সোমবার ● ৩০ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » ঝালকাঠিতে সাংবাদিক পরিচয়ে মুরগীর দোকানে চাঁদা দাবি তিনজনকে গণধোলাই
ঝালকাঠিতে সাংবাদিক পরিচয়ে মুরগীর দোকানে চাঁদা দাবি তিনজনকে গণধোলাই
গাজী গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: ঝালকাঠিতে সাংবাদিক পরিচয়ে একটি মুরগীর দোকান থেকে চাঁদা নেওয়ার সময় তিনজনকে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয় জনতা। আজ সোমবার দুপুরে শহরের কাঠপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দোকানীর অভিযোগের পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। স্থানীয়রা জানায়, কাঁঠপট্টি এলাকার কামাল মৃধার পোলট্রি মুরগীর দোকানের কর্মচারী সুমন মুরগী বিক্রি করছিলেন। এসময় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বশির আহম্মেদ খলিফা, রুহুল আমিন রুবেল ও রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু নামে তিন ব্যক্তি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দোকান খুলে রাখার জন্য ৫ হাজার টাকা চাঁদাদাবি করেন। চাঁদা না দিলে মোবাইল কোর্ট করিয়ে একলাখ টাকা জরিমানা করানোর হুমকি দেয়। এটি খাদ্য সামগ্রীর দোকান অন্তভুক্ত জানালে, ওই ব্যক্তিরা দোকান কর্মচারী সুমনকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। ভয় পেয়ে সুমন ওই তিন ব্যক্তিকে ১৮০০ টাকা তুলে দেন। বাকি টাকা পরে এসে নিয়ে যাবে বলেও হুমকি দেয় তারা। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন এসে ওই তিন ব্যক্তিকে গণধোলাই দেয়। লোকজনের তোপের মুখে পালিয়ে যায় কথিত তিন সাংবাদিক মোহনা টিভির প্রতিনিধি রুহুল আমিন রুবেল মুহুরী, ভোরের সময় প্রতিনিধি বশির খলিফা ও বর্তমান কথা প্রতিনিধি রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু। উল্লেখ এরা গত দুই তিন বছর যাবত ঝালকাঠিতে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানাভাবে মানুষকে হয়রানী ও চাঁদাবাজি করে আসছে। এদের বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজি মামলা থানায় রেকর্ড এবং চার্জশিট হলেও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মধ্যস্থতায় বাদী মামলায় আপোষ করতে বাধ্য হন। সারা দেশের মানুষ যখন করোনাভাইরাসের আক্রমন থেকে বাচাঁর জন্য লড়াই করছে তখন এসব সাংবাদিকরা বিদেশ ফেরত ব্যাক্তিদের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা পয়সা দাবি করে। গত ২৭ মার্চ সকালে পশ্চিম ঝালকাঠি যুব উন্নয়নের পিছনে সৌদি ফেরত কচি বেগমকে ভয় দেখিয়ে রুবেল ও বশির দুই হাজার টাকা নিয়ে যায়। কচি বেগম নিজে ঘটনাটি পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে জানায়। গত ২৯ মার্চ রবিবার সকালে বশির, বাচ্চু, রুবেল, বাবুল মিনা, নুরুজ্জামান, মাসুম খান এই ছয়জন ঝালকাঠির এআরএস ইটভাটা ও আগরবাড়ি এনটিসি ব্রিক ফিল্ডে গিয়ে চাঁদাদাবি করে। চাঁদা না দিলে তারা মোবাইল কোর্ট করানোর হুমকি দেয়। এআরএস জাকির তালুকদার সাংবাদিক আজমির হোসেন তালুকদারের বড় ভাই হওয়ায় দুই হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করেন। এনটিসি থেকে তারা চার হাজার টাকা আনতে সক্ষম হয়। কাঠপট্টির অরবিন্দর চাউলের আড়ৎ খোলা দেখে ২০হাজার টাকা চাঁদা দাবী করলে ৯ হাজার টাকা দিয়ে হাতে পায়ে ধরেন। ঝালকাঠি প্রেস ক্লালাবের সভাপতি চিত্তরঞ্জন দত্ত বলেন, এসব অপসাংবাদিকদের সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে, এদের কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। এরা কেউ প্রেস ক্লাবের সদস্য নয়। তবে এসব অপসাংবাদিক চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে প্রশাসন এবং ভুক্তভোগীরা কেউ ব্যবস্থা নিলে প্রেস ক্লাব তাদের পাশে থাকবে।