শনিবার ● ১১ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » গাইবান্ধার চরাঞ্চলে মরিচের ফলন বাম্পার হলেও ক্রেতা নেই
গাইবান্ধার চরাঞ্চলে মরিচের ফলন বাম্পার হলেও ক্রেতা নেই
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গাইবান্ধার সদর উপজেলা, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সুন্দরগঞ্জের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু মৌসুম সময়ে করোনা ভাইরাসের কারণে এবং জেলা শহর লক ডাউন ঘোষণায় হাট-বাজারগুলোতে বাইরে থেকে মরিচের ক্রেতা আসছে না। ফলে চাষিরা পাচ্ছে না কাঁচা মরিচের সঠিক মূল্য।
বর্তমানে গাইবান্ধা জেলার হাট-বাজারে এখন কাঁচা মরিচ প্রতিকেজি ৮ থেকে ১০ টাকা অর্থাৎ ২শ’ ৪০ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা মণ মূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে। এতো কম মূল্যে মরিচ বিক্রি করে ফসল উৎপাদনের খরচ তুলতে পারছে না মরিচ চাষিরা। ফলে তারা জমি থেকে মরিচ না তুলে মরিচ পাকানোর অপেক্ষায় জমিতেই রাখতে বাধ্য হচ্ছে অনেক কৃষক। যাতে পরিস্থিতির উন্নতি হলে চরা মূল্যে তারা বিক্রি করে খরচটা পুষিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু বৃষ্টিহীন উত্তপ্ত বিরূপ আবহাওয়ার কারণে অনেক আগেই মরিচ পাকতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় পাকা মরিচ বিক্রি করে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে বলে মরিচ চাষিরা চরম হত্যার মধ্যে দিন যাপন করছে। কারণ মরিচ চাষ করতে গিয়ে যে ব্যয় হয়েছে তাতে লাভ তো দুরের কথা বরং উৎপাদন ব্যয়ই উঠবে কিনা তাতে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্র নদীর কোল ঘেঁষে ওঠা চরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় হাট ফুলছড়ি এখন মরিচের হাট নামে খ্যাতি অর্জন করেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে লক ডাউন ঘোষিত হওয়ায় এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিষয়টিতে কড়াকড়ি আরোপ করায় বিগত ৩ সপ্তাহ যাবত ফুলছড়ি হাটে মরিচের বেচাকেনা হচ্ছে না। বাহির থেকে আসা তো দুরের কথা স্থানীয় পাইকাররাও মরিচ কিনতে আসছে না। ফুলছড়ি হাটে আসা মরিচ চাষিরা জানালেন, গত বছর তারা এই মৌসুম সময়ে প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা মূল্যে অর্থাৎ ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা মূল্যে পাইকাররা হাট থেকে কিনে নিয়ে গেছে। অথচ এখন চরাঞ্চলের কৃষকরা জমিতেই প্রতিকেজি মরিচ ৬ থেকে ৮ টাকা অর্থাৎ প্রতিমণ ১শ’ ৮০ টাকা থেকে ২শ’ ৪০ টাকা মূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।
ফুলছড়ি হাটের ইজারাদার সুত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ফুলছড়ি হাট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় মরিচের হাট। চরাঞ্চল থেকে কৃষকরা নৌকায় মরিচ নিয়ে আসে এখানকার আড়তদারের কাছে। ব্যবসায়ীরা ট্রাক নিয়ে এসে হাট থেকে সস্তায় মরিচ কিনে নিয়ে যায়। কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাসের কারণে অবস্থা সম্পন্ন ভিন্ন। এতে শুধু চরাঞ্চলের মরিচ চাষিরাই নয় বরং হাটের ইজারাদার, ক্ষুদ্র মরিচ ব্যবসায়ি এবং এক্ষেত্রে যে সমস্ত শ্রমিক মজুর কাজ করতো তারাও পাইকার না আসায় তাদেরকে কর্মহীন দিন যাপন করে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা জানান, এক সময় এ জেলায় মরিচের চাষ হতো অনেক কম। ফলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মরিচ দিয়ে জেলার চাহিদা পূরণ হতো না। ফলে পার্শ্ববর্তী বগুড়া, জয়পুরহাট ও নওগাঁ থেকে মরিচ আমদানী করে চাহিদা মেটানো হতো। আর এখন এখান থেকেই মরিচ অন্য জেলায় রপ্তানি হচ্ছে।
গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ৩০৬
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় শনিবার নতুন করে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে গত ২৪ ঘন্টায় ৩০৬ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে এবং ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় ১ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে সিভিল সার্জন সুত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে আরও নতুন ১১১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। তদুপরি জেলায় এ পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেসনে ৪ জন, হোম আইসোলেসনে ১ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৮০ জন।