মঙ্গলবার ● ৯ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » বলেশ্বর নদীর ফ্লাশিং গেট বন্ধ করে বেরিবাঁধ সংস্কার : চরম ভোগান্তিতে স্থানীয়রা
বলেশ্বর নদীর ফ্লাশিং গেট বন্ধ করে বেরিবাঁধ সংস্কার : চরম ভোগান্তিতে স্থানীয়রা
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ওয়াবদার বেরিবাঁধে অব্যবস্থাপনায় দুর্ভোগে পড়েছেন কমপক্ষে ৪শত পরিবার। বলেশ্বর নদীর তীরবর্তী খাউলিয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামটিকে সুরক্ষা দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বেরিবাঁধ। বাঁধটি উন্নয়নের কাজ এখন চলছে। চলমান ওই কাজে বাঁধের কুমারখালী, ফাশিয়াতলা ও উত্তর কুমারখালী এলাকার ফ্লাশিং গেট (পানি নিস্কাশনের গেট) ৩টি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ফলে, জলোচ্ছাসে ঢুকে পড়া পানি আটকে থাকে লোকালয়ে। ২/৩ সপ্তাহ ধরে মানুষের ঘরে থাকে পানি। বন্ধ থাকে রান্না। বিপর্যস্ত হয় স্বাভাবিক জীবন যাপন। এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বিকেল ৫টায় কুমারখালী বেরিবাঁধে ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন ভূক্তভোগীরা। আজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন তারা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ৬০ বছর ধরে কুমারখালী এলাকায় ফাশিং গেট চালু ছিল। চলমান উন্নয়ন কাজের সময় তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ৪শ’ পরিবার পানিবন্দী। ৫০টি ঘের ও ২শ’ একর জমির ফসল ধ্বংস হয়েছে। একই বেরিবাঁধের ফাসিয়াতলা ও দক্ষিণ কুমারখালী গ্রামের ফাশিং গেট দুটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেসব গ্রামেও অনুরূপ দুর্ভোগে আছেন শতশত পরিবার।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
কর্তব্যরত প্রকল্প প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ডিজাইন অনুযায়ী কাজ শেষের পথে। ইতোপূর্বে বিষয়টি কেউ বলেনি। এখন সরেজমিনে দেখে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এ সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ৩৫/১ পোল্ডারের এ বেরিবাঁধটি উন্নয়নের কাজ প্রায় শেষের দিকে। যখন সার্ভে হয়েছে তখন হয়তো ওই গেটগুলো বাদ পড়েছে। এই মুহুর্তে কিছু করার নেই। তবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
করোনার ঝুঁকিতে কমিউনিটি ক্লিনিকে বাড়ছে রোগী সেবা পেয়ে খুশী স্থানীয়রা
বাগেরহাট :: করোনা ভাইরাস দুর্যোগের সময় ঝুঁকির মুহূর্তে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় চিকিৎসক ও কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা। অন্যান্য সময়ের থেকে ক্লিনিকে রোগীও বেড়েছে। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ির পাশে ক্লিনিকে স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ায় খুশী স্থানীয়রা।
বাগেরহাট জেলায় ২০৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। প্রতি ক্লিনিকে নিরাপত্তা সামগ্রী পিপিই মাস্ক, সেনিটাইজার, হ্যান্ডগ্লোভস দেওয়া হয়েছে। রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশমতে সপ্তাহে ছয় দিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা নিয়মিত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয়দের।
গাবতলা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মো. ফারুক হোসেন হাওলাদার বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ ক্রমে আমরা নিয়মিত রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মাঝে তৃনমূল জনসাধারণকে নিয়মিত সেবা প্রদান করছি।প্রতিদিন যেসব রোগীরা সেবা নিতে আসছেন, তারা অধিকাংশই মৌসুমি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যাথায় আক্রান্ত। করোনা সংক্রমণের উপসর্গের সঙ্গে অনেকটা মিল থাকায় কোন করোনা আক্রান্ত রোগী হলেও তা নির্ধারণ করা কঠিন কাজ। ক্লিনিকে আগত রোগীদের নিকট থেকে তাদের শারীরিক সমস্যার তথ্য জেনে সিএমইডি এজেন্ট অ্যাপস ব্যাবহার করে করোনার সম্ভাবনা আছে কিনা তা নির্ধারণ করে তাদেরকে সচেতনতামূলক পরামর্শ প্রদান করে থাকি। সুরক্ষা সামগ্রী ব্যাবহারের মাধ্যমে যতটা সম্ভব নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সেবা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আগের থেকে রোগীও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরো বলেন, করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ প্রণোদনা ও স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এটি অনুপ্রেরণার পাশাপাশি এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। সেই সাথে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সিএইচসিপি দের ও এর অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমি কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাই।
বিশারিঘাটা কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি রেবা রানি বলেন, আমাদেরকে রোগীর খুব কাছাকাছি থেকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশীর ভাগ রোগী জ্বর সর্দি কাশি গলা ব্যাথা নিয়ে আসেন। অনেক রোগীর উপসর্গ জেনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রেফার করতে হচ্ছে। এছাড়া কিছু ক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারী এবং প্রোভাইডারদের রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে।অথচ কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীর উপস্থিতি বেড়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে আসা গৃহবধু সাথী ইসলাম বলেন, করোনার কারণে হাসপাতালে যেতে পারি না। ঠান্ডা গরমের জন্য জ্বর, মাথা ব্যাথা নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে আসছি।এখানে ডাক্তার দেখালাম। পেশার মাপল, ওজন মাপল। পরে ঔষধ দিল, চলে আসলাম। গ্রামের অনেকেই ওখানে যায়।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেছেন,. উপজেলার ৫১ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপিকে করোনা সংক্রমনের সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও উপজেলা পরিষদ থেকে প্রাপ্ত পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রদান করা হয়েছে। শরীর থেকে নেওয়ার ওপর একদিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে সিএইচসিপিদের। করোনা ভাইরাসের এই সংকটময় মুহূর্তে সদর উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলি নিরবিচ্ছিন্নভাবে তৃনমূল মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। সিএইচসিপিদের অগ্রনী সাহসী ভূমিকার জন্য যা সম্ভব হচ্ছে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, করোনাকালে কমিউনিটি ক্লিনিকের কর্মীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। করোনার আগের মাসে যেখানে দেড় লাখ রোগী সেবা নিতো, সেখানে করোনা আতঙ্কে এক লাখে নেমে আসে। আমাদের সচেতনতার ও বিভিন্ন পদক্ষেপে কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিমাসে ১০ থেকে ১২ হাজার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সিএইচসিপিদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। আমরাও চেষ্টা করছি কমিউনিটি ক্লিনিকের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য।
বাগেহাটে রামপালে সাংবাদিক সুজনকে অপহরণ চেষ্টা
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের রামপালে যুগান্তর পত্রিকার প্রতিনিধি সুজন মজুমদার (৩৫) কে আজ মঙ্গলবার রাতে অপহরণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ওই দিন পেশাগত দ্বায়িত্ব পালন শেষে হুড়কাস্থ তার নিজ বাড়িতে ফিরে যান। এরপর তিনি তার অসুস্থ পিতার জন্য ঔষধ নিতে যান পার্শবর্তী ঝলমলিয়া দীঘির পাড়। সেখান থেকে ফেরার পথে একদল দূর্বৃত্ত তার গতিরোধ করে অপহরণের চেষ্টা চালায়। এসময় তার ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন।
সাংবাদিক সুজন মজুমদার জানান, হুড়কা গ্রামের সত্যজিত বিশ্বাস ও তার পুত্র নিত্য বিশ্বাস তাকে অপহরণের চেষ্টা চালায়। এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করেন। তবে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানান। বিষয়টি তাত্ক্ষণিকভাবে হুড়কা ইউপি চেয়ারম্যান তপন গোলদার এবং রামপাল থানার ওসি মোঃ দেলোয়ার হোসেন কে অবহিত করা হয়েছে ।