পাড়ায় এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।