বুধবার ● ৩ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » ইতালি ফেরৎ যুবকের বাসা থেকে নারীর লাশ উদ্ধার : হত্যার অভিযোগ
ইতালি ফেরৎ যুবকের বাসা থেকে নারীর লাশ উদ্ধার : হত্যার অভিযোগ
মামুনূর রশিদ,কাপাসিয়া (গাজীপুর) :: গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা সদরের কলেজ রোডের ইতালি ফেরৎ হাফিজুর রহমান টিটুর (৪৩) বাসা থেকে আজ ৩ জুন বুধবার দুপুরে থানা পুলিশ পারভীন (৩৮) নামে এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রাক্তন অফিস সুপার মৃত কফিল উদ্দিনের পুত্র টিটুকে থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছেন ।
জানা যায়, উপজেলা সদরের জুনিয়া গ্রামের কলেজ রোডের কফিল উদ্দিন ও তার স্ত্রীর মৃত্যুর পর তাদের একমাত্র পুত্র ইতালি ফেরৎ হাফিজুর রহমান টিটু দোতালা বাসায় একাই থাকতো। নেশাগ্রস্থ টিটু দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশী ও আত্নীয়-স্বজনদের সাথে আপত্তিকর আচরণ করতো। পাশর্^বর্তী একটি মসজিদ-মাদরাসা পরিচালনায় মুসুল্লিদের নানা ভাবে হয়রানী ও বাধা সৃষ্টি করতো। এসব নিয়ে এলাকাবাসী সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ করেন। তাদের দাবী নেশাগ্রস্থ টিটু খালি বাসায় প্রায়ই ভাড়াটিয়া পতিতা এনে রাত্রিযাপন করে। কেউ কিছু বললে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করে এবং মারমুখি আচরন করে। এর আগে একাধিক বার থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের মাহতাবপুর গ্রামের সুবেদ আলীর স্বামী পরিত্যক্তা কন্যা পারভীন প্রায়ই অভিযুক্ত টিটুর বাড়িতে আসতো এবং রাত্রিযাপন করতো। মঙ্গলবার রাতে কোন এক সময় পারভীন টিটুর বাসায় আসে। রাত্র দশটার দিকে মধ্যপ অবস্থায় দোতালা থেকে এলাকাবাসীকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালিজ এবং হৈচৈ করতে শুনা গেছে। এক পর্যায়ে তারা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধানকে বিষয়টি জানান। ইতিপূর্বে তাকে বহুবার সর্তক করলেও কোন কাজ হয়নি বলে চেয়ারম্যান তাতে পাত্তা দেয়নি। বুধবার সকাল ১১টার দিকে কাপাসিয়া বাজারের সজিব নামে এক ফার্ম্মেসী ওয়ালাকে ডেকে টিটু তার বাসায় আনে। সে এসে ওই নারীর রক্তাক্ত মৃত দেহ ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশে খবর দেয়। পারভীনের বিয়ে হয়েছিল তরগাঁও ইউনিয়নের বাঘিয়া চিনাডুলি গ্রামের আব্দুর রশিদের সাথে। দাম্পত্য কলহের কারণে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ পারভীন সদর ইউনিয়নের জামিরার চর গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করত।
থানার কর্তব্যরত অফিসার এসআই রমজান জানান, আটককৃত হাফিজুর রহমান টিটু এবং ওই মৃত নারী একসাথে রাতে মদ পান করেছে বলে সে জানায়। নারীর মাথায় ধারালো অস্ত্রের মারাত্নক আঘাত রয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুরুজ আলী নামে মৃত নারীর এক ভাই বাদী হয়ে টিটুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, লোহার রড জাতীয় কিছু দিয়ে পারভীনের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। এ বিষয়ে একটি হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর পাঠানো হয়েছে।