মঙ্গলবার ● ৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » জাতীয় » করোনা দুর্যোগকালীন বাজেটের জন্য বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আট দফা প্রস্তাবনা
করোনা দুর্যোগকালীন বাজেটের জন্য বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আট দফা প্রস্তাবনা
ঢাকা :: বাংলাদেশের বিপ্লবৗ ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক আজ এক বিবৃতিতে করোনা ভাইরাস মোকাবেলা ও করোনা দুর্যোগ কাটিয়ে নতুন অর্থ বছরের বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন করোনা মহামারী ব্যক্তি ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে যে গভীর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে তা কাটিয়ে উঠাই হবে নতুন অর্থ বছরের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন নিছক প্রবৃদ্ধি কেন্দ্রীক উন্নয়নের গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে এসে উৎপাদনের সাইকেল সচল রেখে অভাবগ্রস্ত ও স্বল্প আয়ের আট থেকে দশ কোটি মানুষের খাদ্য, নগদ টাকা ও বেকারদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা আপদকালীন সময়ের বাজেটের অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। তিনি উল্লেখ করেন, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে গার্মেন্টসসহ রফতানীমুখী খাত ও প্রবাসীদের আয় কমে যাবার আশংকার প্রেক্ষিতে দেশের ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও উৎপাদন নিশ্চিত করতে আগামী বাজেটে কৃষি ও গ্রামীণ খাতকে উৎপাদনশীল খাত হিসেবে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। মহামারী দুর্যোগ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য চিকিৎসা এবং কৃষি ও গ্রামীণ খাতের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়ে তার আমূল সংস্কার পরিক্ল্পনা প্রণয়ন ও ভারসাম্যে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করাও জরুরী। বাজেট প্রণয়ন ও তার জন্য প্রয়োজনীয় তেলের মাথায় তেল দেওয়া এবং রাজস্ব খাতসহ অনুৎপাদনশীল খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির নীতি থেকে সরে আসতে হবে।
তিনি পার্টির পক্ষ থেকে ২০২০-২১ অর্থ বছরের বাজেট সম্পর্কে নিমোক্ত প্রস্তাবসমূহ বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবসমূহ:
১। করোনা দুর্যোগকালীন বাজেটে স্বাস্থ্য, চিকিৎসা এবং কৃষি ও গ্রামীণ খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদানকে নতুন বাজেটের নীতি হিসেবে ঘোষণা করতে এবং সেই অনুযায়ী এই খাত পুনর্গঠনের বিস্তারিত পরিকল্পনা ও বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
২। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ‘গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ গড়ে তুলতে হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ, হাসপাতাল, ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসা সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে হবে; যাতে কোন প্রান্তিক জনগোষ্ঠিসহ প্রতিটি নাগরিকের চিকিৎসা সরকারি উদ্যোগ নিশ্চিত করা যায়। বেসরকারি হাসপাতালের মুনাফাকেন্দ্রীক স্বেচ্ছাচারীতা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। করোনার সুরক্ষা ও চিকিৎসা যাবতীয় দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে।
৩। কৃষি ও গ্রামীণখাতের পুনরুজ্জীবন ও উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করতে উন্নয়ন বাজেটের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ বরাদ্দ নিশ্চিত করুন। সরকার নির্ধারিত মূল্যে প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকে কমপক্ষে ২০ লক্ষ টন ধান ক্রয় করুন। কৃষককে ঋণ নয়, এই দুর্যোগে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করুন। কৃষিভিত্তিক ক্ষুদ্র প্রকল্প, মৎস্য, দুগ্ধ ও পোল্ট্রির মত উৎপাদনশীল উদ্যোগে কার্যকরি আর্থিক প্রণোদনা নিশ্চিত করুন।
৪। দেশের স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী-দিনমজুর ও গরীব ২ কোটি পরিবারের জন্য আগামী ৬ মাস প্রয়োজনীয় খাদ্য ও নগদ অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা বাজেট নিশ্চিত করুন। একটি স্থায়ী গণবন্টন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আগামী বাজেটেই প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও বরাদ্দ পেশ করুন।
৫। বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিন; আত্মকর্মসংস্থানের উদ্যোগসমূহকে নগদ আর্থিক সহায়তার নীতি ও বরাদ্দ ঘোষণা করুন।
৬। রাজস্ব ব্যয়, বিলাস দ্রব্যের আমদানী, সামরিক খাতসহ অনুৎপাদনশীল খাতে বরাদ্দ হ্রাস করে শিক্ষা, আবাসন, শিল্পসহ উৎপাদনশীল খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করুন।
৭। কালো টাকা, অপ্রদর্শিত আয়সহ বিদেশে পাচার করা অবৈধ অর্থ সম্পদ উদ্ধারে নীতি কৌশল ঘোষণা করুন। বিত্তবানদের উপর বর্ধিত কর আরোপ করুন। সম্পত্তি অনুযায়ী কর ধার্য করুন।
৮। পরিবহন ভাড়া, গ্যাস, বিদ্যুৎ, বাড়ী ভাড়া ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের নীতি ঘোষণা করুন।