বুধবার ● ১৩ মে ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » তঞ্চঙ্গ্যা কী- বোর্ড তৈরি করলেন অরুণ তঞ্চঙ্গ্যা
তঞ্চঙ্গ্যা কী- বোর্ড তৈরি করলেন অরুণ তঞ্চঙ্গ্যা
রপ্তদীপ চাকমা রকি :: বাংলাদেশে বসবাসরত পার্বত্য চট্টগ্রামে ১১ টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের তাত্বিক জাতি সত্তা রয়েছে।নিজস্ব ভাষা ,সংস্কৃতি, কৃষ্টি, পোষাক পরিচ্ছদ , জীবনাচরন এবং ধর্মীয় বিশ্বাস । তাই ১১ টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে “তঞ্চঙ্গ্যা “জাতি একটি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠী । এ জাতির রয়েছে তার নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য । একটি জাতি তার সত্তা পরিচয়ের প্রধান মাধ্যম তার নিজ মাতৃভাষা। তাই একজন অরুণ তঞ্চঙ্গ্যা তার স্বপ্ন পূরনে মাতৃভাষার বর্নমালাকে কম্পিউটারে ব্যবহারোপযোগী করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ চেষ্টারপর মাতৃভাষার বর্ণমালার ফন্ট কী-বোর্ড তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। আর এ কীবোর্ডের নাম দিয়েছেন অরুন তঞ্চঙ্গ্যা কী বোর্ড। এ কী বোর্ডের মাধ্যমে বর্তমানে তিনি মোবাইলে ব্যবহার উপযোগী বলে জানিয়েছে। তিনি ২০০৫/২০০৬ সালের দিকে আইটি বিশেষজ্ঞ বাংলার বিজয় কী-বোর্ডের উদ্ভাবক বর্তমাব ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার এর কাছ থেকে কাজ শিখা ও কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন।তিনি জানান তখন Bijoy Changma নামে একটি ফন্ট ছিল উনার বিজয় কী বোর্ডে। তখন তার মনের এক কোনে ইচ্ছা হয়েছিল সেও তার মাতৃভাষা তঞ্চঙ্গ্যা বর্নমালার ফন্ট তৈরি করবে। তখন তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শিখছিলেন আনন্দ মাল্টিমিডিয়া চট্টগ্রাম শাখায়। তাকে এই কাজে উৎসাহ এবং বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করছেন মনোজ, আর্য জ্যোতি ভিক্ষু, ও মৃনাল। তাদের অশেষ সহযোগিতায় এতটুকু করতে পেরেছেন বলে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। নিজ মাতৃভাষাকে টিকিয়ে রাখা এবং যুগোপযোগী করার এক মাইলফলক তঞ্চঙ্গ্যা জাতি সত্তার জন্য এই তঞ্চঙ্গ্যা কী-বোর্ড ও ফন্ট মাতৃভাষার চর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন। তঞ্চঙ্গ্যা সমাজে যারা গল্প, কবিতা, গান বা সাহিত্য চর্চা করে থাকেন তারাও আজ নিজ ভাষার বর্ণমালায় সাহিত্য চর্চা করার পথ প্রসারিত হবে।
বর্তমান বাংলাদেশ সরকার প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মাতৃভাষা শিক্ষা প্রোগ্রাম চালু করেছেন। সেক্ষেত্রে তঞ্চঙ্গ্যা মাতৃভাষা প্রোগ্রাম চালু হলে এই তঞ্চঙ্গ্যা কী-বোর্ড ও ফন্ট অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে তিনি মনে করেন। এই কম্পিউটার কী-বোর্ড ফন্ট আবিষ্কারে অরুন তঞ্চঙ্গ্যার অতিশয় আনন্দের ও গর্বের
বিষয় । এই ফন্ট মানুষের দৈনন্দিন কর্ম জীবনে প্রয়োগ হবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি উপজেলার জামুছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। দীর্ঘ বছর যাবৎ বেতন হীন ভাবে চাকরি করে আসছেন। তার পরেও তার জাতি উন্নয়নের একধাপ এগিয়ে গেলেন। একজন প্রতিভাবান ব্যাক্তি অরুণ তঞ্চঙ্গ্যার পেছনে আইটি সেক্টরের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। কম্পিউটার ব্যবহারে কী- বোর্ড তৈরিতে তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর এক উদ্ভাবনীয় ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিলেন এই অরুণ তঞ্চঙ্গ্যা।