শুক্রবার ● ২২ মে ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » করোনা উপসর্গ নিয়ে গাইবান্ধায় আরও একজনের মৃত্যু
করোনা উপসর্গ নিয়ে গাইবান্ধায় আরও একজনের মৃত্যু
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: করোনা উপসর্গ নিয়ে গাইবান্ধায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার ২২ মে ভোর ৫টায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুদর্শন দেবনাথ (৩৮) নামের একজন করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরন করেন। মৃত দেবনাথ চকরহিমাপুর গ্রামের নিবারন দেবনাথের পুত্র।
মৃত দেবনাথ গত ১৫ মে থেকে জ্বর-সর্দি ও কাশিতে অসুস্থ হয়ে পড়লে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তার বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে রংপুর পিসিআর ল্যাবে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
রিপোর্ট আসবার আগেই আজ শুক্রবার (২২ মে) ভোরে শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত কারনে অসুস্থ হয়ে পরলে পরিবারের লোকজন তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে ভোর ৫ টায় মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত দেবনাথ করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরণ করায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউএইচএন্ডএফপিও মহোদয়ের উপস্থিততে সকাল পৌনে ১১ টায় তার নিজ গ্রামে দাহ করা হয়।
তার পরিবারের সদস্য ও তার সংস্পর্শে আসা সকল কে হোম কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করে জানান গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
অসহায় মানুষের পাশে যুবলীগ নেতা রাজিব
গাইবান্ধা :: করোনায় কর্মহীন অসহায় দুঃস্থ মানুষরা যাতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সেজন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনন্য মানবিক সহায়তা দিয়েছেন গাইবান্ধা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আহসান হাবীব রাজিব।
শুক্রবার পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে ৬শ’ পরিবারের মধ্যে ইসলামিয়া হাইস্কুল মাঠে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণ করেন গাইবান্ধা জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ আহসান হাবীব রাজিব। এসময় তার সাথে ছিলেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা। বিতরণকৃত ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল আতপ চাল, চিনি, সয়াবিন তেল, সেমাই, দুধ।
এছাড়াও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিগত উদ্যোগে সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রতিটি ইউনিয়নে ৪০ জন দুঃস্থ পরিবারের মধ্যে শাড়ী ও লুঙ্গি বিতরণ করা হয়। ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে এ সব দুঃস্থ পরিবারের মধ্যে ৫শ’ ২০টি শাড়ী ও লুঙ্গি বিতরণ করা হয়।
ফলোআপ : গাইবান্ধায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহতদের পরিচয় পাওয়া গেছে
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহতদের পরিচয় পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২১মে) রাতেই নিহতদের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন প্রতিটি নিহত পরিবারকে ১০ হাজার করে টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন। এদিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসক ৩ সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করেন। তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা হচ্ছেন আহবায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট জেবুন নেছা, সদস্য এএসপি সি সার্কেল মো. আসাদুজ্জামান, গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি আব্দুল কাদের জিলানী।
তদন্ত কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করতে হবে। তদন্তকালে কিভাবে আইন অমান্য করে ঢাকা থেকে নিহতরা মালামাল পরিবহনকারি ট্রাকে ঢাকা থেকে এলো, দুর্ঘটনার কারণ এবং অন্যান্য আনুসাঙ্গিক বিষয়ে তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টায় তাদের আত্মীয়-স্বজনরা গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানায় উপস্থিত হওয়ার পর তাদের সবার পরিচয় জানা যায়। এই দুর্ঘটনায় যারা নিহতরা হচ্ছেন- পলাশবাড়ী উপজেলার ছোট ভগবানপুর গ্রামের আব্দুল খলিলের ছেলে মোতালেব হোসেন (২৫), রংপুর পীরগঞ্জের ধোড়াকান্দ গ্রামের মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে শামছুল (৬০), সুমন মিয়ার ছেলে সোয়াইব (৭), একই উপজেলার ভাসারপাড়া গ্রামের মৃত এমদাদুল হকের ছেলে হান্নান মিয়া (১৮), একই গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে মনিরুল ইসলাম (২০), বড় আলমপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ইমরান (২২), শানেরহাট বড়পাহার গ্রামের এরশাদ (৩৫), তার ছেলে ওবায়দুল ইসলাম (৮), একই এলাকার ইয়া খানের ছেলে আল আমিন (১৭), একই এলাকার ফুলমিয়ার ছেলে ইছাহাক খান (১৪) ও এরশাদ আলীর ছেলে আকাশ মিয়া (২৫)। এছাড়া রংপুর কাউনিয়া উপজেলার রামচন্দ্রপুর এলাকার শরিফুল ইসলাম (২৫) এবং কুড়িগ্রামের কপুরা থানার মহিউদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমান (২৭)।
গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানা সুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে রড বোঝাই একটি ট্রাক রেজিঃ নং ঢাকা মেট্টো-ট-১৩-৫৬৯৮ ট্রাকটি গাজীপুর এলাকা থেকে ট্রাকের উপর যাত্রী নিয়ে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে ঘুর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সকাল বেলা ঝড় বৃষ্টিকালে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পলাশবাড়ি উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের দুবলাগাড়ি নামক স্থানে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে নিচু পানি ভর্তি খালে পড়ে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে তিনজন শিশুসহ ১৩ জন লোক ঘটনাস্থলে নিহত হয়।
তিনদিন বন্ধ রাখার পর আবারও গাইবান্ধায় ঈদ কেনাকাটায় মানুষের ভীড়
গাইবান্ধা :: ঈদ উৎসবের আমেজে বদলে গেছে গাইবান্ধার চিত্র। তিনদিন বন্ধ রাখার পর খুলে দেওয়া মার্কেটগুলোতে এখন কোলাহলমুখর এবং গাদাগাদি ভীড়ে কেনাকাটা চলছে। গায়ের সাথে গা মিশিয়ে, পায়ে পা লাগিয়ে সীমাহীন গাদাগাদি ভীড়ে চলছে কেনাকাটা। এক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্বের কোন তোয়াক্কাই করছেন না ক্রেতা বা দোকানদাররা। এমনকি শহরের কাচারী বাজার, পিকে বিশ্বাস রোড, স্টেশন রোড, ডিবি রোডসহ মার্কেটগুলোতে ঠাসাঠাসি মেঘলা আকাশ এবং ঝিরি ঝিরি বৃষ্টির মধ্যেই সকাল থেকেই অস্বাভাবিক ভীড় পরিলক্ষিত হয় প্রতিটি দোকান ও মার্কেটগুলোতে। এমনকি ক্রেতারা দোকানে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় ভীড় করে দাঁড়িয়ে কেনাকাটার জন্য যেন মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে এ জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি আরও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
গাইবান্ধায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনস্বার্থে গত ১৮মে জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের সভাপতিত্বে করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রন ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আবদুল মতিন এক গণ বিজ্ঞপ্তিতে ১৮মে বিকাল ৪টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দোকানপাট ও মার্কেট সমূহ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এই আইন অমান্য করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়। এই নির্দেশ বলে ১৮মে বিকাল ৪টা থেকে ২১ মে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনদিন জেলার সমস্ত দোকানপাট, মার্কেট বন্ধ রাখা হয়।