রবিবার ● ৭ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলছে
কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলছে
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে সরকারের প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকার ব্যয়ে অন্যতম মেগা প্রকল্প কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ধীরগতিতে চলছে বাগেরহাটের রামপালে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন। করোনায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় শ্রমিকরা প্রকল্প এলাকার নির্মান কাজে অনিহা দেখানোয় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মান কাজ চলতি অর্থ বছরের জুন পর্যন্ত ৪৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখনো ৫১ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। ফলে আগামী ২০২১ সালে সরকারের বিদ্যুৎখাতের বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করে উৎপাদনে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আগামী বছরের ফেব্রæয়ারি মাসে কমিশনিং এবং আগস্টে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হয়ে বানিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল।
বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফেন্ডশীপ পাওয়ার কোম্পানি (প্রাইভেট) লিমিটেডের উপ প্রকল্প পরিচালক মো. রেজাউল করিম বলেন, রামপালে নির্মানাধীন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিটের কাজ পুরোদমে চলছিল। এখানে সরকারের নিয়োগ করা ১৩টি প্রাইভেট কোম্পানির প্রায় ছয় হাজার শ্রমিক নিয়মিত কাজ করছিল। এরমধ্যে ভারতীয় অভিজ্ঞ শ্রমিকই রয়েছে দেড় হাজারের বেশি। গত মার্চ মাসে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মহামারি আকার ধারন করার পর এই প্রকল্প এলাকার উন্নয়ন কাজে ধীরগতি শুরু হয়। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ভারতীয় শ্রমিকরা গত মাসে দেশে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তারা দেশে ফিরতে তাদের নিয়োগ দেয়া কোম্পানি মালিকদের চাপ দিতে থাকলে এই প্রকল্প এলাকার উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখতে হয়। গত ২৭ ও ২৮ মে এবং ২ জুন তিন দফায় ৬০১ জন শ্রমিককে তাদের নিয়োগ করা কোম্পানি নিজস্ব খরচে বিশেষ বিমানে করে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। এখন প্রকল্প এলাকায় উন্নয়ন কাজ একেবারেই বন্ধ হয়ে আছে। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় শ্রমিকরা প্রকল্প এলাকার নির্মান কাজে অনিহা দেখানোয় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের এই বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মান কাজ চলতি অর্থ বছরের জুন পর্যন্ত ৪৯ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখনো ৫১ শতাংশ কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে। ফলে আগামী ২০২১ সালে সরকারের বিদ্যুৎখাতের বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করে উৎপাদনে যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আগামী বছরের ফেব্রæয়ারি মাসে কমিশনিং এবং আগস্টে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হয়ে বানিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাওয়ার কথা থাকলেও তা আর সম্ভব হচ্ছেনা।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশীপ পাওয়ার কোম্পানী (প্রাইভেট) লিমিটেড যৌথভাবে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মান করছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর বাংলাদেশ ভারত সরকার যৌথভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারি-কাটাখালী ও কৈর্গদাশকাঠী এলাকায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিট নির্মানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। ১৮৩৪ একর জমির উপর প্রায় ১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
সাংবাদিক জিহাদ শিকদারের নামে মিথ্যা মামলার ভয় ও জীবন নাশের হুমকি
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার প্রেসক্লাব মোল্লাহাটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক জিহাদ শিকদারের নামে মিথ্যা মামলার ভয় ও তার পরিবার সহ সকলকে জীবন নাশের হুমকি দিয়েছে একটি প্রভাবশালী মহল। মোল্লাহাট উপজেলা চরআটজুড়ী গ্রামের মৃত কবির উদ্দিন শিকদারের পুত্র সাংবাদিক জিহাদ শিকদারের বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করে গাছপালা কেটে নেওয়া সহ বিভিন্ন ধরণের ক্ষতি সাধনের বিষয় মোল্লাহাট থানায় একটি সাধারণ জিডি করেন সাংবাদিক জিহাদ। ওই জিডির বিষয় তদন্তকারী পুলিশ অফিসার কুদ্দুস আলী সরেজমিনে তদন্ত করতে গেলে থানায় কেন এই প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে জিডি করা হলো ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকাশ্যে সাংবাদিক জিহাদসহ তার পরিবারের সকলকে জীবন নাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেখিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। প্রভাবশালী জবর দখলকারী একই গ্রামের ওলি শিকদারের পুত্র রেজোয়ান শিকদার ও মিতু শিকদার সহ তার লোকজনেরা।
জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা কুদ্দুস আলী জানান, আপনারা যা শুনছেন তা সত্য। আমি ওদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনী প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এব্যাপারে জিডির বাদি সাংবাদিক জিহাদ শিকদার জানায় আমি মোল্লাহাট থানায় একটি জিডি করেছি। কারণ আমার বাড়ী থেকে জোর পূর্বক গাছ গাছালি কেটে নেওয়া সহ বিভিন্ন ধরণের ক্ষয়ক্ষতি করায় আমি নিরুপায় হয়ে আইনের প্রতি সম্মান দেখাইয়া জিডি করেছি এটাই আমার অপরাধ। ওরা যেকোন মুহূর্তে আমাকে ও আমার পরিবারকে প্রাণ নাশ করতে পারে।
সুন্দরবনে খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের সময় আটক-৬
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন থেকে জেলে নামধারী ছয় জন বিষ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে বনবিভাগ। অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে শরণখোলা রেঞ্জের ছাপড়াখালী এলাকার একটি খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকারের সময় শনিবার বিকাল ৪টার দিকে তাদেরকে হাতেনাতে আটক করা হয়। ওই বিষ সন্ত্রাসীদের রবিবার বিকালে বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের আ. হক খানের ছেলে সেলিম খান, আ. রব হাওলাদারের ছেলে কবির হাওলাদার এবং মোরেলগঞ্জ উপজেলার বারৈখালী গ্রামের মৃত আলী আকবরের ছেলে আলী আজগর, মৃত শাহাদাতের ছেলে মো. জাকির, আলামিন শেখের ছেলে সাকির শেখ ও মোখলেসের ছেলে এমাদুল।
এদের কাছ থেকে বিষ দিয়ে ধরা ২২৩ কেজি চিংড়ি, দুই বোতল রিফকর্ড কীটনাশক, একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার, একটি ডিঙি নৌকা, ছোট ফাঁসের তিনটি জাল এবং ৩০০ফুট বড়সিযুক্ত দড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, একদল জেলে বনের ছাপড়াখালী এলাকায় বিষ দিয়ে মাছ শিকারের খবর পায় বনরক্ষীরা। কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেষ্টার আবুল কালাম সরকারের নেতৃত্বে বনরক্ষীরা অভিযান চালিয়ে বিষ দিয়ে মাছ ধরার সময় তাদেরকে আটক করে।
এসিএফ জানান, আটকদের বিরুদ্ধে বন আইনে পৃথক দুটি মামলা দিয়ে বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষ দিয়ে ধরা চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আদালতের অনুমতিতে রেঞ্জ অফিস চত্বরে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনের বিষ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বনবিভাগ।