বুধবার ● ২০ মে ২০২০
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » ছুটির মধ্যে সঞ্চয়পত্রের বিক্রয় ও পুনঃবিনিয়োগ বন্ধ থাকায় বিপাকে গ্রাহকরা
ছুটির মধ্যে সঞ্চয়পত্রের বিক্রয় ও পুনঃবিনিয়োগ বন্ধ থাকায় বিপাকে গ্রাহকরা
রাউজান (উত্তর) প্রতিনিধি :: বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুুটি শুরুর পর থেকে নতুন করে কেউ আর সঞ্চয়পত্র ক্রয় ও পুনঃবিনিয়োগ করতে পারছেন না। লকডাউনের মধ্যে ডাকঘর খোলা থাকলেও অটোমেশনে (অনলাইন) সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে গ্রাহকরা। লকডাউনের আজ ২০ মে বুধবার ৫৪ তম দিন অতিবাহিত হচ্ছে। লকডাউনের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত অটোমেশনে (অনলাইন) ডাকঘরের সব ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি বন্ধ।
এই ব্যাপারে রাউজান উপজেলা পোস্ট মাস্টার মো. নুরুল আলম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লকডাউনের মেয়াদ কবে শেষ হবে তা জানা না থাকায় নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন ঠিক কবে থেকে গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে পুরাতন যেসব গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে বা যারা নতুন করে সঞ্চয়পত্র ক্রয় করতে ইচ্ছুক সবাইকে সাধারণ ছুটির পরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হচ্ছে । সঞ্চয়পত্রের ক্রেতার বিরাট অংশ মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত, অবসরপ্রাপ্ত চাকুরিজীবি ও প্রবাসীরা। করোনার প্রাদুর্ভাবের কারনে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে সব থেকে বেশি দুরাবস্তার শিকার এই শ্রেণীর মানুষ গুলোই। সরকারি বা বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংঘটনের সাহায্য এদের কাছে পৌঁছায় না আবার পারছে না মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে। শুধুমাত্র সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের বিপরীতে পাওয়া মুনাফার ওপর নির্ভর করে এদের অনেকের সংসার চলে। সাধারণ ছুটির শুরুর প্রথমদিকে ডাকঘরের সব লেনদেন বন্ধ ছিল। তবে পরে গ্রাহকের কথা চিন্তা করে গত ৬ এপ্রিল থেকে সঞ্চয়পত্র ভাঙানো ও মুুুুনাফা তোলার সুযোগ দিলেও রাউজান উপজেলা পোস্ট অফিসের নগদ টাকার সংকট চরমে। সঞ্চয়পত্র ভাঙানোতো দূরে থাক, প্রতিদিন মুনাফার টাকা দিতেই হিমশিম খেতে হয়। প্রতি কর্মদিবসে জনপ্রতি ৫০০০ টাকার উপরে মুনাফার টাকা দিতে পারেন না, আবার অনেক সময় নগদ টাকা না থাকায় মাঝে মধ্যে খালি হাতেই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের ফেরত যেতে হয়। তবে সব চেয়ে বড় সমস্যা মেয়াদপূর্তিতে পুনঃবিনিয়োগ করতে না পারায় পরের মাসে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারী মুনাফার টাকা প্রাপ্ত হতে বঞ্চিত হবেন। লকডাউনের উছিলায় একদিকে দ্রব্যমুল্যের বাজার উর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস অন্যদিকে সঞ্চয়পত্র নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি, সব মিলিয়ে দিশেহারা সঞ্চয়পত্রে মুনাফাভোগী সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন করোনাভাইরাসে প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে ডাকঘরের কিছু কাজ সম্পাদন হলেও সঞ্চয়পত্রের নতুন বিক্রয় ও পুনঃবিনিয়োগ বন্ধ আছে। সরকার করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক সেক্টরে সরকার প্রণোদনা দিচ্ছেন। তাই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের দাবি, যেসব সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে কিন্তু সাধারণ ছুটির কারণে যারা পুনঃবিনিয়োগ করতে পারেননি তাদেরকে যেন কুপন ছাড়া বিশেষ ব্যবস্থায় সঞ্চয়পত্রের ওপর মুনাফা দেওয়া হয়।