শনিবার ● ২৮ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » সর্বচ্চ সতর্কতায় ঝিনাইদহে সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত
সর্বচ্চ সতর্কতায় ঝিনাইদহে সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ও মানুষকে ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে ঝিনাইদহে টহল অব্যাহত রেখেছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার সকাল থেকে তারা শহরে টহল শুরু করে। শহরের পায়রা চত্বর, আরাপপুর, হামদহ, বাস টার্মিনাল এলাকায় মাইকিং করে জনগণকে ঘরে থাকাসহ করোনা প্রতিরোধে নানা পরামর্শ প্রদাণ করে। এছাড়াও জনসমাগম বন্ধসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। শহরের দোকান পাট বন্ধ থাকা আর যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ার কারণে বদলে গেছে শহরের নিয়মিত চিত্র।
শৈলকুপায় বাড়িতে থাকার যন্ত্রনায় স্ত্রীর সাথে ঝগড়ায় স্বামীর আত্মহত্যা ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় স্ত্রী’র সাথে ঝগড়া করে আলমগীর হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) দুপুরে উমেদপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি ওইগ্রামের আবু তালেবের ছেলে। শৈলকুপা থানার উপ-পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান জানান, বিষপান করা এক ব্যক্তিকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
ঝিনাইদহে নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও খাবার বিতরণ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে করোনাভাইরাসের আক্রমণ থেকে নিম্নবিত্ত শ্রমজীবী মানুষকে রক্ষার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও খাবার বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই এর পক্ষ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করেন জেলা যুবলীগের নেতৃবৃন্দ। শহরের শিল্পকলা একাডেমী চত্বর, পোষ্ট অফিস মোড়, পায়রা চত্বরে রিক্সা চালক দিনমজুরসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষের মাঝে এ স্যানিটাইজার বিতরণ করা হয়। এসময় তাদের স্বাস্থ্য সচেতন নানা পরামর্শ প্রদাণ করেন নেতৃবৃন্দ। এসময় জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম শিমুল, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল, যুবলীগ নেতা শরিফুল ইসলাম মুক্ত, হেলাল উদ্দিন, আবুল কাশেম শান্ত, ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে শহরের বিভিন্ন এলাকার নি¤œআয়ের মানুষের মাঝে চাল, ডাল, আলু ও সাবান বিতরণ করেছেন জেলা যুব মহিলা লীগ। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের হাতে খাবার তুলে দেন জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড, সালমা ইয়াছমিন। খাবার পেয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন তারা।
কালীগঞ্জে অগ্নিকান্ডে ৪টি গরুর মৃত্যু, মারাত্বক জখম আরও ৫টি
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের অগ্নিকান্ডে এক কৃষকের ৪ টি গরু মারা গেছে। এ সময় ওই গোয়ালে থাকা আরও ৫ টি গরু আগুনে ঝলসে মারাত্বক জখম হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে কালীগঞ্জ পৌরএলাকার বাবরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ফারুক হোসেন ৩ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গরুর মালিক বাবরা গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দীনের ছেলে ফারুক হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে তিনি গরুর খাবার দিয়ে নিজের ঘরে যান। এরপর তারা পরিবারের সকলেই ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে তার স্ত্রী নাজমা বেগম বাইরে বের হয়ে গোয়াল ঘরে আগুন দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। খবর পেয়ে কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ১ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। ততক্ষনে ৪ টি গরু পুড়ে মারা যায়। আহত হয় আরও ৫ টি গরু। কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মামুনুর রশিদ জানান, গোয়াল ঘরের মধ্যের জ্বলন্ত মশার কয়েল অথবা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত বলে তারা ধারনা করছেন। ফারুকের স্ত্রী নাজমা বেগম জানান, নিজেরা ভালো মত না খেলেও গরুগুলোকে তারা কখনও কষ্ট দেননি। দায়দেনা করে গরুগুলোকে সন্তানের মত করে লালন করছিলেন। আশা ছিল ঈদের সময় বিক্রি করে বেশ টাকা পাবেন। পরে আরও কিছু গরু কিনে লালন করে সংসারের অভাব পূরন করবেন। কিন্তু সে স্বপ্ন নিষ্ঠুর আগুনে ধুলিস্মাৎ হয়ে গেছে এ কথা বলতে বলতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম জানান, অনেক কষ্ট করে তাদের গ্রামের ফারুক হোসেন ষাড় গরুগুলো লালন করে আসছিল। তার ইচ্ছে ছিল আরও কিছুদিন পরে গরুগুলো বিক্রি করে বেশ টাকা পাবেন। কিন্তু লোকটার বড্ড ক্ষতি হয়ে গেলো। কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা ডঃ মামুনুর রশিদ জানান, গোয়াল ঘরের মধ্যের জ¦লন্ত মশার কয়েল অথবা বৈদ্যতিক সর্ট সার্কিট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত বলে তারা মনে করছেন।
ঝিনাইদহে জেলায় মোট ৯১৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে ২৪ ঘন্টায় বিদেশ ফেরৎ ১২ জন প্রবাসিসহ তাদের পরিবারের ৪৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এই নিয়ে গত ১০ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত এই ১৮ দিনে ঝিনাইদহে জেলায় মোট ৯১৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এর মধ্যে ৩৬৫ জন ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার মেয়াদ শেষ হয়েছে। তাদের শরীরে কোন করোনা ভাইরাস ধরা পড়েনি। বর্তমান ঝিনাইদহ ৬ উপজেলায় ৫৫০ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। শুক্রবার দুপুরে এসব তথ্য জানান ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানবিদ জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোন রোগীর সন্ধান মেলেনি। এদিকে শৈলকুপার হরিদেবপুর গ্রামে আবদুস সোবাহান নামে এক গাড়ি চালককে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১০টার দিকে ওই ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যদিকে ওই গাড়ি চালককে চিকিৎসা দেওয়ার ডাক্তার সুকুমারের বাড়ি ও লকডাউন ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। গ্রামবাসি জানান, সোবাহান কয়েকদিন ধরেই তার ঠান্ডা, কাশি ও গলা ব্যাথাসহ জ্বরে আক্রান্ত তিনি গোঁপনে নিজ বাড়িতে ছিলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শৈলকুপা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ প্রতিম শীল ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়ি চালককে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার নির্দেশ দেন এবং ডাক্তার সুকুমারের বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করেন।
কালীগঞ্জ বিএনপির উদ্যোগে সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ
ঝিনাইদহ :: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ও পৌর বিএনপির উদ্যোগে সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-৪ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজের পক্ষ থেকে নির্বাচনী এলাকায় ৫ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে শহরের থানা রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে এ মাস্ক বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ¦ মাহবুবার রহমান, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম তোতা, যুগ্ম আহ্বায়ক জবেদ আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের উপজেলা সভাপতি তোফাজ্জেল হোসেন তপন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মারুফ বিল্লাহ প্রমুখ। এসময় সাধারণ মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না আসার অনুরোধ জানানো হয়। করোনা ভাইরাসের মহামারী থেকে বাঁচতে সকলকে সচেতন হওয়ার আহবান করা হয়।
ঝিনাইদহ জেলায় হাসপাতালে করোনা আতংক ঢাকা বসবাসকারীদের নিয়ে সঙ্কা
ঝিনাইদহ :: দেশে অঘোষিত লক ডাউনে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ও মহেশপুর উপজেলাতে সেনাবাহিনী নামায় ও পুলিশি তৎপরতায় শহরে ব্যস্ততম রাস্তা এখন শুনশান নিরাবতা বিরাজ করছে। পাশা পাশি করোনা আতঙ্কে উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে প্রায় রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে। ২৬ মার্চ-এর পর থেকে উপজেলা শহর দুটির ব্যস্ততম সড়ক গুলি এখন শুনশান নিরবতা লক্ষ্য করা গেছে। শহরের কাঁচা বাজার খোলা থাকলেও ক্রেতা কম বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। ওষাধের দোকান ছাড়া অন্যান্য সব দোকান পাট সব বন্ধ রয়েছে। উপজেলা হাসপাতাল দুটিতে রোগীর সংখ্যাও ব্যাপক হারে কমে গেছে। অধিকাংশ রোগীর স্বজনদের ধারণা হাসপাতাল থেকে করোনার বিস্তার ঘটতে পারে। এমন আতঙ্কে তারা ডাক্তাদের কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ভর্তি রোগী বাড়ীতে নিয়ে চলে যাচ্ছেন। যে কারণে হাসপাতালটিতে প্রায় রোগী শূন্য হয়ে পড়েছে। হাসপাতালটিতে মানুষ-জনের চলাচল কমে যাওয়াতে কুকুর বিড়ালের আড্ডা স্থলে পরিণত হয়েছে। যদিও কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আবদুর রশিদ বলেন-রোগীদেরকে যথেষ্ঠ বোঝানোর চেষ্টা করছি তবুও রোগীরা থাকতে চাচ্ছেন না বা অবিভাবকরা রাখতে চাচ্ছেন না। এমনটা করোনা আতঙ্কে করছে তারা। তিনি বলেন করোনা ভাইরাস রোগীদের জন্য আলাদা বিল্ডিং-এ বেডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি হাসপাতালটি অন্যান্য হাসপাতাল থেকে যথেষ্ঠ পরিস্কার পরিচ্ছন্নার দিকে নজর রাখা হয় বলে তিনি দাবী করেন। এদিকে থানার সেকেন্ড কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন-এপর্যন্ত কোটচাঁদপুর উপজেলাতে ২শ’৫জন দেশের বাইরে থেকে এসেছেন। এদের মধ্যে আমরা ১শ’৬১ জনের মত হদিস পেয়েছি। অপর দিকে পার্শ্ববর্তী মহেশপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোরশেদ হোসেন খান এফএনএস’কে বলেন-আমরা এ উপজেলাতে ৫শ’ ৮জন বাইরে দেশ থেকে এসেছেন বলে আমরা একটি লিষ্ট পেয়েছি। তাদের মধ্যে ৩শ’ ৭৬ জনের মত সন্ধান পেয়েছি। বাকীদের ঠিকানাই ভূল। যাদেরকে পাওয়া গেছে তাদের বাড়ী থেকে বাইরে না বেরুতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এদিকে ১০দিনের ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়ীতে যারা এসেছেন তাদেরকে হোম কোয়ারেটিনে থাকার নির্দেশনা থাকলেও তারা তা মানছেন না কেউই। তারা উন্মূক্ত চলাফেরা করছেন। ফলে এ অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের মধ্যে তাদেরকে নিয়ে সঙ্কা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, পুলিশ ও সেনাবাহিনী শহরের দিকে বেশী ঘোরা ফেরা করায় শহরের মানুষ জন বাইরে খুব একটা না বের হলেও গ্রামের দিকে তা ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে। গ্রামের চায়ের দোকান গুলোতে উঠতি বয়সি যুবকদের আড্ডা স্থল আগের মতই রয়ে গেছে।