সোমবার ● ১৮ মে ২০২০
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » গুচ্ছগ্রামের রেশন বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
গুচ্ছগ্রামের রেশন বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির আলুটিলা গুচ্ছগ্রামের রেশন বিতরণে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুচ্ছগ্রামের নিরীহ কার্ডধারীদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তদারকি কর্মকর্তা মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মো. মোহতাছিম বিল্লাহ্ গুচ্ছগ্রাম রেশন বিতরণ নীতিমালা তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছেমতো রেশন বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
তিনি নিজের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য প্রতি কার্ডধারীর কাছ থেকে কারিং খরচের এর নামে সরকারি নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে অতিরিক্ত ১০ টাকা করে নগদে আদায় করেছেন।
এ ছাড়াও প্রতি কার্ডধারীর রেশন তিন ডিও এর চাল প্রায় ১০৭ কেজি ৮৫০ গ্রামের স্থলে শুধুমাত্র ১০০ কেজি করে দিয়েছেন। বাকী প্রায় ৭ (সাত) কেজি ৮৫০ গ্রাম চাল রেশন কম দিয়েছেন। বিতরণ কার্যক্রমে যারা শ্রমিক হিসেবে মাপার দায়িত্ব পালন করেছেন তারা তদারকি কর্মকর্তা মীর মো. মোহতাছিম বিল্লাহ‘ এর আদেশে কার্ড প্রতি চাল ১০০ কেজি প্রদান করেছেন বলে স্বীকার করেন। আবার রেশন কার্ডধারীদের কাছ থেকে সরকার প্রদত্ত রেশনের বস্তা বাবতে নগদে ২০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। বস্তার দাম নেয়ার বিষয়টি এবারই প্রথম ঘটেছে এই কার্ডধারীদের রেশন বিতরণ ইতিহাসে।
সরেজমিনে গেলে বিভিন্ন কার্ডধারী ও স্থানীয় ভিডিপি ৩৫৪ নং রেশন কার্ডধারী হাবিলদার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, তার নামীয় রেশন কার্ডের রেশন, তার মা আকলিমা কার্ডধারী নং ৩০৫ সহ উভয়কে ১০০ কেজি করে রেশন প্রদান করা হয়েছে।
অনুরুপ একই প্লাটুনের এপিসি (রেশন কার্ড নং ৩৩৫ ) হাবীবুর রহমানকেও ১০০ কেজি রেশন প্রদান করা হয়েছে বলেও জানান। এ পিসি হাবীবুর রহমান প্রতিবাদ করলে তদারকি কর্মকর্তা মীর মো. মোহতাছিম বিল্লাহ তাকে শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করেন। পরে স্থানীয় কাউন্সিলর এসে তাকে তদারকি কর্মকর্তার হাত থেকে উদ্ধার করেন । এ ছাড়াও তিনি গাজীনগর মসজিদের ইমাম সহ অন্যান্য সাধারণ কার্ডধারীদের সাথেও রাগান্বিতভাবে অসৌজন্য মুলক আচারণ করেছেন বলেও জানা যায়।
৩৪৯ নং কার্ডধারী ভিডিপি মো. হাছানও রেশনের চাল ১০০ কেজি, কার্ডধারী ১৪১ খোদেজা বেগমের ছেলে মো.নাসির মিয়া , ১১২ নং কার্ডধারী মোজাম্মেল হক, ১৬১নং কার্ডধারী মাঝেদা বেগমের ছেলে মোঃ মফিজ মিয়া (বিতরণ কার্যক্রমের শ্রমিক) প্রায় সাড়ে ৭ (সাত) কেজি চাল ও প্রায় ৬ কেজির বেশী গম কম পাওয়ার অভিযোগ করেন তারা।
ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের কাছে বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ শুনতে পেয়ে পরিদর্শনে যাই, কিন্তু সেখানে গিয়ে হাতে নাতে কাউকে কম দেয়ার অবস্থায় পাইনি। তবে পরিদর্শন শেষে প্রতি কার্ডধারীকে চাল ১০৭ কেজি ৮৫০ গ্রাম এর স্থলে ১০৫ কেজি চাল ও গম ১৪৭ কেজি ৩০০ গ্রামর স্থলে ১৪৫ কেজি প্রদানের মৌখিক পরামর্শ দিয়েছি।
সরেজমিনে এই প্রতিবেদকের কাছে তদারকি কর্মকর্তা মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর মো. মোহতাছিম বিল্লাহ্-কারিং এর নামে অতিরিক্ত ১০ টাকা করে নগদে আদায়ের বিষয়টি স্বীকার করেন। চাল কম দেওয়ার বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান।
কিছুদিন আগে গুচ্ছগ্রামগুলোতে রেশন বিতরণে অনিয়ম হয় এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত গুচ্ছগ্রামের দায়িত্ব প্রাপ্ত তদারকি কর্মকর্তাদের স্ব স্ব দায়িত্বপুর্ণ গুচ্ছগ্রাম থেকে অন্য গুচ্ছগ্রামে রদবদল করা করে দেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন।
আলূটিলা গুচ্ছগ্রামের রেশন কার্ডধারীরা অভিযুক্ত লোভী, স্বেচ্ছাচারি, বদমেজাজী, সরকারি নির্দেশনা অমান্যকারী গুচ্ছগ্রাম তদারকি কর্মকর্তা মীর মো, মোহতাছিম বিল্লাহ এর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী তুলে সংস্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।