শুক্রবার ● ৮ মে ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই : মিলছে না শ্রমিক
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই : মিলছে না শ্রমিক
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট প্রতিনিধি :: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট’সহ ১০ জেলার উপজেলায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। কাঙ্খিত ফসল ঘরে তোলার স্বপ্নে এখন বিভোর কৃষক।এখানে বর্তমানে দেড় মন ধানের টাকায়ও একজন কাঙ্খিত শ্রমিক মিলছে না।যে ধানকে ঘিরে কৃষকের বেঁচে থাকার স্বপ্ন ও আশা। সেই মাঠ ভরা ধানই এখন তাদের ঘাড়ের বোঝা হয়ে দাঁড়িছে। আজ শুক্রবার দুপুরে এমনটাই জানিয়েছেন এ উপজেলার বেশ কয়েকজন ধান চাষি।কুরমনি গ্রামের ধান চাষি খোকন রানা, রঞ্জন বসু, মুন্না শেখ, সুধাংশু মন্ডল, সুমন ফরাজী, পাটরপাড়ার ইউনুস বিশ্বাস, শ্রীরামপুরের তাপস ভক্ত ও ডুমুরিয়ার বিপ্লব বাড়ৈসহ অনেক কৃষক জানান, এ উপজেলায় এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ভরা মৌসুম চলছে। প্রতিবছর বিভিন্ন অঞ্চলের পরবাসি দাদারা (ধান কাটা শ্রমিক) দলবেধে এসে ধান কেটে মাড়াই ও ঝেড়ে শুকনা করে গোলায় ভরে দিয়ে যেত। কিন্তু এবার করোনার কারণে তারা কিছুতেই আসতে রাজি হচ্ছেন না। তাই মাঠের পাকা বোরো ধান নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন। অন্যদিকে কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির দাপটে ক্ষেতের ধান ঝরে ও পানিতে পড়ে তারা চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তবুও কাঙ্খিত ধান কাটা শ্রমিক মিলছে না।তারা গ্লানি ভরা কণ্ঠে আরও জানান, এখানে বর্তমানে প্রতিমন ধান বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৪০ টাকা দরে। অথচ একজন ধান কাটায় অযোগ্য শ্রমিকেরও মুজুরি দিতে হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা। সাথে দুই বেলার খাবার। কাজ করে সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত। তাতে কৃষকের চরম লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই মাঠ ভরা পাকা ধানই এখন তাদের ঘাড়ের বোঝা হয়ে দাঁড়িছে।
অপরদিকে, খড়মখালি গ্রামের ধান চাষি পরিমল মজুমদার, কংকন মজুমদার, মনিমহোন হীরা, অসীম বিশ্বাস, কৃষ্ণ রানাসহ অনেকে বলেন, ধানের দাম আছে ৬০০ টাকা মন। আর শ্রমিক আনতে গেলে কেউ ৯০০ টাকার কমে কাজে আসতে চায় না। এবার ধান চাষ করতে আমাদের একর প্রতি খরচ আছে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা। খুব ভালো ফলন হলে প্রতি একর জমিতে ৭৫ থেকে ৮০ মন ধান উৎপাদন হয়। হাজার টাকার কমে ধানের মন বিক্রি করলে চালান উঠবেনা।
কৃষি বিভাগ বলছে, বাগেরহাটে এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। করোনার প্রভাবে শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উপর নির্ভর করতে হবে। ইতিমধ্যে ভর্তুকি মূল্যে কিছু রিপার (ধান কাটার যন্ত্র) বিতরণ করা হয়েছে।
বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে মতে, বাগেরহাট জেলার ৯টি উপজেলায় এবছর ৫২ হাজার ৯৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৫০ হেক্টর, ফকিরহাটে ৮ হাজার ২০০ হেক্টর, মোল্লাহাটে ৮ হাজার ৩২০ হেক্টর, রামপালে ৪ হাজার ৭৫ হেক্টর, কচুয়ায় ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর, মোরেলগঞ্জে ৫ হাজার২০ হেক্টর, চিতলমারী ১১ হাজার ৪৭০ হেক্টর, শরণখোলা ৮৫ হেক্টর, মোংলায় ৫ হেক্টর জমিতে ফসক। এর মধ্যে ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (হাইব্রীড) এবং বাকী জমিতে স্থানীয় জাতের ধানের চাষ হয়েছে। এবছর ২ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিকটন বোরোর আবাদ হবে বলে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের দশ জেলায় ৬ লাখ ৮২ হাজার ৯৩৭ হেক্টর জমিতে ১৭ লাখ ৭১ হাজার ৫২৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
জেলাওয়ারী রোপা ধান চাষ ও উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা হচ্ছে- যশোর জেলায় ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে ৩,৫২,৫৩৭ মেট্রিক টন, নড়াইল জেলায় ৩০ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে ৭৫ হাজার ৬৩৩ মেট্রিক টন, ঝিনাইদহ জেলায় ৮৭ হাজার ৯২ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৩ মেট্রিক টন, মাগুরা জেলায় ৫০ হাজার ২২৬ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৬৪ মেট্রিক টন, কুষ্টিয়া জেলায় ৭৫ হাজার ৪৩ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৩২ হাজার ৯০ মেট্রিক টন, মেহেরপুর জেলায় ২৩ হাজার ৮০৪ হেক্টর জমিতে ৬৪ হাজার ১৬১ মেট্রিক টন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৪২ হাজার ৩৯১ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৭৮ মেট্রিক টন, সাতীরা জেলায় ৯৮ হাজার ৯৯৩ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৭৩৯ মেট্রিক টন, খুলনা জেলায় ৭৫ হাজার ৩৫৪ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৮৫ মেট্রিক টন এবং এবছর ২ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিকটন বোরোর আবাদ হবে বলে লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আবাদ কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছেন। কৃষি ব্যাংকসহ সকল বাণিজ্যিক ব্যাংক আবাদ কার্যক্রম সফল করতে কৃষকদের জন্য প্রয়োজনীয় লোনের ব্যবস্থা করে রেখেছে।
বোরোর এই বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটলেও দেখা দিচ্ছে শ্রমিক সংকট। আকাশে একটু মেঘ দেখলেই চাষীদের চিন্তা বেড়ে যাচ্ছে। কিভাবে তারা সোনার ফসল ঘরে তুলবে।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকতা ঋতুরাজ সরকার মুঠোফোনে বলেন, এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ২১ টি ব্লক রয়েছে। এখানে এ বছর প্রায় ৩০ হাজার একর জমিতে বেরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের ফলন হয়েছে বাম্পার। কমপক্ষে ২৫-৩০ হাজার কৃষক পরিবার এই বোরো ধানের চাষের সাথে জড়িত। এখানে এ বছর ৮০ হাজার মেট্রিকটন ধান কৃষকের ঘরে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু করোনার কারণে এবার অনেক চাষিই করোনার ভয়ে বাইরের ধানকাটা শ্রমিক আনতে রাজি না। আবার অনেক শ্রমিক আবার আসতে রাজি না। যার কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপহার খাদ্য সামগ্রী ৩ শত শ্রমিকের মাঝে বিতরণ
বাগেরহাট :: বাগেরহাটেরমোরেলগঞ্জে ৩ শত শ্রমিককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া উপহার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. শাহ্-ই-আলম বাচ্চু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক এ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।
এ সম্পর্কে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, ভ্যান, ইজিবাইক ও বাস শ্রমিকদের কষ্টেসৃষ্টে দিন কাটছে। তাই বিভিন্ন গ্রামের ৩ শত শ্রমিকের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া চাল, ডাল বিতরণ করা হয়েছে।
নির্মাণ শেষ না হতেই তিনটি ব্রিজেফাটল ৭০ লাখ টাকা উত্তোলনে মরিয়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শেখ সাইফুল ইসলাম কবির.সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার,বাগেরহাট:বাগেরহাটের মংলায় তিনটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই একাধিক ফাটল দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাটল লাগা স্থান সমূহে দ্রুত সিমেন্ট বালুর প্রলেপ দিয়ে সরকারি কোষাগারের প্রায় ৭০ লাখ টাকার বিল উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে । অভিযোগ উঠেছে ওই ব্রীজ তিনটি নির্মাণ কাজে নি¤œমানের উপকরণ ও নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইতিমধ্যে ব্রীজ নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেছেন।
জানা গেছে , ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে মংলায় গ্রামীণ রাস্তায় সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। সরকারের এ প্রকল্পের আওতাধীন মংলার চাঁদপাই ইউনিয়নে ২টি ও সুন্দরবন ইউসিয়নে ১টি গ্রামীণ ব্রীজের কাজ ভাগিয়ে নেয় মেসার্স মাহাতাব এন্টারপ্রাইজ নামের স্থানীয় একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রথম পর্যায় কার্যাদেশ পাওয়ার পর ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালের ১৯ আগষ্ট উপজেলার দক্ষিণ চাঁদপাই খানজাহান বিদ্যালয় সংলগ্ন খালের ওপর ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৫ ফুট প্রস্থ ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু করে। প্রায় ১৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় মূল্যের এ প্রকল্পের কাজ একই অর্থ বছরের ২ অক্টোবর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময় সম্পন্ন করতে পারেনি। চলতি বছরের মার্চে প্রায় ৫ মাস পর দায়সারা এ সেতুর কাজ শেষ করে ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হতে না হতেই পিলারসহ একাধিক স্থানে ফাঁটল দেখা দেয়। জনরোষের মুখে শেষ পর্যন্ত ফাঁটল লাগা স্থান সমুহে কোনমতো সিমেন্ট বালুর প্রলোপ দিয়ে লোক চক্ষুর আড়ালে সটকে পড়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি। একই অর্থ বছরে ও প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে কার্যাদেশ পাওয়া ৩২ লাখ ৪১ হাজার টাকা প্রাক্কলিত মূল্যের অপর একটি ব্রীজের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১৯ আগষ্ট । মাকড়ঢোন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাঁশতলা খালের ওপর ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এ ব্রীজটির নির্মাণ কাজেও নেয়া হয়েছে নানা অনিয়মের আশ্রয়। এ ব্রীজের কাজটিও ২০১৯ সালের ১৭ অক্টেবর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। নির্ধারিত সময়ের পর চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল মাসে ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়। আর গত সপ্তাহে ব্রীজের দুই প্রান্তে মাটি ভরাট ও লেভেল কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। এরই মধ্যে হঠাৎ করেই ব্রীজের দু’ প্রান্তের পিলার, বেজ, ওয়াল ও স্লাবে ৬/৭টি ফাঁটলের দেকা দেয়। আর ব্রীজটির এ ফাঁটলের বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে আশপাশের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র উত্তেজনা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ,এই ব্রীজটি নির্মাণেও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্রীজের দু’প্রান্ত হতে অপরিকল্পিতভাবে মাটি খনন করা হয়েছে। এতে ব্রীজ সংলগ্ন বেশ কয়েকটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঠিকাদারের অপরিকল্পিত মাটি উত্তোলনে আশপাশের বসতঘর, দোকানপাট খালের মধ্যে ঝুঁকে পড়েছে। এমনকি একটি পরিবারের পারিবারিক কবরস্থানও এখন খালের পেটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অপরদিকে সুন্দরবন আইনিয়নের কচুবুনিয়া খালের উপর প্রায় ১৮ লক্ষাধিক টাকার ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের ব্রিজটিতেও ব্যাপক অনিয়ম ও নিন্ম মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিাকাদরী মেসার্স মাহাতাব এন্টারপ্রাউজ এর নামে।ওই দুটি ব্রীজের প্রাক্কলিত ব্যায় ও বিলের অর্ধকোটি টাকা উত্তোলনের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে।
এ বিষয় মংলা উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তার মোঃ নাহিদুজ্জান দাবি করেন, মাটি খনন কাজে অদক্ষতার অভাবেই প্রতিষ্ঠানটির নির্মানাধীন ব্রীজে ফাঁটল দেখা দিয়েছে।
প্রসূতির ভ্যানের উপর সন্তান প্রসব, ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশের সহায়তায় চিকিৎসা
বাগেরহাট :: বাগেরহাটে ক্লিনিকে নেওয়ার পথে সড়কের উপর নিপা মন্ডল নামের এক প্রসূতি নারী সন্তান প্রসব করেছেন। শুক্রবার বাগেরহাট শহরের পৌরসভা সড়কের অসীম সাহার ভাড়াটিয়া বাসা থেকে বের হয়ে এক ক্লিনিকে যাওয়ার পথে ভ্যাণের উপর একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন ওই নারী। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি ত্রিপল নাইনে ফোন দিলে বাগেরহাট সদর থানা পুলিশ এসে ওই নারীকে ঐ ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে মা ও শিশু সুস্থ্য রয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্লিনিকের পরিচালক ডা. এস কে কাইয়ুম।
প্রসূতি নিপা মন্ডল মোরেলগঞ্জ উপজেলার লক্ষিখালী গ্রামের অমৃত মন্ডলের স্ত্রী। সে বাগেরহাট শহরে মা-বাবার সাথে ভাড়াটিয়া বাসায় থাকতেন। তার স্বামী অমৃত মন্ডল ধান কাটার শ্রমিক হিসেবে ১৫ দিন আগে চিতলমারীতে গেছেন।
নিপা মন্ডলের মা বিথি বাছার বলেন, ভোর ৫টার দিকে মেয়ে নিপার প্রসব বেদনা হলে ভ্যানযোগে আমরা তাকে পার্শ্ববর্তী ক্লিনিকে নেওয়ার জন্য রওনা হই। সেখানে পৌছানোর আগেই ভ্যানের উপর কন্যা সন্তান প্রসব করে নিপা। পরে পুলিশ এসে আমাদেরকে মুক্তি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। তারা অনেক সহযোগিতা করেছেন।আমরা এখন ভাল আছি।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাহতাব উদ্দিন শিকদার বলেন, ত্রিপল নাইনে খবর পেয়ে এসআই কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনা স্থলে পৌছে নবজাতক ও তার মাকে আমরা ক্লিনিকে নিয়ে যাই। সেখানে চিকিৎসকদের সাথে কথা বলে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করি। তাদেরকে পুলিশের পক্ষ থেকে পুষ্টিকর খাবার ও নগদ অর্থ সহায়তা করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আমরা যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ১মাস পর বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ আদায়
বাগেরহাট :: দেশব্যাপি মহামারী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব বজার রেখে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট’সহ ১০ জেলার উপজেলার সকল মসজিদগুলোতে জুমার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
মরন ঘাতক এ ভাইরাসের প্রভাবের প্রায় একমাস পর শুক্রবার বাগেরহাটের সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদে জামাতে জুমার নামাজ আদায় করার সুযোগ পেয়েছেন। এতে খুশি হয়ে মুসুলল্লিরা মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে শুকুরিয়া আদায় কওে দোয়া ও মোনাযাত করেছেন।
দীর্ঘদিন পর মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করার সুযোগ পেয়ে বাগেরহাটে প্রতিটি মসজিদে ভিড় করেন মুসল্লিরা। পৌর কবরস্থান সংলগ্ন জামে মসজিদে একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেন প্রায় পাচঁ শতাধিক মানুষ। ৪ সপ্তাহ পরে মসজিদে জুমার নামাজ আদায়ে করার সুযোগ পেয়েছেন অত্র অঞ্চলের মুসল্লিরা।
শুক্রবার স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদগুলোয় জুমার নামাজ আদায় করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলার ৯উপজেলার সকল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করা হয়েছে। প্রত্যেকটি এলাকার মসজিদেই জুমার নামাজের সময়ই বিপুলসংখ্যক মুসল্লি মসজিদে জমায়েত হয়েছেন। তবে সবাই মসজিদে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখেই জুম্মার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকারী ভাবে গত মাসের প্রধম সপ্তাহ থেকে মসজিদে জুমা ও পাঞ্জেগানা নামাজে সাধারণ মুসল্লিদের অংশ নেওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন উপজেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে গত মাসের ২৩ এপ্রিল রমজানের তারাবির নামাজে ১০ জনের বেশি মুসল্লি অংশ নিতে পারবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। এদিকে ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য ১২টি শর্ত বেঁধে দেয় সরকার।
বাগেরহাট জেলার ৯উপজেলারও ৩ পৌরসভার প্রতিটি মসজিদে মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশ করা ও পবিত্র হওয়ার জন্য ওজু করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিধি ও সরকারের নির্দেশনা মেনে এবং ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মুসল্লিদেও সাবান দিয়ে হাত দোয়া ও মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে জীবাণুনাশক দিয়ে বাগেরহাটে প্রায় ২৫১৪টি মসজিদসহ সকল মসজিদে জীবানু নাশক ওষুধ দিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করেছেন মসজিদের খাদেমরা।