বৃহস্পতিবার ● ২ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৯০
গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৯০
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: করোনা ভাইরাসে গাইবান্ধায় আজ বৃহস্পতিবার নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় ১০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে নতুন করে ২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এদিকে এখন পর্যন্ত আমেরিকা প্রবাসী দু’জনসহ তার সংস্পর্শে আসা আরও দু’জনসহ মোট ৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এরমধ্যে ৩ জন গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেসন ও অপরজন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আইসোলেসনে রয়েছে।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ১৯০ জন ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। এরমধ্যে সদরে ৩৬, ফুলছড়িতে ৪, সুন্দরগঞ্জে ৪৫, সাঘাটায় ১২, পলাশবাড়িতে ৫, গোবিন্দগঞ্জে ৩৮ ও সাদুল্যাপুর উপজেলায় ৪১ এবং বগুড়া জেলায় ৯ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। এছাড়া জেলা সদর হাসপাতালে ১ জনকে সন্দেহজনক হিসেবে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত কন্ট্রোল রুম থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদেশ ফেরত ১৯০ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে রক্ত পরীক্ষার ফলাফল না জানা পর্যন্ত সন্দেহজনক রোগীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের এক প্রেস রিলিজে জানা গেছে, এ পর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ৯ হাজার ৪শ’ দরিদ্র শ্রমজীবি কৃষক পরিবারের মধ্যে ৯৪ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ও ৮ হাজার ৯শ’ পরিবারের মধ্যে ৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। এছাড়া বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ভান্ডারে ১শ’ ৪২ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে।
করোনা ভাইরাসের লক ডাউনে গাইবান্ধায় ত্রাণ বিতরণ
গাইবান্ধা :: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে জেলার ঘরে বসে থাকা কর্মহীন শ্রমজীবি অসহায় দরিদ্র পরিবারের মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার গাইবান্ধায় জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি ও গাইবান্ধা পৌরসভা সহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যাগে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি’র ব্যক্তিগত উদ্যোগে গাইবান্ধার ৫ শতাধিক শ্রমজীবি মানুষের মধ্যে খাদ্য ও পরিচ্ছন্নতা সহায়তা হিসেবে চাল, ডাল, তেল, আলু ও সাবান বিতরন করা হয়েছে। জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়ন, ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়ন ও রিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সহায়তা প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রসুন চক্রবর্তী, জেলা যুবলীগ সাধারন স¤পাদক শাহ আহসান হাবীব রাজীব, হুইপের ব্যক্তিগত সহকারী একান্ত সচিব শাহ মো:সবুর হোসেন বিদ্যুত, আহসান হাবীব উত্তম, মটর-ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া গাইবান্ধা পৌরসভা নি¤œ আয়ের মানুষের মধ্যে গাইবান্ধা জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহল্লা ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৫শ’ মানুষের মাঝে ১০ কেজি চাল ও ২ কেজি আলু বিতরণ করেন পৌর মেয়র শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবির মিলন।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের উদ্যোগে উপজেলার চাঁপড়ীগঞ্জ থেকে কোমরপুর পর্যন্ত হতদরিদ্র ৭০ জন ভ্যান চালকদের মাঝে চাল ৫ কেজি, ডাল হাফ কেজি, আলু ১ কেজি, তেল হাফ লিটার, লবন হাফ কেজি, সাবান ১টা ও ১টি মাস্ক বিতরণ করেন হাইওয়ে থানার বগুড়া রিজিয়নের পুলিশ সুপার শহিদ উল্লাহ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গাইবান্ধা পৌর শাখার ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শহরের জুবলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ১২৫ জন অতি দরিদ্র পরিবারের মধ্যে ৫ কেজি করে চাল বিতরণ করেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন।
এছাড়াও গাইবান্ধা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে শহরের বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক ও সাবান বিতরণ করা হয়। এছাড়া পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের অপরিস্কার জায়গায় পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্লিচিং পাউডার দিয়ে স্প্রে করেন। এসব সামগ্রী বিতরণ ও স্প্রে করেন গাইবান্ধা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক স্বপন।
করোনা ভাইরাসে লক ডাউনের সময় ন্যাশনাল ব্যাংক গাইবান্ধা শাখার সার্ভিস বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ আমানতকারিদের
গাইবান্ধা :: করোনা ভাইরাসে লক ডাউনের সময়টিতে সরকারি নির্দেশ মোতাবেক গাইবান্ধা জেলা শহরের সকল সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের শাখা সমূহে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দু’ঘন্টা বিশেষ ব্যবস্থাপনায় খোলা রেখে সার্ভিস প্রদান করেছে। কিন্তু শুধুমাত্র ন্যাশনাল ব্যাংক গাইবান্ধা শাখা গত ২৬ মার্চ থেকে বৃহস্পতিবার ২ এপ্রিল পর্যন্ত একটানা সাতদিন বন্ধ রেখেছে। এতে এই ব্যাংকের আমানতকারিদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এমনকি একটানা বন্ধ থাকার খবরটিও পূর্বাহ্নে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমানতকারিদের অবহিত করেননি। এতে ওই ব্যাংকে একাউন্ট আছে অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি জরুরী প্রয়োজনে অর্থ উত্তোলন করতে না পেরে চরম বিপাকে পড়েছে।
এব্যাপারে কর্মীরহাতের ব্যবস্থাপক মো. মাহমুদুল হক রতন বলেন, ন্যাশনাল ব্যাংক গাইবান্ধা শাখায় তাদের প্রতিষ্ঠানে একাধিক একাউন্ট রয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই নিয়মিত লেনদেন করে আসছে। কিন্তু ন্যাশনাল ব্যাংকের গাইবান্ধা শাখাটি বন্ধ থাকায় স্টাফদের বেতন দেয়া সম্ভব হয় নাই। ফলে স্টাফরা বেতন উত্তোলন করতে না পেরে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খোলা থাকবে না পূর্বে কর্মীরহাতকে জানানো হলে কর্মীরহাত কর্তৃপক্ষ বেতন এবং নাবিক কর্মীরহাত হাসপাতালের জরুরী প্রয়োজন নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আগেই উত্তোলন করে রাখতে পারতেন। তাতে অর্থাভাবে প্রতিষ্ঠানটিকে সমস্যার কবলে পড়তে হতো না।
এব্যাপারে ন্যাশনাল ব্যাংক গাইবান্ধা শাখার ব্যবস্থাপকের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত সেকেন্ড অফিসার মেহেদী হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ লক ডাউনের সময়টিতে সারাদেশের শুধুমাত্র ৫০টি জেলায় ব্যাংকের শাখার কার্যক্রম চালু রাখার নির্দেশনা দিয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ধরার পড়ার কারণে গাইবান্ধাসহ ১৪টি জেলায় ব্যাংকের সকল সার্ভিস বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যাংকের সার্কুলারটি ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হস্তগত হওয়ায় ব্যাংকের গ্রাহকদের পূর্বে অবগত করা সম্ভব হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।