মঙ্গলবার ● ৫ মে ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » শান্তি- কারো বিক্রি করা অস্তিত্বের ট্যাবলেট নয়
শান্তি- কারো বিক্রি করা অস্তিত্বের ট্যাবলেট নয়
রাজস্থলী (রাঙামাটি) প্রতিনিধি :: বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংস হচ্ছে পার্বত্য চট্রগ্রাম দক্ষিন। উত্তর পূর্বাঞ্চলে বন ভূমি বিস্তৃত এলাকা জুড়ে প্রাকৃতিক সম্পদ সবুজ পাহাড় পর্বত নদী খাল বিল জীব বৈচিত্র্য ঘিরে নিয়ে এই রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস। জীবন এক বেঁচে থাকার সংগ্রাম। অবিচল চিত্তে বিভিন্ন দুর্গম প্রান্তে যুগ যুগ ধরে বসবাস করছে। এদের প্রধান জীবিকা জুম চাষা। এর পাশাপাশি এখন শাকসবজি ফলজ বনজ চাষাবাদ করে সারাবছর অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই শোষনীয় পাহাড়ে উচু নিচু বেয়ে সারাদিন ঘন্টা পর ঘন্টা পায়ে হেটে বিভিন্ন ফল মূল শাকসবজি বহন করে নিয়ে আসে সপ্তাহিক হাট বাজারে। কিন্তু দু:খের সাথে বলতে পরিশ্রমের তুলনায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত এই জনগোষ্ঠী।
প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সাথে লড়াই করে যুদ্ধের ময়দানে বেঁচে থাকা। সাধারন ম্রো, মুরুং, চাক, খুমি রা এখনো যে শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে তা বাস্তবে গ্রামে বা পাড়া না গেলে কেউ বুঝতে পারবে না। কারণ সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।
অন্যদিকে পাহাড়ে প্রাকৃতিক সম্পদ ধবংস হয়ে যাচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী, পাহাড় খেকোদের দুর্নীতিবাজ কর্তাদের কারণে। এই পাবর্ত্য চট্রগ্রামের ধীরে ধীরে জীব বৈচিত্র্য রুপ প্রকৃতি সৌন্দর্য বিলুপ্ত প্রায়। এর সমাধান কোথায় কেউ তো জানি না শুধু বিবেকের কাছে হাজার প্রশ্ন ছাড়া কোনো ভাষা নেই । আমাদের নিজের ঐতিহ্যগত সামাজিক আচার বৈশিষ্ট্য সংস্কৃতি মাতৃভাষা চর্চা ধর্মীয় চর্চা মনোভাব কোনদিকে যাচ্ছে এখনো কেউ সঠিক বলতে পারে না।
পৃথিবীতে শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি দেশ সমাজ এগোতে পারেনা। আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন আর শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। কিস্তু পাহাড়ের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সম্প্রদায়ের দুটোরই সমান অভাব। আমরা সকলে ও মৌলিক বা মানবাধিকার নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। কিন্তু দুর্গম ম্রো পাহাড়েরর মানুষ এখনো জানেনা মানবাধিকার কি ? ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির প্রত্যাশা ছিল পার্বত্য এলাকার মানুষ সকলে সমান সুযোগ সুবিধা পাবে, রক্তের মূল্য ভালোবাসা আর অধিকারের শিক্ষা লাভ করবে। উৎপাদিত পণ্যর ন্যায্য মূল্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, মানবাধিকার আর্থসামাজিক অবস্থা দূরে থাক , ঘটনা ঘটেছে বিপরীত -পাহাড়ের রক্ত ক্ষয় বৃদ্ধি পেয়েছে, খুন হত্যা,অপহরন গুম, ধষর্ণ বেড়েই চলছে। এক গ্রুপের বদৌলতে ৬গ্রুপ নিরীহমানুষের রক্তচুষে দিন দিন তাদের করছে আরো নিরীহ আরো শোষিত। তারপরও দুর্গম পাহাড়ের মানুষ বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা থেকে বারবার উচ্চারণ করে শান্তি চাই স্বাভাবিক মুত্যুর শান্তি, শান্তি চাই কষ্টার্জিত অর্থ ভোগ করতে পারার শান্তি । পাহাড়ের সাধারন মানুষ বুঝতে পেরেছে শান্তি কোন চুক্তির হয়না, শান্তি কোন রাজনীতির হয় না, শান্তি কোন কারো বিক্রি করা অস্তিত্বের ট্যাবলেট হয় না।