শুক্রবার ● ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » গাজিপুর » কালীগঞ্জে সাধু আন্তনির তীর্থোত্সব
কালীগঞ্জে সাধু আন্তনির তীর্থোত্সব
গাজীপুর প্রতিনিধি ::(আপলোড ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫.৪৪ মিঃ) গাজীপুরের কালীগঞ্জে বিপুল উত্সাহ উদ্দীপনায় পালিত হলো খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উত্সব সাধু আন্তনির তীর্থোত্সব৷ ‘তারই জয়গানে মুখর ধরণী’ এ স্লোগানে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের পানজোরা গ্রামে দুই দফায় খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়৷ তীর্থ যাত্রীদের আগমনে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে গানে গানে মুখরিত হয়ে উঠে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন৷
৫ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার সকালে নাগরী ধর্মপল্লী পালকীয় পরিষদের উদ্যোগে কালীগঞ্জ উপজেলার পানজোরা গ্রামে এই তীর্থোত্সবের আয়োজন করা হয়৷
তীর্থোত্সবের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে কয়েক হাজার খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী নর-নারী অংশ নেন৷ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মনিরুজ্জামান, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ৷
পাদুয়ার সাধু আন্তনি ‘পৃথিবীর সাধু’ হিসেবে পরিচিত৷ সর্বজন প্রিয় এই সাধু আন্তনি ছিলেন ঐশীজ্ঞানের আঁধার, মঙ্গল সমাচারের সুদক্ষ প্রচারক, নিঃস্ব অসহায় মানুষের বন্ধু, পাপীর মন পরিবর্তন, রোগীদের সুস্থতাকারী বহুগুণে গুনান্বিত এক মহান সিদ্ধ পুরুষ৷ বিগত প্রায় আটশত বছর ঈশ্বর তাঁর এই বিনীত সেবকের মধ্য দিয়ে ভক্তপ্রাণ মানুষকে অসংখ্য অনুগ্রহ দান করেন৷ তাই সাধারণ মানুষ জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনে তাঁর মধ্যস্থতা কামনা করেন৷ পানজোরাতে অবস্থিত সাধু আন্তনির তীর্থস্থানে আজও জাতী-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ তাঁর মধ্যস্থতায় ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভের জন্য আসেন৷ অনেকে বিপদাপদে নিজেরা সাধু আন্তনির মধ্যস্থতা কামনা এবং প্রিয়জনদের তাঁর শরনাপন্ন হতে পরামর্শ দেন৷ অনেকেই পালা গানের মাধ্যমে, নভেনা করে, তীর্থ করে, মানত করে সাধু আন্তনির গুণগান করে থাকেন৷ সাধু আন্তনির অসংখ্য ভক্তের ভক্তির শ্রোতধারা যেন আরো শক্তিশালী হয়ে উঠে এ কামনা তীর্থোত্সবে আগত সাধু আন্তনি ভক্ত তীর্থ যাত্রীদের৷
সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সকালে শীতের হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে হাজার হাজার তীর্থযাত্রীর আগমনে সময় বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে জনসমুদ্রে পরিনত হয় নাগরী ধর্মপল্লী পালকীয় পরিষদ প্রাঙ্গন৷ তীর্থোত্সবটি শুধুমাত্র খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের হলেও উত্সবে অংশ নেয় বিভিন্ন জাতী ধর্মের হাজার হাজার নর-নারী৷ সকালে দু’টি পর্বের তীর্থোত্সবে আরতি আগমণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা৷ পরস্পর আরতি শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর শুরু হয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বাণী পাঠ ও উপদেশ৷ খ্রিস্ট প্রসাদ বিতরণ শেষে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপনী আশির্বাদ জ্ঞাপন করেন দ্বিতীয় পর্বের প্রার্থনা পরিচালনাকারী ঢাকার আর্চ বিশপ পেট্রিক ডি রোজারিও৷
প্রথম পর্বের তীর্থোত্সব প্রার্থনা পরিচালনা করেন ঢাকার সহকারী বিশপ থিউটনিয়াস গমেজ৷ এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ফাদার, ব্রাদারসহ উপজেলার ৫টি মিশনের ফাদার ও ব্রাদারগণ৷