বুধবার ● ২২ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধা থেকে সুনামগঞ্জে ৫২ জন কৃষি শ্রমিক প্রেরণ
গাইবান্ধা থেকে সুনামগঞ্জে ৫২ জন কৃষি শ্রমিক প্রেরণ
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: চলতি বোরো ধানাকাটা সংকট মোকাবেলায় তৃতীয় দফায় সুনামগঞ্জ জেলার হাওর এলাকায় কৃষি উৎপাদন সচল রাখতে উৎপাদিত ধান কাটা ও মাড়াই কাজের জন্য তৃতীয় দফায় আজ বুধবার বিশেষ ব্যবস্থায় গাইবান্ধা থেকে কৃষি শ্রমিকের একটি দলকে পাঠানো হয়েছে। ধান কাটার জন্য গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পেশাদার ৫২ জন কৃষি শ্রমিককে প্রেরণ করা হয়। জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি এই কৃষি শ্রমিক পাঠানো কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি বলেন, প্রতিবছর গাইবান্ধা থেকে কৃষি শ্রমিকরা হাওর অঞ্চলে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেয়। এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে চাইলেও অধিকাংশ কৃষি শ্রমিক জেলার বাইরে ধান কাটতে যেতে পারছিল না। এমতাবস্থায় দেশে খাদ্য সংকট তৈরী না হয় এবং কৃষকরা যাতে সময়মত মাঠ থেকে ধান কেটে গোলায় তুলে আনতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মোতাবেক সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের বিশেষ ব্যবস্থায় গাইবান্ধা থেকে ধান কাটার জন্য হাওর অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। এতে কৃষি শ্রমিক ও কৃষক উভয়ই উপকৃত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে এবং গাইবান্ধা জেলা পুলিশের সহযোগিতায় আল মদিনা নামের পরিবহন সংস্থার একটি বাসে এই শ্রমিকদের প্রেরণ করা হয়। এসময় তাদের হাতে পাউরুটি, বিস্কুট, কলা, একটি পানির বোতল ও মাস্কসহ একটি প্যাকেট শ্রমিকদের হাতে তুলে দেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি এমপি।
উল্লেখ্য, এর আগে কৃষি শ্রমিকদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় এবং করোনা পরিস্থিতি নিয়ে শ্রমিকদেরকে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক নির্দেশনা দেয়া হয়।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে জেলায় জেলায় লকডাউন থাকায় শষ্যভান্ডার খ্যাত সুনামগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চলে কৃষি শ্রমিকের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। দেশে খাদ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে সময়মত ধান কাটা প্রয়োজন। তদুপরি আসন্ন সম্ভাব্য ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা ব্যাহত হতে পারে এমন আশংকায় সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিভিন্ন জেলায় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। গাইবান্ধা জেলা থেকে গাজীপুরে ৫শ ১৫জন কৃষি শ্রমিক পাঠানো হয়।
গাইবান্ধায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উদাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ বুড়াইল গ্রামে মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ বজ্রপাতে সাইদুর রহমান (২৪) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সে ওই গ্রামের ফারুক মিয়ার পুত্র।
জানা গেছে, সাইদুর রহমান সহ অপর দু’জন নির্মাণ শ্রমিক উড়িয়া ইউনিয়নে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে পার্শ্ববর্তী কাঠুর বিলের কাছে এসে পৌঁছালে আকাশ কালো মেঘে ঢেকে যায়। রাতে হঠাৎ বজ্রপাত ঘটলে ঘটনাস্থলেই ফারুক মিয়ার মৃত্যু হয়। এসময় তার সাথে থাকা ওমর ফারুক ও মিন্টু মিয়া নামের অপর দুইজন আহত হয়। উদাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অপরদিকে আজ বুধবার সকালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে দরবস্ত ইউনিয়নে তালুকরহিমাপুর গ্রামে বজ্রপাতে জাদু মিয়া (২৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এদিকে ফুলছড়িতে বজ্রপাতে আমছের আলী (৫৫) নামে ১ ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের পূর্ব আলগার চর গ্রামের নয়া আকন্দের পুত্র। অন্যদিকে গাইবান্ধা সদর উপজেলার মোল্লারচরে হাসমত আলি (৬০) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। হাসমত জমিতে পাট বীজ বোনার সময় বজ্রপাতে মারা যায়।
গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ২০১১ জন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় গত ২৪ ঘন্টায় আজ বুধবার করোনা ভাইরাসে নতুন করে কেউ আক্রান্ত হয়নি। করোনা ভাইরাস সন্দেহে হোম কোয়ারেন্টাইনে বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৬ জন। এদিকে জেলায় সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও ১৩ জন রয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এসব রোগীরা সবাই গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের আইসোলেসনে রয়েছে।
জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় ২ হাজার ১১ জন চিকিৎসাধীন রোগী হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরগঞ্জে ৪৮, গোব্দিন্দগঞ্জে ৩৫৪, সদরে ৩৩৩, ফুলছড়িতে ৪২২, সাঘাটায় ৫২১, পলাশবাড়িতে ২৬, সাদুল্যাপুর উপজেলায় ৩০৭ জন। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ১১৬ জন রয়েছে বলে সিভিল সার্জন সুত্রে জানা গেছে।