শুক্রবার ● ৮ মে ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে করোনা রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড় : ৩৩ রোগীর রিপোর্ট যশোরে পজেটিভ, ঢাকায় নেগেটিভ
ঝিনাইদহে করোনা রিপোর্ট নিয়ে তোলপাড় : ৩৩ রোগীর রিপোর্ট যশোরে পজেটিভ, ঢাকায় নেগেটিভ
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) থেকে পজেটিভ হওয়া ঝিনাইদহের ৭ ডাক্তার, নার্সসহ ১৫ রোগীর দ্বিতীয়দফা রিপোর্ট ঢাকা থেকে নেগেটিভ এসেছে। শুক্রবার দুপুরে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম এ তথ্য জানান। তিনি বলেন যবিপ্রবি থেকে পজেটিভ হওয়া ঝিনাইদহের ৩৩ করোনা রোগীর নমুনা ৩, ৭ ও ১৪ দিনের ব্যাবধানে আমরা ঢাকায় পাঠিয়েছিলাম। ঢাকা থেকে ১৫ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। বাকী ১৮ জনের ফলাফলও চলে আসবে। যবিপ্রবি’র রিপোর্ট নিয়ে কোন সন্দেহ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন সেলিনা বেগম জানান, বিষয়টি যবিপ্রবি কর্তৃপক্ষই ভাল বলতে পারবেন। তবে চিকিৎসকদের একটি সুত্র জানায়, পজেটিভ থেকে নেগেটিভ হওয়া রোগীরে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল আক্রান্ত হওয়ার ৩দিন, ৭দিন ও ১৪ দিন পর। ডাক্তারদের অভিমত করোনা ভাইরাস তার ক্যারেক্টার পরিবর্তন করে অটোমেটিক নেগেটিভ হতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, করোনা আক্রান্ত রোগীর রক্ত ল্যাবে বসানের আগ পর্যন্ত ভাইরাস তার চরিত্র পরিবর্তন করতে পারে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) থেকে পজেটিভ হওয়া ঝিনাইদহের ১৫ রোগীর রিপোর্টের ক্ষেত্রে এমন হতে পারে। এদিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে যবিপ্রবিতে পজেটিভ হওয়া রিপোর্ট ঢাকায় নেগেটিভ হওয়ার ঘটনায় পরীক্ষার মান নিয়ে কোন কোন মহল প্রশ্ন তুলছে। এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে ঝিনাইদহ থেকে পাঠানো করোনার ১৪টির নমুনার ফলাফল এসেছে যবিপ্রবি থেকে। যার সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা বিষয়ক মুখপাত্র ডাক্তার প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে ঝিনাইদহের শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবিরপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম (৬০) নামের এক ব্যক্তি করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার বাড়ি কবিরপুর গ্রামে। শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথের সার্বিক তত্বাবধানে ঝিনাইদহ ইসলামী ফাউন্ডেশনের লাশ দাফন কমিটির সদস্যরা শহিদুলের লাশ দাফন করেন।
সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রান তাহলে কাদের জন্য ?
ঝিনাইদহ :: করোনা ভাইরাসের কবলে গোটা দেশের অসহায় কর্মহীন মানুষেরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এমতবস্থায় ভয়ঙ্কর অমানবিক চিত্র দেখা গেল ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের একটি সরকারি আবাসন প্রকল্পে। সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার ৩ নম্বর কুশনা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড’র ঘাঘা তালসার এলাকায় গৃহহীনদের জন্য একমাত্র আবাসন প্রকল্পে ২০টি পরিবার থাকার কথা থাকলেও, বর্তমানে বসবাস করছেন ১৬টি পরিবার। করোনা পরিস্থিতিতে অসহায় কর্মহীন আবাসনের বাসিন্দারা জানান, লকডাউনে প্রায় ৬২ দিন অতিবাহিত হলেও, এখনও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোন ত্রাণ সহায়তা আমরা পাইনি। তাদের প্রশ্ন, সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রান তাহলে কাদের জন্য? আবাসনের জালালের ছেলে মোবারক হোসেন জানান এলাকার মেম্বার সাহেব বললেন তোমরা ত্রাণ পাবার যোগ্য না। তিনি আরো জানান, আমি দশ বছর ওখানে বসবাস করছি কিন্তু কোন সময়ই এধরনের সহায়তা পায়নি। এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বার আবুল বাশার বলেন তিনটি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। আমার ভাগে ত্রাণ সীমিত বরাদ্দের কারনে বাকি পরিবারকে ত্রাণ দিতে পারেননি। কুশনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান জানান, সবকিছু আমার একার পক্ষে দেখা সম্ভব না বিধায় ওই এলাকার মেম্বার ও নেতাকর্মীদের উপর দায়িত্ব দিয়া আছে। তাছাড়া আরো জানার দরকার থাকলে উপজেলা থেকে লিস্ট উঠিয়ে দেখেন, বলে ফোন কেটে দেন। এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, নাজনীন সুলতানা বলেন, বিষয়টি আমার নখদর্পণের বাইরে ছিল। জানতে পারলাম খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এদিকে আবাসন বাসিন্দারা স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে বলেন ভাইরাস জনিত স্বাস্থ্য বিষয়ে মেম্বার, চেয়ারম্যান কিংবা স্থানীয় কোন জ্ঞানী সচেতন ব্যক্তিও আমাদেরকে কিছুই বলেননি। তাছাড়া ভাতের ব্যাবস্থায় হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে মানবো ? ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মোহাম্মদ বিপুল বলেন প্রত্যেক মাসে একবার ওখানে যায়। এ মাসেও যাব। প্রয়োজনে রেজুলেশন খাতা চেক করুন জানিয়ে করোন ভাইরাস সচেতনতার বিষয়টি সুকৌশলে এড়িয়ে যান। এ সময় উপস্থিত আবাসনের বাসিন্দারা সাংবাদিকদের বলেন আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আকুল আবেদন; আমাদের ক্ষুধা নিবারণের ব্যবস্থার পাশাপাশি মানবিক জীবন-যাপনের সুব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছি।
শৈলকুপায় করোনা উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় করোনা উপসর্গ নিয়ে শহিদুল ইসলাম (৬০) নামের এক চা দোকানদারের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি শৈলকুপা শহরের কবিরপুর গ্রামে। বুধবার কাঁশি, শ্বাসকষ্ট ও পেট ব্যাথা নিয়ে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা সন্দেহে তাকে আইসোলেশনে রাখে। বৃহস্পতিবার রাতে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার ইসলামীক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খানের তত্বাবধানে তার জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হয়। ঝিনাইদহ ইসলামীক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খান বলেন, জেলা প্রশাসক জনাব সরোজ কুমার নাথের নির্দেশক্রমে শুক্রবার বাদ জুম্মা ইসলামীক ফাউন্ডেশনের তত্বাবধানে তার নামাজে জানাযা ও পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। জানাযা নামাজে ইমামতি করেন ইমাম প্রতিনিধি মাও: মো: খাইরুল ইমলাম। সেসময় উপস্থিত ছিলেন ফিল্ড সুপার ভাইজার আব্দুর রাজ্জাক। মৃত ব্যক্তির জানাযা ও দাফনের সার্বিক সহযোগিতা করেন শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম।
কালীগঞ্জে অধিকাংশ দোকানপাট খুলল ব্যবসায়ীরা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা শহরটি মাত্র দু’দিন আগেও ছিল শুনশান নীরবতায় ভরপুর। কিন্তু সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও শপিং মল খুলে দেবার সরকারি সিদ্ধান্তের পর পাল্টে গেছে কালীগঞ্জ শহরের চিত্র। সরকার ১০ মে থেকে সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও শপিং মল খুলে দিবার সিদ্ধান্ত নিলেও সেটা মানছেন না কেউ। শুক্রবার সকাল থেকে কালীগঞ্জ শহরের অধিকাংশ দোকানপাট খোলা হয়েছে। ফুটপথেও বসানো হয়েছে দোকান। শহরের প্রানকেন্দ্রে মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে বাজারমুখী সড়কটি ছিল ব্যাপক যানজটে ভরপুর। বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন সব চিত্র। দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা। আক্রান্ত হচ্ছে শত শত মানুষ। ঠিক সেই সময় দোকানপাট শপিং মল খুলে দিয়ে বাজারে জনসমাগন ঘটানো মানে করোনাকে আলিঙ্গন করে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হওয়া। এতে করে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞজনেরা। সরকারি সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্ধারিত ১০ মে’র আগে দোকানপাট ও শপিং মল খোলা হলেও স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানাগেছে। কালীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা ফরিদ উদ্দীন জানান, দীর্ঘদিন ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ থাকায় বিশেষ করে ক্ষুদ্র অনেক ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েছে। যার কারণে অনেকে দু’একদিন আগেই সীমিত আকারে দোকানপাট খুঁলছে। তবে সামাজিক দুরত্ব ও স্বাস্থ্য বিধি মেনেই ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। নির্ধারিত তারিখের আগেই দোকানপাট খুলে দেওয়া ও বাজারে জনসমাগন বৃদ্ধির ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবর্ণা রানী সাহা জানান, সরকার যখন সবকিছু শিথিল করে দিচ্ছে সেখানে আমাদের সেটা বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে।
নীলফামারীর মাদক ব্যবসায়ী ঝিনাইদহে গ্রেফতার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ কেন্দ্রিয় বাস টার্মিনাল থেকে ফেন্সিডিলসহ ০১ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬। শুক্রবার (০৮ মে ২০২০ ইং) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিপিসি-২, র্যাব-৬ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল কোম্পানী কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মাসুদ আলম এর নেতৃত্বে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানাধীন ঝিনাইদহ বাসটর্মিনাল এলাকায় মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে নীলফামারী জেলার জলঢাকা থানার পশ্চিমবালা গ্রামের মৃত শাহআলম সরকাররের ছেলে সুমন সরকার (৩০) কে গ্রেফতার করে র্যাব-৬। তার কাছে থেকে ৬০ বোতল ফেন্সিডিল, ২ টি মোবাইল সেট, ৩ টি সীম কার্ড উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত উদ্ধারকৃত আলামত ও গ্রেফতারকে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানায় হস্তান্তর করে।