বুধবার ● ১৭ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » অপরাধ » ১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৎ বাবা আটক
১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৎ বাবা আটক
মো. জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহে ১১ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৎ বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জুন) রাতে কালীগঞ্জ উপজেলার কলাহাট এলাকা থেকে রেজাউল ইসলাম নামের ওই অভিযুক্তকে আটক করা হয়। কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহাঃ মাহাফুজুর রহমান মিয়া জানান, প্রায় ১ বছর আগে হোটেল কর্মচারী রেজাউলের সাথে নির্যাতিত মেয়েটির মা নাজমা খাতুনের বিয়ে হয়। ৩ কন্যা সন্তান নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা শহরের কলাহাট এলাকায় তারা একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিল। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার ভোররাতে মেয়েটির মা বাড়ির বাইরে গেলে সৎ বাবা রেজাউল ওই মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে বিকালে বাসায় ফিরে মেয়েটির কাছ থেকে ধর্ষণের ঘটনাটি জানে তাড় মা। এরপর মেয়েটির মা সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত রেজাউলকে আটক করে।
কাজের মেয়েকে ধর্ষন চেষ্টায় থানায় অভিযোগ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের হরিন্দীয়া গ্রামে সিরাজুল ইসলাম মাষ্টার কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টা ও শ্লিতাহানীর অভিযোগ উঠেছে। সিরাজুল মাষ্টারের নিজ বাসার কাজের মেয়ে মোছাঃ তানজিলা খাতুন (১৪) তানজিলা বলেন আমি আজ থেকে তিন বছরধরে সিরাজুল ইসলাম মাষ্টারের বাসায় কাজ করি। বিগত ছয়মাস ধরে সিরাজুল মাষ্টার আমার উপর কুদৃষ্টি দিতে থাকে। বাসায় কেও না থাকলে আমাকে বাজে প্রস্তাব দেই। আমি রাজি না হওয়াই যখনই বাসা ফাঁকা পায় তখনি পিছন দিক থেকে আমাকে প্রায়ই জাপটে ধরে। আমি ডাক চিৎকার করতে গেলে আমার মুখ চেপে ধরেন ও বলেন আমি যদি বিষটি কাওকে জানাই আমাকে এবং আমার পরিবারকে মেওে গুম করে দেবে। আমি ভয়ে বিষয়টি কাওকে জানাতে পারি নাই। গত মে মাসে ঈদের আগে সিরাজুল মাষ্টারের স্ত্রী বাসায় না থাকার সুবাদে আবারো আমার গায়ে হাত দেয়। বিষয়টি সিরাজুলের স্ত্রী মিসেস মনজুরা বেগম আন্টিকে জানালে তিনি আমাকে বিষয়টি কাওকে না জানাতে বলেন। তিনি আরো বলেন সে তোমার পিতার মতো যা হয়েছে আমি দেখছি এই কথা বলে আমাকে সান্ত¡না দেন। আমি ওখান থেকে বাড়িতে এসে আমার মা বাবাকে জানালে তারাও আমাকে বিষয়টি কাওকে না জানাতে বলেন এবং গোপনে আমার পিতা মোঃ তাহাজ্জেল হোসেন সিরাজুল মাষ্টারের কাছে জানাতে চাইলে তিনিও উল্টো মারমুখি আচরণ করেন। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। মেয়েটির পিতা ঘটনা জানার পরে কোটচাঁদপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান। সিরাজুল মাষ্টার এলাকায় প্রাভাবশালী হাওয়ায় ন্যায় বিচার পাচ্ছে না বলেও জানান মেয়েটির পিতা। এ বিষয়ে সিরাজুল মাষ্টার জানান মেয়েটি আমার বাসায় দির্ঘদিন যাবৎ কাজ করে, সে আমার বাড়ির একজন সদস্য। এসব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন। এলাকার কিছু লোকজন আমার সম্মান হানি করার জন্য মেয়েদের পরিবারকে ইন্ধন দিচ্ছে। মেয়েটি আমাকে নিয়ে সম্পুর্ন বানোয়াট গল্প বলছে। থানায় অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা জানান একটা লিখিতো অভিযোগ দিয়েছে তদন্ত চলছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঝিনাইদহে ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আরো ১৫ জন করোনায় আক্রান্ত, জেলায় সর্বমোট ১১৯ জন
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ জেলার নতুন করে ২৪ ঘন্টায় ১৫ জন করোনায় আক্রান্তÍ হয়েছে । এ পর্ষন্ত জেলায় মোট ১১৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বুধবার সকালে ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কুষ্টিয়া পিটিআরসি ল্যাব থেকে ১১১টি রিপোর্ট এসেছে এর মধ্যে ৯৬ টি নেগেটিভ ১৫ টি পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এর মধ্যে ঝিনাইদহ শৈলকুপা উপজেলায় ৪ জন, সদর উপজেলায় ৩ জন কালীগঞ্জ উপজেলায় ৩ জন, হরিণাকুন্ড উপজেলায় ২ জন, কোটচাদপুর উপজেলা
প্রভাষক মনোয়ার হোসেন বানাচ্ছেন বৃদ্ধাশ্রম
ঝিনাইদহ :: নিজের বেতনের টাকা দিয়ে সমাজে আলোর মশাল জ্বালিয়ে চলেছেন প্রভাষক মনোয়ার হোসেন মনু। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি করোনাভাইরাসে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা ও বৃদ্ধাশ্রম করার জন্য ক্রয় করেছেন জমি। পাশাপাশি মেধাবি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান, টাকার অভাবে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থীদের সহযোগীতা, বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পড়ানো, সনাতন ধর্মের মেয়েদের বিবাহ কাজে সহযোগীতা, মসজিদ উন্নয়ন, কবরস্থান উন্নয়ন, ঈদগাহ মাঠ উন্নয়ন নিরবে এ কাজগুলো করে যাচ্ছেন এই শিক্ষক। তিনি হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার মৌলানা আছাদ আলী ডিগ্রী কলেজের পদার্থবিজ্ঞান ও আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী গ্রামের মো. শাহজাহান মিয়া ও মোছা. কুলসুমা বেগমের সন্তান মনোয়ার হোসেন মনু ত্রিবেনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করেন। তারপর রামচন্দ্রপুর কিসমত আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে ভর্তি হন ঝিনাইদহ সরকারী কেসি কলেজে। তারপর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট থেকে অনার্স (সম্মান) নিয়ে পড়াশুনা করেন। লেখাপড়া শেষ করে তিনি একটি কলেজে গেস্ট টিচার (অতিথি শিক্ষক) হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তারপর ২০১২ সালে তিনি মৌলানা আছাদ আলী ডিগ্রী কলেজে পদার্থ বিজ্ঞান বিষয়ে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন। ২০১৩ সালে আইসিটি ক্লাস শুরু করেন। কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি গরীব ও অসহায় শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন। এছাড়া তিনি কমপক্ষে ৩০/৪০ জন শিক্ষার্থীকে বিনা বেতনে পড়ান। কিছু শিক্ষার্থী তাকে নামেমাত্র বেতন দেন। টিউশনির টাকা ও বেতনের টাকা দিয়ে তিনি শুরু করেন সমাজ উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম। প্রভাষক মনোয়ার হোসেন মনু জানান, মানুষ ও সমাজের জন্য কিছু করা তার নেশা। কোন মানুষ ও শিক্ষার্থীদের উপকার করতে পারলে তার ভাল লাগে। নিজ জন্মস্থানের প্রতিও টান রয়েছে তার। তাই নিজ এলাকার উন্নয়ন করার জন্য তিনি সবর্দা চিন্তা করেন। নিজ গ্রামে একটি প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রায় ৫ শতক জমি কিনেছেন তিনি। সেখানে তিনি প্রাইমারি স্কুল গড়ে তুলবেন। স্বপ্ন দেখছেন একটি বৃদ্ধশ্রম করার। বৃদ্ধাশ্রম করার জন্য ২ শতক জমি তিনি ক্রয় করেছেন। ২০১৮ সালে তার বাবা-মার নামে প্রতিষ্ঠা করেন ‘শাহজাহান–কুলসুম কল্যাণ তহবিল’ যার উদ্দেশ্য ছাত্র-ছাত্রীদের সেই তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য ও উৎসাহ প্রদান করা। এই তহবিলের মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলের এসএসসি পাশকৃত শিক্ষার্থীদের এককালিন বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রতিটি স্কুলের সর্বোচ্চ রেজাল্টধারীদের মধ্য থেকে ৩ জন করে বৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রথম স্থান অধিকারী ৩ হাজার, দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ২ হাজার ৫ শ টাকা। তৃতীয় স্থান অধিকারীকে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। এলাকার ৪টি মসজিদে ইনডোর সাউন্ড সিস্টেম কিনে দিয়েছেন তিনি। সনাতন ধর্মের যারা অসহায় মানুষ রয়েছে তাদের মেয়ে বিয়েতে তিনি যতটুকু সম্ভব সহযোগীতা করে থাকেন। এবারের করোনাভাইরাস মহামারীর সময় ২ শত পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন তিনি। ২০১৯ সালে তার বাবা-মায়ের নামে প্রতিষ্ঠা করেন ‘শাহজাহান–কুলসুম ফাউন্ডেশন’। ভবিষ্যতে এ প্রতিষ্ঠানের কার্যপরিধি আরও বাড়াতে চান তিনি। এছাড়া তিনি মাধবপুর উপজেলার অনেক মসজিদে নগদ অর্থ প্রদান করেন। প্রভাষক মনোয়ার হোসেন জানান, কেউ যদি বলে তার আর্থিক অবস্থা ভাল নয় তাহলে তার কাছ থেকে তিনি বেতন নেন না। যাদের সামর্থ রয়েছে তারা যে বেতন দেন সেগুলো দিয়েই তিনি এই প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা করেন। তিনি বলেন-‘আরো অনেক কিছু করার ইচ্ছে আছে অর্থাভাবে এগুলো করে উঠতে পারছি না। অতিরিক্ত কাজ ও পরিশ্রম করে স্বপ্নগুলো পূরণের ইচ্ছে আমার। অনেকে ভাবতে পারেন এগুলো বলার কি দরকার; কিন্তু আমার মনে হয়েছে আমি যদি আমার ইচ্ছেশক্তির দ্বারা এগুলো করতে পারি তবে অন্যরা পারবে না কেন? তারাও পারবে এবং করবে।’