শুক্রবার ● ২২ মে ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » আমফান ঘুর্নি ঝড়ে শতবর্ষী বটগাছ উপড়ে ১ নারীর মৃত্যু
আমফান ঘুর্নি ঝড়ে শতবর্ষী বটগাছ উপড়ে ১ নারীর মৃত্যু
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী রেশম বোর্ড সংলগ্ন সড়কের পাশে সরকারি জমিতে,বসবাস করতেন হত দরিদ্র বদর উদ্দিন। গত ২০ শে মে রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ঝড়ের আঘাতে বট গাছ ভেঙে পড়ে বদর উদ্দিনের টুকরি ঘরে, এতে সাথে সাথেই চাপা পড়ে মৃত্যুবরন করেন স্ত্রী নাজেরা বেগম (৫৫)। আহত হন বদর উদ্দিন ও তার দুই ছেলে। নিহতের ছেলে আশরাফুল জানান, রাতে যখন আমাদের ঘরে গাছ পড়ে তখন অনেক ডাকা ডাকি করেও কাউকে পাশে পায়নি। পরে সকালে ফায়ার সার্ভিস এসে গাছ কেটে আমার মাকে উদ্ধার করে, সে সময় সে মৃত। সকালে ডিসি স্যার এসে আমাদের ২০,০০০ (বিশ হাজার) টাকা ও ২০ (বিশ)কেজি চাউল দিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে নিহতের স্বামী আহত বদর উদ্দিন সাংবাদিককে জানান, আমরা গরিব মানুষ আমাদের থাকার মত নিজস্ব কোন জমি নাই। তাই দীর্ঘদিন স্ত্রী সন্তান নিয়ে এই খাল পাড়ে আছি। সরকারি একটা ঘরের জন্য জনপ্রতিনিধি নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি কিন্তূ কাজ হয়নি। কারন আমরা গরিব মানুষ। এ পর্যন্ত কোন জনপ্রতিনিধি আমাদের খোঁজ নেইনি। গত কাল রাতে যখন ঝড় উঠে তখন আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করেই জেগেই ছিলাম, কিন্তূ আল্লাহ আমার স্ত্রীকে এভাবে নিয়ে গেল!এটা মানতে পারছিনা, আল্লাহ আমাকে নিয়ে গেল না ক্যান?? এদিকে এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে।
ডালিয়া ফার্মে প্রতিদিন ফ্রি দুধ বিতরন
ঝিনাইদহ :: মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য শ্লোগানে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় মহারাজপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের টেংরা মন্ডলের ছেলে নুর আলি মিয়া রমজানে গত ১৫ দিন ধরে গ্রামের ৯০টি পরিবারের মাঝে ৪০ থেকে ৫০ লিটার দুধ ফ্রী প্রদান কওে আসছেন। এবিষয়ে নুর আলি সাংবাদিকদের জানান আমি খুব সাধারন একজন মানুষ, মহামারি করোনার প্রভাবে আমি আমার গ্রামের ৮০ থেকে ৯০টি পরিবারের মাঝে ফ্রী দুধ প্রধান করছি। আসলে এই দেশের এই মহা বিপদে আমার ডালিয়া ডেইরি নামে ছোট্ট খামার থেকে দুধ প্রধানের মাধ্যমে গ্রামের অসহায়দের সামান্য সহযোগিতা করছি মাত্র। আমি ব্যক্তিগত ভাবে বলতে চাই আসলে বেঁচে থাকলে অনেক কিছুই হয়তো পাবো জীবনে। আমার পক্ষ থেকে এই সামান্য দুধ মানুষের ভিতরে বিতরন করতে পেরে নিজেকে একটু ভাগ্যবান মনে করছি। আমি সব সময় গ্রামের অসহায় মানুষের পাশে থাকতে চাই কারন আমার পরিবারও খুব অভাবের মধ্যে বিরাজমান। ১০ বছর আগে ১টা গরু দিয়ে আমার ছোট্ট খামার শুরু করি। এখন আমার খামের ১৫টি গরু ও ৪০টি ভেড়া আছে। গ্রাম জুড়ে প্রতিদিন আধা কেজি হিসাবে ৫০ লিটার দুধ ফ্রী বিতরনের বিষয়ে মহারাজপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মেম্বর আতিয়ার রহমান সাংবাদিকদের জানায় নুর আলি প্রকৃত একজন আওয়ামিলীগ কর্মী। সে মোতাবেক কখনো পাইনি সরকারি-বেসরকারি কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা। প্রচন্ড অভাবের কারনে নুর আলির একমাত্র শিক্ষিত ছেলে শাওনের চাকরি হয়নি। সরকাল যেন নুর আলীর পরিবারের প্রতি সদয় হতে আহবান জানান তিনি। এ বিষয়ে নুর আলির সন্তান শাওন বলেন দেশের এই ক্লান্তিকালে আমাদের পরিবার সামান্য দুধ প্রদান করতে পেরে সত্তিই ভাল লাগছে। সেই সাথে আমার বাবা এবং আমাদের পরিবার সবসময় আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে থাকতে চেষ্টা করব। তিনি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে সাংবাদিকদের বলেন যদি সরকারি ভাবে আমরা কোন প্রকার লোন বা সাহায্য সহযোগিতা পেতাম তাহলে আমাদের গরুর ফার্মটা অনেক বড় করতে পারতাম। তাহলে আমাদের ডালিয়া ডেইরি খামারে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতো। কৃষ্ণপুর গ্রামের নুর আলি মিয়ার এই মহৎ উদ্যোগকে এলাকার বিভিন্ন ব্যাক্তি, প্রতিষ্ঠান, মহল, শ্রেনী ও গোষ্ঠি সাধুবাদ জানিয়েছেন।
করোনা উপেক্ষা করে দোকানে উপচে পড়া ভীড়
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে পোশাকের দোকানে উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ঘুর্ণিঝড় আম্পানের কারণে সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন পোশাকের দোকানে ভীড় করছে নানা শ্রেণী পেশার মানুষ। শহরের মসজিদন মার্কেট, আরাপপুর, হামদহ, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পোশাকের দোকানে ভীড় করছে নানা বয়সী মানুষ। বৃষ্টির কারণে রাস্তায় দাড়াতে না পেশে দোকান ও মার্কেটের ভিতরে গাদা-গাদি করে বেচা-কেনা করছেন তারা। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্য বিধি। অনেক দোকানে মাস্ক ও হ্যান্ডগ্লাবস না পরেই পোশাক বিক্রি করছেন ক্রেতারা। শহরের পোড়াহাটি থেকে আসা আম্বিয়া খাতুন নামে এক ক্রেতা বলেন, ঈদের তো আর কয়েকদিন বাকি আছে। ছেলের পোশাক কেনার জন্য এসেছি। বৃষ্টি হচ্ছে কিছু তো করার নেই। হামদহ থেকে আসা একজন বলেন, আজ বৃষ্টি হচ্ছে ভেবেছিলাম ভীড় কম হবে। এখানে এসে তো দেখছি অন্য দিনের তুলনায় আজ ভীড় বেশি।
করোনার প্রভাবে মহা বিপাকে হিজড়া জনগোষ্ঠী
ঝিনাইদহ :: করোনার প্রভাবে মহা বিপাকে পড়ে জেলা প্রশাসক বরাবর ঝিনাইদহ সদর হিজড়া জনগোষ্ঠীর জরুরি ত্রাণের জন্য আবেদন করেছেন। আবেদন পত্রানুযায়ি ঝিনাইদহ সদর হিজড়া জনগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের গুরু বর্ষা হিজড়া বলেন, আমরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নাচগান পরিবেশন করে জীবিকা অর্জন করে থাকি। বর্তমানে আমরা ঝিনাইদহে ৫৩জন হিজড়া খুবই মানবর্তার জীবনযাপন করছি। দেশের এ সংকটময় পরিস্থিতিতে আমাদের দিন অনাহারে, অর্ধাহারে, অতিবাহিত হচ্ছে। ঝিনাইদহ সদরে এই ৫৩জন হিজড়ার সাহায্য দিতে আপনার একান্ত মর্জি হয়। জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন আমাদের ৫৩জন হিজড়ার সাহায্য দানে বাধিত করবেন মর্মে আবেদন পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ সদর হিজড়া জনগোষ্ঠীরা ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব বরাবরও জরুরি ত্রাণের জন্য আবেদন করেছেন।
নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে করোনার প্রভাবে বিপাকে পড়া সাড়ে ৫’শ অসহায়, হতদরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে শহরের আরাপপুরে সুফিয়া কাশেম ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে আগতদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক ও নেক্সাস মোটরস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঞ্জুর হাসান মাসুদ। চালসহ নিত্যাপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী পেয়ে খুশি হতদরিদ্র মানুষগুলো।
ঝিনাইদহের সেচ্ছাসেবী সংগঠন “প্রবর্তন”
ঝিনাইদহ :: ‘দূরে থেকে পাশে দাঁড়াই, অনাহারীর আহার যোগাই’ এই স্লোগান নিয়ে সমাজের দুস্থ-অসহায় শ্রেণিদের পাশে দাঁড়িয়ে এক নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন ঝিনাইদহের “সেচ্ছাসেবী সংগঠন” এর এক ঝাঁক তরুণ-তরুণী। সূত্রে জানা গেছে , করোনাভাইরাস যখন বাংলাদেশে তার জায়গা করে নিতে ব্যস্ত ঠিক তখন ঝিনাইদহের একঝাঁক তরুণ-কিশোর কিশোরী দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে পাড়া-মহল্লা তৈরি করেছেন প্রবর্তন নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই ভয়ঙ্কর মহামারীর সময় সবাই যখন ঘরে কিন্তু তারা ঘরে বসে থাকেনি। দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। অসহায় মানুষের কল ফোনে পেলেই ছুটে যাচ্ছে তারা। অসহায় মানুষের পাশে থাকায় যে তাদের মূল উদ্দেশ্য। তেমনি করে মহামারি দেশে আগমনের পর থেকেই ৩০০ টি পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রি বিতরণ করেছেন ঝিনাইদহের এই “প্রবর্তন সেচ্ছাসেবী সংগঠন” খাদ্য সামগ্রি বিতরণের মধ্যে থাকছে চাউল,ডাউল,আলু,তৈল,লবণ ইত্যাদি। আরও জানা গেছে, ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের মধ্যে থাকবে সেমাই,চিনি,গুড়া দুধ,ডাউল ইত্যাদি। ঝিনাইদহের “প্রবর্তন সংগঠনের সদস্যগন প্রতিবেদককে জানান, সম্প্রতি নভেল করোনা ভাইরাস এর মহামারী রূপ ঠেকাতে পুরো বিশ্ব হিমশিম খাচ্ছে। সমস্ত দেশ লকডাউন অবস্থায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন দিনমজুর ও খেটেখাওয়া মানুষেরা। তাঁদের সচেতনতা ও অর্থ উপার্জনের উৎসের অপ্রতুলতার দিকটি বিবেচনা করে আমাদের এ উদ্যোগ নেওয়া। ঝিনাইদহের ” প্রবর্তন সেচ্ছাসেবী সংগঠন”টি বাস্তবায়নে সংগঠনের সবুজ, আশিক, অলিভ, শিহাব, সায়েম, সানি, টাইসন, প্রান্ত, লিজা, তথি , অনিক প্রমূখ, দিন রাত খেটে যাচ্ছেন অসহায় মানুষের জন্য। এই সংগঠন এর বিভিন্ন ভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সামাজিক দ্বায়বদ্ধতার জায়গা থেকে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার মাধ্যমে ও ফান্ড কালেকশন করছেন বলে জানা গেছে। ঝিনাইদহ “প্রবর্তন সেচ্ছাসেবী সংগঠন” এর সভাপতি প্রতিবেদককে জানান, আমরা বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক তাই জাতির ক্রান্তিলগ্নে মানবতার পাশে দাঁড়ানো উচিত। আমরা সে অনুভূতি থেকেই অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি। শুধু সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনই নয় বৈশ্বিক এ বিপর্যয়ে আমরা মনে করি দেশের প্রভাবশালী বৃত্তবান দানশীল হৃদয়বান ব্যক্তিরাও এই দূর সমনয়ে দুস্থ মানবতার সাহায্যার্থে এগিয়ে আসা উচিত। তিনি আরও বলেন,আমাদের এ কাজ অব্যহত থাকবে।
কালীগঞ্জে ইফতার বিতরণ করলেন বিএনপি নেতা
ঝিনাইদহ :: বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সূস্থ্যতা কামনায় তারেক পরিষদ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার পক্ষ থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের এতিমখানাগুলোতে ও পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরন করা হয়। মঙ্গল বিকালে কালীগঞ্জ পৌরসভার ফয়লা, শোয়াইব নগর, বাকুলিয়া-খয়ের তলা, লিল্লাহ বোডিং ও মেইন বাস ষ্ট্যান্ড, নিমতলা, কলা হাটার মোড়ে এতিম, দুস্থ ও পথচারীদের মাঝে ইফতার বিতরন করেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক হামিদুল ইসলাম হামিদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক আয়নাল হাসান, যুগ্ম-আহবায়ক মোস্তফা আব্দুল জলিল, তারেক পরিষদের ঝিনাইদহ জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক প্রভাষক আব্দুল মজিদ শেখ, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান মিলন, পৌর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী খোকন, তারেক পরিষদের সভাপতি আব্দুস সামাদ, সাধারন সম্পাদক জালাল আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক উজ্জ্বল লস্কার, উপজেলার যুবনেতা লিটন হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক মিলন হোসেন, ছাত্রদল নেতা এশফাকুর রহমান শফিক, হাবিবুর রহমান, শিমুল হোসেন, পৌর ছাত্র নেতা ইকলাস আলী, শাওন হোসেন, ছাত্রনেতা নাইম, শান্ত, সবুজ সহ অনেকে। ইফতার বিতরনকালে হামিদ বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে খেটে খাওয়া মানুষগুলো বেশ কষ্টে দিনযাপন করছে। এই মানুষের অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে পবিত্র রমজানে কিছু ইফতার সামগ্রী নিয়ে তাদের সামনে হাজির হয়েছি। তিনি সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদেরকে সাধারণ মানুষের পাশে থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষে সকল অঙ্গ-সংগঠনের উদ্যোগে এ ধরনের জন সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।