সোমবার ● ১৮ মে ২০২০
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১০ হাজার ভলান্টিয়ার প্রস্তুত
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১০ হাজার ভলান্টিয়ার প্রস্তুত
পলাশ বড়ুয়া, উখিয়া প্রতিনিধি :: বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেই প্রবল ভেঙ্গে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘুর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ ধীরগতিতে আগালেও এখন বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস সূত্র।
কক্সবাজারের উখিয়ায় আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ এবং করোনায় সতর্কতায় প্রস্তুতিতে নিজেদের একটুও ছাড় দিচ্ছে না বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ লক্ষ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’’ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ম পদাতিক ডিভিশনের পক্ষে থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
আজ ১৮ মে সোমবার উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় রোহিঙ্গা আশ্রিত ৩৪টি ক্যাম্পে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দুর্যোগ মোকাবেলার লক্ষ্যে দিনব্যাপী সেনাবাহিনী ও ভলান্টিয়ারদের যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাশাপাশি সেনা ক্যাম্প সমূহের তত্ত্বাবধানে ১০ হাজার রোহিঙ্গা ভলান্টিয়ার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
প্রতিটি ক্যাম্পে সেনাসদস্যদের নেতৃত্বে মাঝি, সাব-মাঝি ও স্বেচ্ছাসেবকদের আপদকালীন দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জরুরি প্রয়োজনে উদ্ধার যানসমূহ ও প্রয়োজনীয় উদ্ধার সামগ্রী।
এ প্রসঙ্গে উখিয়া উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রাক্কালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠ পর্যায়ে আপদকালীন সময়ে জেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি এনজিও এবং আইএনজিও সংস্থা সমূহের সাথে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
অপরদিকে আর্মি ক্যাম্পসমূহে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিনিময় করা হয়েছে নিজেদের প্রস্তুতির সর্বশেষ অবস্থা। আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ঘুর্ণিঝড় ‘আম্পান’ থেকে সুরক্ষায় দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমানো ও উদ্ধার কার্যক্রমে দেশি, বিদেশি সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, আরআরসি, এনজিও, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সদস্য ও ক্যাম্পে বসবাসরত প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশগ্রহণ করে।
রামু সেনানিবাস সূত্রে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আগাম প্রস্তুতি হিসাবে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার প্যাকেটজাত করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রশাসনকে সহযোগিতার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রসমূহ।
সেনানিবাস কর্তৃক জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সংস্থার সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নিয়মিত সংবাদ সংগ্রহ ও বিভিন্ন তথ্যের জন্য রামু সেনানিবাসে সেনাবাহিনীর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় পাহাড়ের ওপরে, ঢালে ও সমতলে অস্থায়ীভাবে তৈরি ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান করছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধস বা পাহাড় ধসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।